সাতসতেরো

কর্মব্যস্ত মানুষের রমজানের শেষ ১০ রাতের আমল

আজ পবিত্র রমজান মাসের ২১ তারিখ। এ দশকের প্রতিটি রাত বিশেষ গুরুত্বের দাবি রাখে। মহানবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, ‘রমজানের শেষ দশকে শবে কদর তালাশ করো।’

তাই আমাদের উচিত শবে কদরের আশায় রমজানের অবশিষ্ট প্রতিটি রাতে বাড়তি ইবাদত বন্দেগি করা। যারা এতেকাফে আছেন অথবা যারা অবসর সময় কাটাচ্ছেন তারা এ সুযোগ ভালোভাবেই কাজে লাগাবেন। তারা রাত জেগে ইবাদত করবেন, সেজদা দেবেন, জিকির করবেন, চোখের পানিতে মোনাজাত করবেন। কিন্তু যারা কর্মব্যস্ত মানুষ; পেশাগত দায়িত্বের কারণে যারা সারা রাত জেগে ইবাদত করতে অক্ষম তাদেরও উচিত এই দশকের প্রতিটি রাতে খুব সামান্য পরিমাণে হলেও সহজ কিছু আমল নিয়মিত করা। 

আমল বাছাই করতে গিয়ে তারা এমন আমলগুলো বাছাই করতে পারেন যেগুলোতে সময় কম ব্যয় হয় কিন্তু ফজিলত বেশি পাওয়া যায়। প্রতিটি রাতে এ ধরনের কিছু আমল করলে তারাও শবে কদর পেয়ে যাবেন। শবে কদরের বরকত ও সুযোগ থেকে তারা সম্পূর্ণ বঞ্চিত হবেন না।

কর্মব্যস্ত মানুষের উপযোগী রমজানের শেষ দশ রাতের কিছু আমল : ১. প্রতি রাতের এশা ও ফজরের নামাজ মসজিদের জামাতে আদায় করা। কেননা, হাদিসে আছে যে ব্যক্তি এশা ও ফজরের নামাজ জামাতে আদায় করল, সে যেন সারারাত ইবাদত করল। ২. প্রতি রাতে তিনবার সুরায়ে ইখলাস পড়া। কেননা, হাদিসের ভাষ্যমতে সুরায়ে ইখলাস কুরআনের এক তৃতীয়াংশ। স্কলারদের মতে কথাটার কয়েক রকম ব্যাখ্যা রয়েছে। তার মধ্যে একটি ব্যাখ্যা হলো, সূরা ইখলাস সওয়াবের বিবেচনায় কুরআনের এক তৃতীয়াংশ। যদি রাতটি শবে কদর হয় তবে এই ব্যাখ্যা অনুসারে এক হাজার রাত পর্যন্ত প্রতি রাতে কোরআন খতম করার সওয়াব পাওয়া যাবে। ৩. প্রতিরাতে নূন্যতম দুই/চার রাকাত নফল নামাজ পড়া। যদি রাতটি শবে কদর হয় তবে এক হাজার রাত পর্যন্ত প্রতি রাতে দুই/চার রাকাত নামাজ পড়ার ছওয়াব পাওয়া যাবে। ৪. প্রতি রাতে ১০০ বার ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ জিকির করা। যদি রাতটি শবে কদর হয় তবে এক হাজার রাত পর্যন্ত প্রতি রাতে একশ বার কালেমা পড়ার ছওয়াব পাওয়া যাবে। ৫. প্রতি রাতে ইসলামের সেবায়, আর্ত মানবতার সেবায়, জনসেবায় সাধ্যমতো দানÑখয়রাত করা। যদি রাতটি শবে কদর হয় তবে এক হাজার রাত পর্যন্ত প্রতি রাতে ঐ পরিমাণ দান করার ছওয়াব পাওয়া যাবে। সব সময়ের জন্যই মহানবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন সর্বাধিক দানশীল ব্যক্তি। তবে রমজানে তাঁর দানের পরিমাণ আরও বেশি বেড়ে যেত।

এগুলো উদাহরণমাত্র। প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ নিজ সুযোগ, সময় ও সক্ষমতা অনুপাতে আরো কিছু আমল যোগ করতে পারেন বা এগুলোরও পরিমাণ বাড়িয়ে নিতে পারেন। মূল বার্তা হলো, শেষ দশকের রাতগুলো গুরুত্ব দেওয়া, অবহেলা না করা। বছরের বারো মাসের মধ্যে রমজান হলো সাধনার মাস। আবার রমজান মাসের তিনটা দশকের মধ্যে শেষ দশক হলো আরো বেশি সাধনার সময়।