সাতসতেরো

মাহে রমজানে আল কুরআনের দাবি

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কোরআনুল কারীম নাজিল করেছেন আমাদেরকে হেদায়েতের পথ বাতলে দেওয়ার জন্যে। আল্লাহ পাক এরশাদ করেন: هدى للمتقين কোরআন মোত্তাকিনদের পথপ্রদর্শক। (সূরা বাকারা আয়াত;২)

কোরআনুল কারীমের বহু দিক-নির্দেশনা রয়েছে। যেটির পরিপূর্ণতাই হচ্ছে ইসলাম। মাহে রমজানে কুরআনুল কারীমের দাবিগুলোর মধ্যে অন্যতম দাবি কোরআন খতম করা। কোরআন তেলাওয়াত/খতম শুধু রমজানই করতে হবে, ব্যাপারটি কিন্তু এমন নয়। বছরজুড়ে এই আমলটি রাসূল (সা.) এবং তার সাহাবায়ে কেরাম অব্যাহত রেখেছেন।

তবে কোরআন নাযিলের মাস যেহেতু মাহে রমাজান। সে হিসাবে অন্ততপক্ষে মাহে রমজান যেন কোরআন তেলাওয়াত/খতমহীন আমাদের জীবন অতিবাহিত না হয়। কোরআন খতমের অনন্য একটি উপায় তারাবি।

আমাদের সমাজে বহুসংখ্যক মানুষ রয়েছেন যারা কোরআন শরীফ পড়তে পারেন না। তাদের জন্য তারাবিতে কোরআন খতম করার অনন্য এক সুযোগ রয়েছে।

হানাফী হাম্বলী মাযহাবের অধিকাংশ মাশায়েখের মতে তারাবিতে কোরআন মাজিদ খতম করা সুন্নত। কওমের লোকজনের অলসতার অজুহাতে তারাবিতে কোরআন খতম করা ছেড়ে দেওয়া যাবে না। (ফতোয়ায়ে মাহমুদিয়া)। ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) যুগে তিনি ক্বারী সাহেবদেরকে ৩০ আয়াত করে প্রতি রাকাতে পড়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন, ফলে তখন তিন খতম পরিমাণ তেলাওয়াত হতো।

সেই হিসাবে ফুকাহায়ে কিরামদের মতে তারাবিহতে তিন খতম করা মুস্তাহাব। (ফাতহুল কাদীর)। তবে মুসল্লিরা বিরক্তি বোধ করলে এক খতমের বেশি না পড়া উচিত। (আল-ফুরুয়া লি'ইবনিল মুফলীহ)। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন: কোরআন খতমের সময় আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে রহমত বর্ষিত হয়। (মুসনাদে আহমাদ)।

বিশিষ্ট ফকীহ ইবনে সালাহ (র.) বলেন, তারাবিতে কুরআন খতম করা ওমর (রা.) এর যুগ ও পরবর্তী সালাফাতের আমল। (ফাতওয়ায়ে ইবনে সালাহ)

ইবনে তাইমিয়া (র.) বলেন, তারাবিতে কোরআন তেলাওয়াত করা মুসলিম উম্মার ভিত্তিতে মুস্তাহাব। তিনি আরও বলেন, বরং তারাবির অন্যতম উদ্দেশ্য হলো কোরআন তেলাওয়াত, যাতে মুসলিম উম্মাহ কোরআন তেলাওয়াত কিংবা খতম শুনতে পায়। (মাজমাউল ফাতওয়া)

ইবনুল আবদিল বার (র.) বলেন, তারাবিতে প্রতি আয়াতে ১০ আয়াত করে তেলাওয়াত করা উচিত।

লেখক : খতিব ও ইসলামী আলোচক