আন্তর্জাতিক

‘মা-বাবার মোবাইল আসক্তি পারিবারিক জীবনের জন্য ক্ষতিকর’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : অভিভাবকদের মোবাইল ফোনের অত্যাধিক ব্যবহার পারিবারিক জীবনে সমস্যা সৃষ্টি করে বলে মনে করছে কিশোর-কিশোরীরা। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে চালানো জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। ১১ থেকে ১৮ বছর বয়স্ক ২ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে চালানো এ সমীক্ষায় দেখা গেছে, অন্তত এক-তৃতীয়াংশ কিশোর-কিশোরী মা-বাবাকে সারাক্ষণ মোবাইল না ঘাঁটতে অনুরোধ করেছে। ১৪ শতাংশ বলেছে, তাদের মা-বাবা খাবার টেবিলেও মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। তবে ৩ হাজার অভিভাবকের ৯৫ শতাংশ-ই তা অস্বীকার করেছেন। শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৮২ শতাংশ মনে করে, খাবার সময় মোবাইল বা অন্য কোন কিছু ব্যবহার করা উচিত নয়। ৩৬ শতাংশ তাদের মা-বাবাকে মোবাইল ব্যবহার না করতে বলেছে। ২২ শতাংশ মনে করে, মোবাইলজাতীয় যন্ত্র ব্যবহারের কারণে পরিবারের সদস্যরা একে অপরের সঙ্গ উপভোগ করা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা মা-বাবাকে ফোন ব্যবহার করতে মানা করেছে তাদের ৪৬ শতাংশ বলেছে, মা-বাবা তাদের অনুরোধ কানে তোলেননি। ৪৪ শতাংশ বলেছে, এতে তারা মানসিক আঘাত ও অবহেলার শিকার হয়েছে বলে মনে করছে। এরপরও অবশ্য মাত্র ১০ শতাংশ অভিভাবক বলেছেন, তাদের মোবাইল ব্যবহার করাটা কোনো সমস্যা নয়। আবার ৪৫ শতাংশ মনে করেন, তারা নিজস্ব সময়ের অনেকখানিই অনলাইনে অপচয় করেন। ৩৭ শতাংশ বলেছেন, তারা ছুটির দিনগুলোতে ৩ থেকে ৫ ঘণ্টা অনলাইনে থাকেন। ৫ শতাংশ বলেছেন, ছুটির দিনে তারা অনলাইনে সময় কাটান ১৫ ঘণ্টা পর্যন্ত। গত বছর পরিচারিত সমীক্ষায় দেখা যায়, প্রায় অর্ধেক শিক্ষার্থীই বিছানায় গিয়েও ফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকে। নতুন সমীক্ষায় অংশ নেওয়া ৭২ শতাংশ বলেছে, তারা দিনে ৩ থেকে ১০ ঘণ্টা অনলাইনে থাকে। কিন্তু ছুটির দিনে কেউ কেউ (১১ শতাংশ) ১৫ ঘণ্টা, কেউ (৩ শতাংশ) এমনকি ২০ ঘণ্টা পর্যন্ত মোবাইল ব্যবহার করে। অনলাইনে সময় কাটাতে গিয়ে ঘুমের ঘাটতি নিয়ে শিক্ষার্থীরা নিজেরা চিন্তাগ্রস্ত। ৪৭ শতাংশ এটিকেই সবচেয়ে বড় সমস্যা বলে চিহ্নিত করেছে। তবে মাত্র ১০ শতাংশ মা-বাবা মনে করেন, অনলাইন আসক্তি তাদের সন্তানের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়। সমীক্ষাটি চালায় ডিজিটাল অ্যাওয়ারনেস ইউকে (ডাউক) ও হেডমাস্টার্স ও হেডমিস্ট্রেসেস কনফারেন্স নামে যুক্তরাজ্যের দুটি সংগঠন (এইচএমসি)। এইচএমসির প্রধান ও কেন্টের অ্যাশফোর্ড স্কুলের প্রধান শিক্ষক মাইক বুচানন বলেন, সময় এসেছে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের সম্মিলিতভাবে প্রযুক্তির জগতে আসক্ত হওয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসার। শিশুরা নিজেরাও এর ভয়াবহতা বুঝতে পারলেও বড়দেরই দায়িত্ব শিশুদের জন্য সীমা নির্ধারণ করা ও তাদের সামনে আদর্শ উদাহরণ হওয়া। ডাউকের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এমার বার্টসন বলেন, শিশুরা অনলাইনে কত সময় থাকছে বা কী দেখছে, খুব কম অভিভাবকই তার খবর রাখেন। এই জরিপ মা-বাবাদের জন্য ‘জেগে ওঠার ডাক’বলে মন্তব্য করেন তিনি। এইচএমসির বসন্ত সম্মেলনকে সামনে রেখে এই জরিপ প্রকাশ করা হয়েছে। তথ্যসূত্র : বিবিসি অনলাইন। রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৩ এপ্রিল ২০১৭/আবীর/রাসেল পারভেজ