স্বাস্থ্য

করোনায় পুরুষের মৃত‌্যু বেশি হচ্ছে কেনো

করোনা আক্রান্ত হয়ে নারীদের চেয়ে পুরষের মৃত‌্যু হার ৩৫ শতাংশ বেশি। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চাকরি-ব্যবসাসহ জীবন-জীবিকার কারণে বাড়ির বাইরে যাওয়ায় নারীর তুলনায় বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন পুরুষরা। এরমধ্যে অনেকে স্বাস্থ্যবিধি মানেন না। তাই আক্রান্তের হারও বেশি। ফলে তাদের মৃত্যুর হারও বেশি। 

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) পর্যন্ত দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মোট ২১ হাজার ৩৯৭ জন মারা গেছেন। এরমধ্যে পুরুষ ১৪ হাজার ৪১৯ জন এবং নারীর ৬ হাজার ৯৭৮ জন। পুরুষের মৃত্যু হার ৬৭ দশমিক ৩৯ এবং নারীর মৃত্যুর হার ৩২ দশমিক ৬১ শতাংশ। 

পুরুষরা বেশি আক্রান্ত ও মারা যাওয়ার কারণ হিসেবে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, ‘করোনায় সংক্রমিত হওয়ার মতো ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে নারীদের যাতায়াত কম। তাদের বেশিরভাগই ঘরে থাকেন। ভিড় এড়িয়ে চলেন। এজন্য সংক্রমিতও কম হচ্ছেন। এদিকে নানা কারণে পুরুষরা ঘর থেকে বের হন। তাই আক্রান্তও বেশি হন। সঙ্গত কারণে পুরুষদের মৃত্যু হারও বেশি। তবে পুরুষদের সংস্পর্শে ঘরে থাকা নারীরাও আক্রান্ত হচ্ছেন।’

ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, ‘জীবন-জীবিকার জন্য যেহেতু পুরুষকে বাইরে যেতে হচ্ছে, তাই তাদেরকে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে, মাস্ক পরে, বাইরে যেতে হবে। তাহলে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি অনেক কমবে এবং ঘরে নারী-শিশুকেও সংক্রমিত করার ঝুঁকি কমবে।’

এদিকে, ঘরে থাকা ছাড়াও হরমোনের কারণে নারীরা করোনা থেকে রক্ষা পান বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. ফরহাদ মরজুর বলেন, ‘বিশ্বময় কিছু গবেষণা বলছে, নারীদের শরীরে যে হরমোন রয়েছে, সেটাও প্রাকৃতিকভাবে তাদের রক্ষা করে। সেজন্য নারীদের করোনা সংক্রমণও কম হচ্ছে।’

করোনা থেকে রক্ষা পেতে স্বাস্থ্যবিধি মানা এবং মাস্ক পরার ওপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন এই বিশেষজ্ঞ। তিনি বলেন, ‘করোনা থেকে বাঁচার জন্য মাস্ক পরার বিকল্প নেই। পাশাপাশি ভ্যাকসিন নিতে হবে। সবাই মাস্ক পরলে সংক্রমণ কমে যাবে। আর সংক্রমণ কমলে মৃত্যু হারও কমে যাবে।’