আন্তর্জাতিক

ভারতের নতুন রাষ্ট্রপতি সম্পর্কে ১০ তথ্য

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মঙ্গলবার দুপুরে ভারতের ১৪তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নিয়েছেন রাম নাথ কোবিন্দ। শপথের পর প্রথম ভাষণে তিনি বলেছেন, ‘আমি অতি সাধারণ পরিবেশ থেকে উঠে এসেছি।’ সত্য বলতে, রাষ্ট্রপতি পদে তার নাম আসার আগ পর্যন্ত বিহার ও উত্তর প্রদেশের বাইরে তার তেমন পরিচিতি ছিল না। সরকার ও রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কোনো উচ্চপদেও তিনি ছিলেন না। সে যাই হোক, ভারতের মতো বৃহত্তম গণতন্ত্রিক দেশের রাষ্ট্রপতি হওয়ার সৌভাগ্য কতজনেরইবা হয়!   ভারতের অপেক্ষাকৃত অনগ্রসর দলিত সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত রাম নাথ কোবিন্দ। দলিত সম্প্রদায় থেকে সংসদ সদস্য ছিলেন তিনি। এ পর্যন্ত ভারতের দ্বিতীয় দলিত রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দ। এর আগে দলিত রাষ্ট্রপতি ছিলেন কে আর নারায়নান। কোবিন্দ সম্পর্কে ১০টি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জেনে নেওয়া যাক- ১। ভারতের উত্তর প্রদেশের কানপুরের দেহাটে ১৯৪৫ সালের ১ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৪ সালের ১ মে সবিতার সঙ্গে তার বিয়ে হয়। তাদের ছেলের নাম প্রশান্ত কুমার, যার স্বতী নামে এক মেয়ে আছে। ২। বাণিজ্য ও আইন বিষয়ে কানপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। দীর্ঘদিন আইন পেশায় ছিলেন। বিজেপি সরকারের আমলে সুপ্রিম কোর্টে বিজেপির আইনজীবী ছিলেন এবং ১৯৯১ সালে বিজেপিতে যোগ দেন। ১৯৮০ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্রীয় সরকারের স্থায়ী কাউন্সেল ছিলেন। ১৯৯৩ সালের আগ পর্যন্ত দিল্লি হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে ১৬ বছর আইনপেশায় ছিলেন। ১৯৭১ সালে দিল্লি বার কাউন্সিলে অ্যাডভোকেট হিসেবে নিবন্ধিত হন। লখনোয়ের ড. বিআর আম্বেদকার বিশ্ববিদ্যালয় ও কলকাতার ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্টের বোর্ড সদস্য ছিলেন। ৩। অধিকার রক্ষা এবং সমাজের অনগ্রসর অংশকে তুলে ধরার প্রচেষ্টার মধ্যে কেন্দ্রীভূত ছিল কোবিন্দের পেশাজীবন। দলিতের অধিকার আদায়ের জন্য তিনি সংগ্রাম করেছেন। ১৯৯৮ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত বিজেপির দলিত মোর্চার প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ৪। ১২ বছর ধরে সংসদ সদস্য ছিলেন কোবিন্দ। এ সময়ে তিনি উত্তর প্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর মধ্যে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য অবকাঠামো নির্মাণে মনোযোগী ছিলেন। আইন পেশায় থাকার সময়ে তিনি সমাজের দরিদ্র ও পিছিয়ে পড়া দলিত সম্প্রদায়ের জন্য বিশেষ করে দলিত নারীদের অধিকার আদায়ের ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাসেবার ভিত্তিতে মামলা লড়েছেন। ৫। নির্বাচনে মুখোমুখি হয়েছেন অল্প কয়েকবার। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর উত্তর প্রদেশের ঘটমপুর থেকে নির্বাচন করেন কিন্তু হেরে যান। ২০০৭ সালে উত্তর প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে ভগ্নিপুর থেকে দ্বিতীয়বার নির্বাচন করেন কিন্তু সেবারও তিনি হেরে যান। নির্বাচনে পরাজিত হলেও কোবিন্দের প্রশাসনিক ও প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞানের জন্য প্রেসিডেন্ট পদে বিজেপি তাকেই এগিয়ে রাখে। ৬। কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সংসদীয় কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন কোবিন্দ। এর মধ্যে রয়েছে : সিডিউল্ড কাস্ট/ট্রাইবস কল্যাণবিষয়ক সংসদীয় কমিটি, স্বরাষ্ট্রবিষয়ক সংসদীয় কমিটি, পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাসবিষয়ক সংসদীয় কমিটি, সামাজিক বিচার ও ক্ষমতায়নবিষয়ক সংসদীয় কমিটি এবং আইন ও বিচারবিষয়ক সংসদীয় কমিটি। রাজ্যসভার হাউস কমিটির সভাপতিও ছিলেন একবার। ৭। জাতিসংঘে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেন এবং ২০০২ সালের অক্টোবর মাসে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ভাষণ দেন। ৮। ২০১৫ সালের ৮ আগস্ট বিহারের গভর্নর হিসেবে নিয়োগ পান। ৯। চলতি বছরের ২১ জুন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়নপত্র জমা দেন। ১০। ১৭ জুলাই প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচন হয় এবং ২০ জুলাই নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। প্রায় ৬৭ শতাংশ ভোট পেয়ে কংগ্রেসের প্রার্থী মিরা কুমারকে হারিয়ে প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হন কোবিন্দ। তথ্যসূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইন রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৫ জুলাই ২০১৭/রাসেল পারভেজ