আন্তর্জাতিক

সু চির ভাষণের সমালোচনা বিশ্ব নেতাদের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দল এনএলডির নেত্রী অং সান সু চি রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে যে ভাষণ দিয়েছেন তার সমালোচনা করেছেন বিশ্ব নেতারা। মঙ্গলবারের ওই ভাষণে সু চি রাখাইনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের নিন্দা জানালেও মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিষয়ে কিছু বলেননি। অথচ রাখাইনে ভয়াবহ নৃশংসতার জন্য সেনাবাহিনীকেই দায়ী করছে রোহিঙ্গারা। ২৪ আগস্ট রাখাইনে পুলিশ ও সেনা চৌকিতে বিদ্রোহীদের হামলার জের ধরে রোহিঙ্গা নিধন অভিযানে নামে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। জাতিসংঘের হিসেবে সেনাদের দমন-পীড়নের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে ৪ লাখ ১০ হাজার রোহিঙ্গা মুসলমান। এছাড়া বাংলাদেশে আসতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে শতাধিক রোহিঙ্গার, আবার গুলি কিংবা অগ্নিদগ্ধ হয়ে আহত অনেককে নিয়ে এসেছেন তাদের স্বজনরা। অথচ মঙ্গলবার তার ভাষনে সু চি বলেছেন অধিকাংশ মুসলমানই রাখাইনে অবস্থান করছে। তিনি মুসলমানরা সেখান থেকে পালাচ্ছে কেন সেটিও খুঁজে বের করার কথা বলেছেন। রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের নেতারা ইতোমধ্যেই সু চির বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে একে সেনাবাহিনীর বক্তব্য বলে আখ্যায়িত করেছেন। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন মঙ্গলবার সু চিকে ফোন করে বলেছেন, শরণার্থীদের যাচাই করে ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তাকে তিনি স্বাগত জানাচ্ছেন। কিন্তু তিনি একই সাথে ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার দিকেও তিনি সু চিকে নজর দিতে বলেন। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে দেওয়া ভাষণে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রো বলেছেন, ‘রাখাইনে সামরিক অভিযান অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। মানবিক সহায়তার সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। জাতিগত নিধন বন্ধে আইনের শাসন পুন:প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’ তিনি বলেন, সহিংসতা বন্ধ করে মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর জন্য তারা নিরাপত্তা পরিষদের মাধ্যমে একটি উদ্যোগ নেবেন। জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টনিও গুতেরেসও সামরিক অভিযান বন্ধ করে রোহিঙ্গাদের ক্ষোভের দিকে দৃষ্টি দেয়ার জন্য মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। একইসঙ্গে তিনি সেনা অভিযান বন্ধ করার কথাও বলেছেন। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সক্রিয় হওয়ার আহবান জানিয়েছেন। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে রাখাইনে সামরিক অভিযান বন্ধ করার কথা বলছেন। আর অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সু চির সমালোচনা করে বলেছে, তিনি বালিতে মাথা গুঁজে রেখেছেন। রাইজিংবিডি/ঢাকা/২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭/শাহেদ