আনোয়ার শাহীন মাগুরা, ৩ মার্চ : পাখির রাজা ফিঙে। কালো এই পাখিটি কৃষকের পরম বন্ধু। ক্ষেতে ক্ষতিকর পোকা খেয়ে উৎপাদন বাড়াতে ভূমিকা রাখে।
একটি ফিঙে গড়ে প্রতিদিন ২৫-২৮টি মাজরা পোকা খেয়ে থাকে। একটি স্ত্রী মাজরা ২৫০-৩০০ মাজরার মথ জন্ম দেয়। ফিঙে অন্তত একটি স্ত্রী মাজরা পোকা খেলে ৩০০টি পোকা দমন হয়। ফিঙে লম্বায় লেজসহ ২৮-৩১ সেন্টিমিটার। মাথা থেকে লেজের প্রান্ত পর্যন্ত কালো পালকে আবৃত। কালোর ওপরে নীলাভ আভা বের হওয়াতে পালিশ করা চকচকে দেখায়। এদের ঠোঁট ধাতব কালো, গোড়ায় সাদা ফোঁটা থাকে। অপ্রাপ্ত বয়স্কদের পেটের ওপর থাকে সাদা রেখা। যা দূর থেকে আঁশটে দেখায়। পা কালচে। স্ত্রী-পুরুষ পাখি দেখতে একই রকম। ফিঙের প্রধান খাবার ক্ষেতের কীটপতঙ্গ। প্রজনন সময় মার্চ থেকে জুন। গাছের ত্রিডালের ফাঁকে বাটি আকৃতির বাসা বানায়। ডিম পাড়ে ৩-৪টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১৪-১৫ দিন। পাখিটার বাংলা নাম ‘ফিঙে’, ইংরেজি নাম ‘ব্ল্যাক ড্রোঙ্গো’, বৈজ্ঞানিক নাম ‘ডিক্রুরাস মেক্রোসারকাস’।
কৃষি বিভাগ জানায়, এ পর্যন্ত ধানের ১৭৫টি প্রজাতির অনিষ্টকারী পোকা শনাক্ত করেছে। এদের মধ্যে ২০-৩৩টি প্রজাতিকে প্রধান ক্ষতিকর পোকা হিসেবে গণ্য করা হয়। এদের আক্রমণে ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়। ফিঙে পাখি বিভিন্ন ধরনের পোকা খেয়ে দ্রুত এদের সংখ্যা কমিয়ে দিতে পারে। জানা যায়, ফিঙে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৫৪ শতাংশ ঘাসফড়িং, ৪৭ শতাংশ হলুদ মাজরা পোকা, ৩৭ শতাংশ সবুজ পাতাফড়িং, ৩৫ শতাংশ বাদামি গাছফড়িং ও ৯ শতাংশ পামরি পোকা খেয়ে ফেলতে পারে। এতে পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি কীটনাশকের অতিরিক্ত খরচ থেকে রেহাই পাচ্ছে কৃষক। সদরের বোরো ধান চাষী সাইফুর রহমান জানান, ফিঙে ধানের অর্ধেক পোকা খেয়ে ফেলে। ফিঙে বসার জন্য তারা ক্ষেতে গাছের ডাল পুতে দেন।
মাগুরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোকলেছুর রহমান বলেন, ‘ফিঙে পাখি কৃষি ও কৃষকের অকৃত্রিম বন্ধু। কৃষক ‘পার্চিং’ পদ্ধতিতে ফিঙে পাখির মাধ্যমে পোকা দমন করেন।
রাইজিংবিডি / টিপু