আন্তর্জাতিক

বেতন না পাওয়ায় ঘরের জিনিসপত্র বিক্রি করছেন মার্কিনিরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয়, উলুখাগড়ার প্রাণ যায়-বাংলা এই প্রবাদটি হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন মার্কিন সরকারের কিয়দংশের অচলাবস্থার কবলে পড়া কর্মীরা। মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণ নিয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত কংগ্রেসের দ্বন্দ্বে বেতনহীন কয়েক লাখ কর্মীকে নিত্যপ্রয়োজনী পণ্য কিনতে শিশুর ব্যবহৃত জ্যাকেট থেকে শুরু করে দেয়াল ঘড়িটিও বিক্রি করতে হচ্ছে। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণের জন্য ট্রাম্প মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের জন্য কংগ্রেসের কাছে সীমান্ত নিরাপত্তা বাবদ ৫৭০ কোটি ডলার চেয়েছেন। তবে প্রতিনিধি পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠ ডেমোক্র্যাটরা এই তহবিলের অনুমোদন দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে কেন্দ্রীয় সরকারের বাজেটে অনুমোদন দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। এর ফলে সরকারের একটি অংশে সৃষ্টি হয়েছে অচলাবস্থা। গত মাসে শুরু হওয়া এই অচলাবস্থা শুক্রবার ২৮তম দিনে গড়িয়েছে। এর ফলে কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন কারাগার, বিমানবন্দর, এফবিআই ও নাসাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আট লাখ কর্মচারী বেতনহীন দিন পার করছেন। আন্দ্রেয়া ক্যাভালারোর স্বামী কোস্টগার্ডে চাকরি করেন। সরকারে অচলাবস্থা চলার পরও তাকে প্রতিদিন কাজে যেতে হচ্ছে। কিন্তু প্রায় এক মাস হতে চললেও বেতন না পাওয়ায় কনিষ্ঠ সন্তানের প্রথম জন্মদিনের সময় উপহার দেওয়া বোম্বার জ্যাকেটটি ফেসবুকে পাঁচ ডলারে বিক্রির জন্য পোস্ট দিতে হয়েছে তাকে। শুধু জ্যাকেটই নয়, বাড়িতে থাকা শিশুদের কাপড়চোপড় ও খেলনাগুলোকে পাঁচ থেকে ১০ ডলারের মধ্যে বিক্রি করার পোস্ট দিয়েছেন আন্দ্রেয়া। তিনি বলেছেন, ‘আপনি কখনো ভাবতেও পারেন না, আপনি কাজ করছেন আর আপনাকে বেতনহীন থাকতে হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে না পড়লে এটা কেমন তা আপনি বুঝবেন না।’ উইন্ডি বেটসের স্বামী মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত। নাসার জন্য অর্থ ছাড় না দেওয়ায় বেতনহীন আছেন বেটসের স্বামী। খাদ্যদ্রব্য কিনতে আর ঋণ পরিশোধের জন্য বেটসকে তার বিয়ের সময় কেনা স্মৃতিচিহ্ন টোস্টিং গ্লাস ৬০ ডলারে বিক্রি করতে হয়েছে চোখের পানি বিসর্জন দিয়ে। ক্লিভল্যান্ডের বাসিন্দা বেটসকে এখন ঘরের আসবাবপত্র, কৃত্তিম চারাগাছ, গহণাপত্র সবই একে একে বিক্রি করতে হচ্ছে। মেয়ের বিয়ের জন্য অনলাইনে কয়েকটি বিয়ের পোশাক কিনে রেখেছিলেন লরা স্লেমনস। তবে এগুলো পছন্দ না হওয়ায় ঘরেই তুলে রেখেছিলেন তিনি। জর্জিয়ার হাউজিং অ্যান্ড আরবান ডেভেলপমেন্ট বিভাগে কর্মরত লরার স্বামী বেতন পাচ্ছেন না প্রায় এক মাস। সংসার খরচ জোগাতে সেই বিয়ের পোশাকগুলো ফেসবুকে বিক্রির পোস্ট দিয়েছেন লরা। প্রতিটি পোশাকের জন্য তিনি চেয়েছেন ১০০ ডলার। রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৮ জানুয়ারি ২০১৯/শাহেদ/শাহনেওয়াজ