স্বাস্থ্য

ডেঙ্গু বাড়লেও চিকিৎসায় সরকার প্রস্তুত : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রতি‌দিন বাড়‌ছে। ত‌বে রোগীর সংখ্যা বাড়লেও তা‌দের চিকিৎসায় সরকার প্রস্তুত রয়ে‌ছে ব‌লে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। 

তিনি বলেন, গত কিছুদিন ধরে সংক্রমণ কিছুটা বাড়লেও চিকিৎসার বিষয়ে আমরা প্রস্তুত। হাসপাতালগুলোতে পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ চিকিৎসার সব ব্যবস্থা করে রাখা আছে।

বুধবার (৭ জুন) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) ‘মিট দ্যা রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জাহিদ মালেক বলেন, ‘ডেঙ্গুতে আমরা চিকিৎসার বিষয়টি দেখি। মশা নিধন ও নিয়ন্ত্রণের কাজগুলো করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও সিটি কর‌পোরেশন। কোথায় মশা বাড়ছে, কোথায় রোগীর সংখ্যা বেশি, এই তথ্যগুলো আমরা তাদের দেই। যতটুকু জেনেছি শক্তিশালী স্প্রে আনা হয়েছে। আমরা আশা করছি, এ‌তে মশা নিধন হবে এবং ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যাও কমে যাবে।

তিনি বলেন, হাসপাতালগুলোতে আমরা ডেঙ্গু রোগী‌দের চিকিৎসায় কর্নার করেছি। চিকিৎসক-নার্সদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি। একসঙ্গে যা ওষুধ লাগে সে ব্যবস্থা আমরা করেছি। কাজেই সেখানে ডেঙ্গু রোগী‌দের চি‌কিৎসায় ‌কো‌নো‌ সমস্যা হ‌বে না।  

নাগ‌রিক‌দের সচেতনতার ওপর বে‌শি গুরুত্বারোপ করে মন্ত্রী বলেন, যতই প্রস্তুতি নেওয়া হোক, আমাদের নিজেদেরও একটু দায়িত্ব র‌য়েছে। আমাদের আশেপাশে ডোবানালা, ফুলের টব, পরিত্যক্ত জিনিসপত্র পরিষ্কার রাখা আমাদের দায়িত্ব। এর পাশাপাশি যদি আমরা ঠিকমতো স্প্রে করতে পারি, তাহলে এমনিতেই মশা কমে যা‌বে।

মন্ত্রী আরও বলেন, মহাখা‌লি ডিএনসিসি কোভিড হাসপাতালে শুরুতে করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেয়া হলেও বর্তমানে সেখানে অল্প কিছু ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হ‌য়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। যেহেতু ডেঙ্গু সংক্রমণও এখন কম, ডিএনসিসি চাইলে যে কোনো সময় আমরা হাসপাতালটি আবার তাদের কাছে হস্তান্তর করতে পারি। 

স্বাস্থ্যসেবায় বিভিন্ন নতুন উদ্যোগ প্রসঙ্গে জাহিদ মালেক বলেন, আমরা কোভিডকালীন টেলিমেডিসিন ব্যবহার করেছি, এখন সেটিকে ডিজিটাল সিস্টেমে নিয়ে আসা প্রয়োজন। পুরো স্বাস্থ্য‌ ব্যবস্থা‌কে ডিজিটালাইজড করা হবে। এরই মধ্যে ১৫০০ কোটি টাকার একটি প্রজেক্ট ডিপিইতে পাস হয়েছে। এই সিস্টেমে প্রত্যেকের জন্য একটি হেলথ কার্ড থাকবে। কার্ডধারী ব্য‌ক্তি যে কোনো সরকা‌রি হাসপাতা‌লে সেই কার্ড নিয়ে চিকিৎসা নিতে পারবেন। তার রোগ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য কার্ডে সংরক্ষণ করা হ‌বে।

মন্ত্রী বলেন, আমরা আরেক ধাপে ৮টি বিভাগীয় হাসপাতাল করতে যাচ্ছি। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৫ হাজার বেডের কার্যক্রম অনেক দূর এগিয়েছে। আপনারা জানেন এটি একটি বড় প্রজেক্ট। তাই এর ডিজাইন ও অর্থায়ন পেতে কিছুটা সময় লেগেছে। আমরা এখন ইউনিভার্সেল হেলথ কভারেজ নিয়ে কাজ করছি। আমরা প্রাথমিক সেবাগুলো প্রায় বিনামূল্যে দেয়া হয়। হেলথ কাভারেজের মূল শর্তই হলো বিনামূল্যে স্বাস্থ্য সেবা। মানুষকে যেন নিজ পকেট থেকে খরচ করতে না হয়।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মুরসালিন নোমানী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল। এ সময় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অন্যান্য কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।