স্বাস্থ্য

অর্ধসহস্র খাদ্যসামগ্রীতে মাত্রাতিরিক্ত ক্ষতিকর উপাদান

নিজস্ব প্রতিবেদক : শাক-সবজি ও ভোজ্য তেলসহ প্রায় অর্ধসহস্র খাদ্যসামগ্রীতে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর মাত্রাতিরিক্ত বিষাক্ত কেমিক্যাল পাওয়া গেছে। জনস্বাস্থ্য ইন্সটিটিউিটের ‘ন্যাশনাল ফুড সেফটি (এনএফএসএল)’এর তত্ত্বাবধানে ‘অ্যান অ্যাপ্রেইজল অব ফুড সেফটি সার্ভে ইন বাংলাদেশ সেকেন্ড রাউন্ড সার্ভে’-এর ২০১৬-১৭ সালে পরিচালিত এক জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিষ্ঠানটি ঢাকাসহ, কুমিল্লা, রাজশাহী, ফরিদপুর, পাবনা ও যশোরের বিভিন্ন বাজার থেকে সংগৃহিত নুডলস, ঘি, সরিষা তেল, সয়াবিন তেল, খোলা সেমাই, লাচ্ছা সেমাই, ফুলকপি, বেগুন, শিম, কাঁচা মরিচ, টমেটো, ভেলপুরি, ফুচকা, ঝালমুড়ি ও আচারসহ মোট ৪৬৫টি নমুনা মাইক্রোবায়োলজিক্যাল পরীক্ষা করে মাত্রাতিরিক্ত ক্ষতিকর উপাদান পাওয়া গেছে। জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বিভিন্ন বাজার ও সুপার শপ থেকে বিভিন্ন ব্যান্ডের ৫৫টি নুডলসের মধ্যে ১৪টিতে বিভিন্ন মাত্রায় টেস্টিং সল্ট, লেড ও প্রোটিনের নির্দিষ্ট মাত্রার চেয়ে পরিমাণ কম পাওয়া গেছে। এছাড়া এসব পণ্যের মধ্যে পাঁচটি ব্র্যান্ড ও ১০টি করে খোলা নমুনা নিয়ে মাইক্রোবায়োলজিক্যাল পরীক্ষায় একটি ব্র্যান্ড ও আটটি খোলা লাচ্ছা সেমাইয়ে মোল্ডের উপস্থিতি পাওয়া যায়। সয়াবিন তেল খোলা ১৮টি, ব্র্যান্ড ৯টি, সরিষা তেল খোলা ১৮টি, ব্র্যান্ড ১৩টি, ঘি খোলা ১৮টি, ব্র্যান্ড ২০টি পণ্যের মধ্যে মাত্র একটি ব্র্যান্ড ও দুটি খোলা সয়াবিন তেলের নমুনায় গুণগত মান অনুযায়ী পাওয়া যায়। পাশাপাশি ঢাকা শহরের ৪৬টি থানায় অবস্থিত স্কুলের সামনে থেকে ৪৬টি ঝালমুড়ি, ৩০টি ফুচকা, ১৬টি ভেলপুরি, ৪২টি আচারের নমুনা মাইক্রোবায়োলজিক্যাল টেস্ট করে ৮৫ থেকে ৯০ ভাগ ভেলপুরি, ফুচকা ও ঝালমুড়িতে ইকোলাই ব্যাকটেরিয়া পাওয়া যায়। এছাড়া সংগ্রহকৃত ৫টি ভেলপুরি ও ৩টি ঝালমুড়ির নমুনায় টাইফয়েডের জীবাণু সালমোনিলা পাওয়া যায়। ১২টি ভেলপুরির মধ্যে ৭৫ ভাগ, ৩০টি ফুচকার মধ্যে ১০০ ভাগ, ১৩টি ঝালমুড়ির নমুনা ও ৪টি আচার স্যাম্পলে স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে বেশি পরিমাণে ইস্ট মোল্ড পাওয়া যায়। শনিবার জনস্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটের সম্মেলন কক্ষে এ জরিপ প্রকাশ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইন্সটিটিউটের পরিচালক ডা. মো. আনিছুর রহমান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এনএফএসএল’র প্রধান অধ্যাপক ডা. শাহনীলা ফেরদৌস। এছাড়া বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মাহফুজুল হক, বিশেষ অতিথি হিসেবে বিএসএমএমইউ’র ব্যাসিক সায়েন্স অ্যান্ড প্যারা ক্লিনিক্যাল সায়েন্সের ডিন অধ্যাপক ডা. ইকবাল হোসেন আর্সনাল, বিশ্ব খাদ্য সংস্থা (এফএও) সিনিয়র ন্যাশনাল অ্যাডভাইজার শাহ মুনির হোসেন, বাংলাদেশ ব্রেস্ট ফিডিং ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক এসকে রায়সহ বিভিন্ন বিজ্ঞানী উপস্থিত ছিলেন। রাইজিংবিডি/ঢাকা/৪ নভেম্বর ২০১৭/সাওন/মুশফিক