আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সাগর-সমুদ্র উপকূলের মানুষের মধ্যে জলজ প্রাণী নিয়ে কত কল্পকাহিনি ও রূপকথা রয়েছে, তার অন্ত নেই। মানুষের মতো মুখ, মাছের মতো লেজওয়ালা দানবীয় প্রাণীর গল্প তো মানুষের মুখে মুখে ফেরে। রূপকথায় সাপের মতো মাথাওয়ালা কিন্তু মাছের মতো দেহ ও লেজওয়ালা প্রাণীর কথাও রয়েছে। সত্যিই কি সমুদ্রের বিশাল জলরাশির গভীরে লুকিয়ে আছে রহস্যময় ও অজানা এসব প্রাণী। মানুষের মতো মুখওয়ালা প্রাণীর বিষয়ে আজো কোনো সত্যতা পাওয়া না গেলেও সাপের মতো মুখওয়ালা হাঙর যে সমুদ্রে আছে- এটি নিশ্চিত হয়েছেন বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস, প্রায় ৮ কোটি বছর আগে সেই প্রাগৈতিহাসিক কালে ডাইনোসরদের আমলে সমুদ্রে বসবাস ছিল সাপমুখো হাঙর প্রজাতির। আজো তারা টিকে আছে। গভীর সমুদ্রে বসবাস করায় তাদের দেখা মেলে না। ঊনিশ শতকে একদল নাবিক সাপমুখো হাঙর দেখেছিলেন বলে দাবি করেছিলেন। সম্প্রতি সেই হাঙর দেখা যায় পর্তুগালের উপকূলে। হঠাৎ পানির নিচ থেকে লাফ দিয়ে জলের ওপর উঠে আসে। পৃথিবীতে টিকে থাকা সবচেয়ে প্রাচীন প্রাণীদের মধ্যে সাপমুখো প্রজাতির হাঙর একটি। সাপ ও মাছের বৈশিষ্ট্যপূর্ণ দৈহিক গড়নের এই প্রাণীর দেখা পাওয়া যাওয়ায় ‘মানুষের উৎপত্তির সঙ্গে সমুদ্রপ্রাণের সম্পর্ক’ নতুন করে গবেষণার দাবি রাখে বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা। প্রাগৈতিহাসিক কালের ডাইনোসর ও ট্রাইসেরাটপস বিলুপ্ত হয়েছে বহু আগে কিন্তু সেই সময়ের সাপমুখো হাঙর টিকে আছে আজো। এখনো তারা সমুদ্রের বুকে সাঁতার কাটছে। সেপ্টেম্বর মাসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের একদল বিজ্ঞানী আটলান্টিক সাগরের গভীর পানিতে মাছ ধরার জাল টানছিলেন। তাদের লক্ষ্য ছিল, বাণিজ্যিক মৎস্য আহরণে অপ্রত্যাশিত প্রাণী যেন জেলেদের জালে ধরা না পড়ে, তা নিশ্চিত করতে একটি বিশেষ পদ্ধতি উদ্ভাবন করা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অপ্রত্যাশিতের অপ্রত্যাশিত এক প্রাণী আটকে যায় তাদের জালে- সাপমুখো হাঙর। বিজ্ঞানে এ ধরনের হাঙরকে বলা হয় ফ্রিল্ড শার্ক। ২৫ সারিতে ৩০০টিরও বেশি ধারালো দাঁত আছে ফ্রিল্ড শার্কের। না জানি এমন আরো কত ভয়ংকর প্রাণী ঘুরে বেড়াচ্ছে সমুদ্রে। কেননা, এখনো সমুদ্রজগতের ৯০ ভাগ তথ্য মানুষের জানা নেই। তবে বিজ্ঞানীদের গবেষণায় বিস্ময়কর অনেক নতুন নতুন তথ্য বেরিয়ে আসছে। তথ্যসূত্র : এনডিটিভি অনলাইন
রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৩ নভেম্বর ২০১৭/রাসেল পারভেজ