আন্তর্জাতিক

২৭ বছর পর খুলছে ইরাক-সৌদি আরব সীমান্ত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দীর্ঘ ২৭ বছর বন্ধ থাকার পর আবার খুলে যাচ্ছে ইরাক ও সৌদি আরবের মধ্যকার সীমান্ত যোগাযোগ। সৌদি গণমাধ্যম জানিয়েছে, ১৯৯০ সাল থেকে আরার বর্ডার ক্রসিং বন্ধ রয়েছে। ইরাকের প্রয়াত স্বৈরশাসক সাদ্দাম হুসাইন কুয়েতে আক্রমণ চালালে ইরাক সীমান্ত দিয়ে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় সৌদি আরব। শিগগিরই আবার তা খুলে যাচ্ছে। বাগদাদে সৌদি আরবের চার্জ দ্য’অ্যাফেয়ার্স আবদুল আজিজ আল-শামারি মঙ্গলবার বলেছেন, সীমান্ত খুলে দেওয়া হচ্ছে পণ্য পরিবহণের সুবিধার্থে। সংবাদপত্র মক্কা জানিয়েছে, সোমবার ইরাকি ও সৌদি কর্মকর্তারা আরার বর্ডার ক্রসিং পরির্দশন করেছেন। সেখানে তারা ইরাকি হজযাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। বছরে একবার পবিত্র হজব্রত পালনের সময় ইরাকি হজযাত্রীরা এই সীমান্ত পথ ব্যবহারের বৈধ সুযোগ পেয়ে থাকেন। ইরাকের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় আনবার প্রদেশের গভর্নর সোয়াইব আল-রাউই বলেছেন, আরারগামী মরুপথের সুরক্ষায় সরকার সেনাবাহিনী মোতায়েন করেছে। সীমান্ত যোগাযোগ আবার শুরু হওয়ার ঘটনা দুই দেশের সম্পর্ককে শক্তিশালী করার গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে ইরাক-সৌদি আরবের মধ্যে সহযোগিতার ক্ষেত্রে এটি বিশাল উদ্যোগ। সোমবার সৌদি আরবের মন্ত্রিসভায় তাদের সঙ্গে ইরাকের যৌথ বাণিজ্য কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। দীর্ঘদিন পরে সৌদি আরবের এই পদক্ষেপ মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করবে। সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত ইরাকের ওপর তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ইরানের প্রভাব কমাতে চাইছে। দীর্ঘদিন ইরাকের সঙ্গে সীমান্ত যোগাযোগ না থাকায় এ সুযোগে ইরান বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে ইরাকের সঙ্গে সুবিধাজনক স্থান করে নিয়েছে। কিন্তু শিয়াপন্থি ইরানের সঙ্গে সুন্নিপ্রধান ইরাকের সুসম্পর্ক মেনে নিতে নারাজ সৌদি ও আমিরাত সরকার। এ জন্য তারা বড় ধরনের ছাড়ও দিয়েছে। সম্প্রতি ইরাকের প্রভাবশালী শিয়ানেতা মুকতাদা আল-সদরের সঙ্গে সৌদি ক্রাউন প্রিন্সের বৈঠক হয়েছে, যা নিঃসন্দেহে বিরল দৃষ্টান্ত। কিন্তু তার পরও সৌদি ও আমিরাত সরকার চাইছে, ইরাকের কাছ থেকে ইরানকে দূরে রাখতে। সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে মুকতাদা আল-সদরের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, ইরাককে সৌদি আরব ১ কোটি ডলার অনুদান দেবে। এ ছাড়া ইরাকে শিয়া অধ্যুষিত অঞ্চলে বিনিয়োগের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে সমীক্ষা চালাবে। জনপ্রিয় শিয়া নেতা হলেও শিয়ারাষ্ট্র ইরান থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলেন মুকতাদা আল-সদর। ইরাকের সঙ্গে শত্রুতার অবসানে আগেই কাজ শুরু করেছে সৌদি আরব। ২৫ বছর পর ২০১৫ সালে ইরাকে দূতাবাস খোলে সৌদি সরকার। সেই ধারাবাহিকতায় এবার সীমান্ত খুলে দিল তারা। তথ্যসূত্র : আলজাজিরা অনলাইন রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৬ আগস্ট ২০১৭/রাসেল পারভেজ