আন্তর্জাতিক

জেরুজালেম ভাগাভাগি করা আরো কঠিন হলো

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইসরায়েলি আইনপ্রণেতারা মঙ্গলবার একটি বিল অনুমোদন করেছেন, যার ফলে জেরুজালেম অঞ্চল ভাগাভাগি করে নেওয়া আরো কঠিন হলো। ইসরায়েলি গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে আলজাজিরা জানিয়েছে, এ বিল অনুযায়ী, জেরুজালেমের কোনো অংশের নিয়ন্ত্রণ ইসরায়েল ত্যাগ করতে চাইলে তাদের পার্লামেন্ট নেসেটের সদস্যদের দুই-তৃতীয়াংশের সমর্থন লাগবে। নতুন এই বিলের উদ্দেশ্য হলো- ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের কাছে জেরুজালেমের কোনো অংশ যাতে না ছাড়তে হয়, সে বিষয়ে কঠোর নিয়ন্ত্রণ জারি রাখা। ফিলিস্তিনিরা চায়, তাদের ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী হবে পূর্ব জেরুজালেম। কিন্তু এ বিলের ফলে তাদের সেই দাবি পূরণের পথ আরো জটিল হলো। ইসরায়েলের হার্টৎজ পত্রিকা জানিয়েছে, দেশটির ক্ষমতাসীন ডানপন্থি দলের প্রস্তবিত এই বিলের পক্ষে নেসেটের ৬৪ সদস্য এবং বিপক্ষে ৫২ সদস্য ভোট দিয়েছেন। এই বিলে জেরুজালেম পৌরসভার পাশের ফিলিস্তিনি আবাসন থেকে তাদের বিতাড়নের কথা বলা হয়েছে। জেরুজালেমকে পৃথকীকরণে ইসরায়েলের দেয়ালের বিপরীত পাশে ফিলিস্তিনিদের কার্ফ আকাব ও শুয়াফাত শরণার্থীশিবির এই বিলের ক্ষতিগ্রস্ত হবে। জেরুজালেমে বসবাসকারী ফিলিস্তিনিরা স্থায়ী বাসিন্দার মর্যাদা ভোগ করে থাকে কিন্তু তারা ইসরায়েলের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃত নয়। অনেক কারণেই ইসরায়েল তাদের বসবাসের অনুমতি প্রত্যাহার করে নিতে পারে এবং জেরুজালেম ছাড়তে তাদের বাধ্য করতে পারে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এক হিসাবমতে, ১৯৬৭ সালের যুদ্ধের পর থেকে এ পর্যন্ত ১৫ হাজার ফিলিস্তিনের আবাসিক অনুমতি প্রত্যাহার করে নিয়েছে ইসরায়েল। এদিকে, বিল নিয়ে ভোটাভুটির আগে ইসরায়েলি আইনপ্রণেতা এসাউই ফ্রেইজ বলেছেন, ‘নতুন জেরুজালেম আইন একটি জাতিগত আইন, এটি জেরুজালেম থেকে আরব বাসিন্দাদের নির্মূলের আইন।’ তিনি আরো বলেন, ‘জেরুজালেমের মধ্যকার দেয়াল অপসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর এবার ইসরায়েলি সরকার এই শহর থেকে ১ লাখ বাসিন্দাকে বিতাড়িত করতে চাইছে।’ সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ায় এর বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের চলমান বিক্ষোভের মধ্যেই জেরুজালেম ইস্যুতে নতুন বিল পাস করলো ইসরায়েল। এর ফলে বিক্ষোভ আরো ফুঁসে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। রাইজিংবিডি/ঢাকা/২ জানুয়ারি ২০১৭/রাসেল পারভেজ