সাতসতেরো

বিনোদন অনুষঙ্গ যখন কাশবন

ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশ। ঋতু পরিবর্তনের পালাবদলে বর্ষার পর আসে শরৎকাল। প্রকৃতিতে যাই যাই করে বৃষ্টি একেবারে চলে যায় না। হঠাৎ হঠাৎ অল্প হলেও বৃষ্টি ঝরে আপন মনে। নদীর পাড়কে কেন্দ্র করে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে কাশবন। চারদিকে শুভ্র কাশফুল। নীল আকাশের বুকে ভেসে বেড়ানো তুলার মতো শুভ্র মেঘেদের হাতছানি। 

নিয়মিত রিমঝিম বৃষ্টির দিন পেরিয়ে ভাদ্র-আশ্বিনজুড়ে শরতের রাজত্ব। শরৎ মানেই নীল আকাশ, সাদা মেঘের ভেলার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কাশফুলের শুভ্রতা।  প্রকৃতিতে যখন শরৎকাল আসে, তখন কাশফুলই জানিয়ে দেয় এর আগমনী বার্তা। এসময়ই সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ‌‌‘শারদীয় দূর্গোৎসব’।

কালের বিবর্তনে আমাদের জীবন থেকে হারাতে বসেছে শরতের কাশফুল। সারাদেশে আগের মতো আর  এ ফুলের দেখা মেলে না। নদীর পাড় দখল হয়ে যাচ্ছে। খোলা জায়গায় বড় বড় ইমারতের সারি। মানুষের আবাস কিংবা শিল্প-কারখানা গড়ে ওঠার কারণে হারাতে বসেছে কাশফুল। 

তারপরও এখনো দৈবাৎ রাজধানীর আশেপাশে চোখে পড়ে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে কাশবন। সেখানে ফুটে আছে হাজারো কাশফুল। তেমনি একটি এলাকার নাম আফতাবনগর। রামপুরা ব্রিজের পূর্বপাশ দিয়ে ভেতরে পুরোটাই আফতাবনগর আবাসিক এলাকা। শহরের মধ্যে আরেক শহর। বিশাল এলাকাজুড়ে মানুষের বসতি গড়ে উঠছে ধীরে ধীরে।

রামপুরা প্রধান সড়ক থেকে আফতাবনগরের ভেতরে ৫-৬ কিলোমিটার গেলে নদীর পাড়জুড়ে অজস্র কাশফুল ফুটে আছে। কয়েক কিলো এলাকাজুড়ে বিস্তীর্ণ কাশবন। ছুটির দিনগুলোতে হাজারো মানুষ আসেন এখানে। পরিবার-পরিজন নিয়ে ছুটির দিনের বিকেলটা কাটান কাশফুল আর নদীর সঙ্গে।      

সময় করে নাগরিক জীবনের কোলাহল ছেড়ে, আপনিও ঘুরে আসতে পারেন কাশবন এলাকা। নদীর পাড়ে জেগে ওঠা কাশগুচ্ছ দেখে মন-প্রাণ জুড়িয়ে যাবে। সাদা ধবধবে কাশফুলের মন মাতানো হিল্লোল দোল দিয়ে যাবে আপনার এবং পরিবারের অন্যদের। বিশেষ করে শিশুরা অনাবিল আনন্দ পাবে।

নিজস্ব পরিবহন থাকলে যেতে তেমন সমস্যা নেই। যদিও প্রধান সড়ক থেকে ভেতরের রাস্তার অবস্থা তেমন ভালো নয়। আর নিজস্ব পরিবহন না থাকলে সরাসরি সিএনজি অটো নিয়ে চলে যেতে পারেন। আবার রামপুরা ব্রিজ পর্যন্ত গিয়ে, সেখান থেকে ইঞ্জিনচালিত রিকশা (সেখানকার একমাত্র বাহন) নিয়েও যেতে পারেন। কাশবন এলাকাকে বিভিন্ন নামে চেনেন সেখানকার পরিবহন চালকরা। আফতাবনগর শেষ মাথা/নদীর পাড়/ডেসকো অফিসের যেকোনো একটা বললেই পৌঁছে যাবেন সেখানে।