স্বাস্থ্য

‘পুষ্টিকর খাদ্যগ্রহণের অভ্যাস গড়ে তুলতে ছাদকৃষি গুরুত্বপূর্ণ’

‘কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে পুষ্টিকর খাদ্যগ্রহণের অভ্যাস গড়ে তুলতে ছাদকৃষি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। তারা যখন নিজ হাতে খাদ্য উৎপাদনে কাজ করবে, সুষম খাদ্যগ্রহণে এমনিতেই তারা আগ্রহী হয়ে উঠবে। গ্রামীণ পর্যায়ে কাজের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে গ্রামীণ মানুষদের স্বাবলম্বী করে তুলতে হবে যাতে তারা চাকরির সন্ধানে শহরে এসে ভিড় না করে।’

মঙ্গলবার (৩০ মে) ‘ক্রমাগত নগরায়নের ফলে সৃষ্ট পুষ্টি স্থানান্তর, এর চ্যালেঞ্জ এবং সম্ভাব্য সমাধানগুলো সম্পর্কে যথাযথ পুষ্টিসেবা অন্তর্ভুক্তিকরণ’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন।

ডিনেট এ গোলটেবিল বৈঠক তাদের নিজস্ব অঙ্গনে নিউট্রিশন ইন্টারন্যাশনাল এর কারিগরি সহায়তায় আয়োজন করে।

গেইন বাংলাদেশ এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. রুদাবা খন্দকার সঞ্চালনা করেন এবং নিউট্রিশন ইন্টারন্যাশনাল এর কান্ট্রি ডিরেক্টর মিস সাইকা সিরাজ মূল বক্তব্য প্রদান করেন।  

ডিনেট এর সহ প্রতিষ্ঠাতা এবং নির্বাহী পরিচালক এম.  শাহাদাৎ হোসেন বলেছেন, ‘গবেষনায় দেখা গেছে ২০৫০ সালের নাগাদ এশিয়া ও আফ্রিকার ২.৫ বিলিয়নেরও বেশি লোক শহরে বসবাস করবে। এরই ফলশ্রুতিতে, বাংলাদেশ দ্রুত শহরায়ন এবং পুষ্টিবিষয়ক বাঁধার সম্মুখীন হচ্ছে। তাই আমাদেরকে অবশ্যই খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন, শহরায়ন এবং পুষ্টিমানের প্রগতিশীলতা নির্ধারণ করতে হবে।’

নিউট্রিশন ইন্টারন্যাশনাল এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. সাইকা সিরাজ বলেন, ‘বছরের পর বছর ধরে অপুষ্টি হ্রাস পেয়েছে কিন্তু একই সাথে অতিরিক্ত পুষ্টি বৃদ্ধি পেয়েছে যার ফলে সমাজের অপুষ্টির মাত্রা পরিবর্তন হয়নি, বিশেষত শহরে অঞ্চলে।’

বিশ্ব ব্যাংকের কনসালটেন্ট ড. এস. এম মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘গ্রামীণ পর্যায়ে কাজের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে গ্রামীণ মানুষদের স্বাবলম্বী করে তুলতে হবে যাতে তারা চাকরির সন্ধানে শহরে এসে ভিড় না করে।’

হেলেন কিলার ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ এর হেলথ অ‌্যান্ড নিউট্রিশন প্রধান ড. আফসানা হাবিব শিউলী বলেন, ‘কিশোর- কিশোরীদের মধ্যে পুষ্টিকর খাদ্যগ্রহণের অভ্যাস গড়ে তুলতে ছাদকৃষি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। তারা যখন নিজ হাতে খাদ্য উৎপাদনে কাজ করবে, সুষম খাদ্যগ্রহণে এমনিতেই তারা আগ্রহী হয়ে উঠবে।”

ন্যাশনাল নিউট্রিশন সার্ভিস এর ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ড. মুরাদ মো. শমসের তাবরিস খান তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন যে, পুষ্টি রূপান্তরের উপর দ্রুত নগরায়ণের প্রভাব সম্পর্কে সরকারের স্টেকহোল্ডারদের সংবেদনশীল করার গুরুত্ব তুলে ধরেন। তার মতে, এই সমস্যা সমাধানের প্রথম পদক্ষেপ হলো সমাজে পুষ্টির চাহিদা তৈরি করা।

বাংলাদেশ ফুড সেফটি অথরিটির বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা রওশন আরা বেগম বলেন, ‘সরকারি এবং বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানকে খাদ্য নিরাপত্তা এবং ক্রমবর্ধমান উৎপাদনে সমানভাবে গুরুত্ব দিতে হবে। যেহেতু উৎপাদন প্রতিষ্ঠানগুলো স্বল্প লাভের জন্যও অধিকাংশ খাবারে ভেজাল মেশায়।’

এছাড়া, আরও উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক‌্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. খালেকুজ্জামান, বাংলাদেশ ন্যাশনাল নিউট্রিশন কাউন্সিলের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর ড. নুসরাত জাহান, ন্যাশনাল নিউট্রিশন সার্ভিসেস-এর ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ড. এস এম হাসান মাহমুদ, কেয়ার বাংলাদেশ-এর পরিচালক ড.ইখতিয়ার উদ্দিন, আইসিডিডিআরবির গবেষক ড. সাবরিনা রশিদ, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচীর নিউট্রিশন অফিসার সামিউল নেওয়াজ এবং ওয়ার্ল্ড ভিশন থেকে মো. মিজানুর রহমান ।