আন্তর্জাতিক

আরবিতে অনুবাদই কাল হলো কানাডার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বছরের পর বছর সৌদি আরবের মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে কথা বলেছে কানাডা। কিন্তু কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি সৌদি আরব। গত সপ্তাহে কানাডা যখন ইংরেজির পরিবর্তে আরবিতে টুইট করে সৌদি মানবাধিকার পরিস্থিতির সমালোচনা করলো, এরপরই ২৪ ঘন্টার মধ্যে পুরো পরিস্থিতিটাই পাল্টে গেল। ওই টুইটের কারণে সৌদি আরব এতোটাই ক্ষেপেছে যে, কানাডার রাষ্ট্রদূত ডেনিস হরাককে দেশ ত্যাগে সময় দেয় মাত্র ২৪ ঘণ্টা। একই সঙ্গে কানাডায় নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূতকেও প্রত্যাহার করে নেয় রিয়াদ। এছাড়া কানাডার সঙ্গে সকল বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্নেরও ঘোষণা দিয়েছে সৌদি। রিয়াদের এই প্রতিক্রিয়া দেখে রীতিমতো তাজ্জব বনে যেতে হয়েছে অটোয়াকে। গত ২ আগস্ট কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড টুইটারে ইংরেজি ও ফরাসিতে লেখা বার্তায় আটক দুই সৌদি অধিকার কর্মীর মুক্তির দাবি জানিয়েছিলেন। তিনি লিখেছিলেন, ‘সামার বাদাউই, রাফি বাদাউই বোনদের সৌদি আরবের কারাগারে আটকের খবর জানতে পেরে অত্যন্ত আতঙ্কিত বোধ করছি। এই দুর্যোগ সময়ে বাদাউই পরিবারের পাশে আছে কানাডা এবং আমরা রাফি ও সামার বাদাউই উভয়ের মুক্তির জন্য কঠোর আহ্বান জানাতে থাকব।’ এর পরের দিন কানাডার পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় আরেকটি টুইটে আটক দুই অধিকার কর্মীর মুক্তির জন সৌদি আরবের প্রতি আহ্বান জানায়। সৌদি আরব এই দুটি টুইটের কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি। ঝামেলাটা বাঁধে ৫ আগস্ট। ওই দিন রিয়াদে নিযুক্ত কানাডার দূতাবাস ২ আগস্টের টুইটটি আরবিতে অনুবাদ করে তাদের দাপ্তরিক টুইটার পেজে পোস্ট করে। এবার সৌদি আরবের প্রতিক্রিয়া হলো অত্যন্ত দ্রুত। টুইট করার কয়েক ঘন্টার মধ্যে রিয়াদ কানাডার রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠায় এবং তাকে বহিষ্কার করে। একইসঙ্গে কানাডার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্নেরও ঘোষণা দেওয়া হয়। দুটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, দূতাবাসের পোস্ট করা টুইটটিই সৌদি কর্মকর্তাদের মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে ফেলে সবচেয়ে বেশি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র বলেছে, ‘বিষয়টি স্বাভাবিক চ্যানেলের মাধ্যমে বোঝাপড়া করা যেত, কিন্তু  টুইটটি কূটনীতিক নীতি ও নিয়মের লঙ্ঘন ছিল।’ ওয়াশিংটন ভিত্তিক সৌদি আমেরিকান জনসংযোগ সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সালমান আল-আনসারি বলেন, ‘তারা ভেবেছিল হয়তো পিছু হটবে, কিন্তু হঠাৎ করে তারা আরবিতে টুইট করে। নিজের জনগণের কাছে সৌদি সরকারকে অস্বস্তিতে ফেলার জন্য কানাডীয়দের এটা ছিল প্ররোচণামূলক আচরণ। সৌদি এটা সহজভাবে নেয়নি।’

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১১ আগস্ট ২০১৮/শাহেদ