আন্তর্জাতিক

৯ আত্মঘাতীর নাম প্রকাশ করেছে শ্রীলঙ্কা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :  শ্রীলঙ্কায় ইস্টার সানডেতে ভয়াবহ সিরিজ বোমা হামলার ঘটনায় নয় আত্মঘাতীর নাম প্রকাশ করেছে সে দেশের পুলিশ। বুধবার শ্রীলঙ্কা পুলিশের মুখপাত্র রুয়ান গুনাসেকেরা বুধবার নিশ্চিত করেছেন বলে জানিয়েছে ওয়াশিংটন পোস্ট ও গার্ডিয়ান পত্রিকা। সন্ত্রাসবিরোধী আইনে এসব আত্মঘাতী হামলাকারীর সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হবে বলে জানানো হয়েছে। আত্মঘাতী হামলাকারী নয়জন হচ্ছেন- জাহরান হাশিম, ইলহাম আহমেদ মোহাম্মদ ইব্রাহিম, ইনসাফ আহমেদ, মোহাম্মদ আজম মোবারক মোহাম্মদ, আহমেদ মুয়াজ, মোহাম্মদ হাসথুন, মোহাম্মদ নাসের মোহাম্মদ আসাদ, আবদুল লতিফ ও ফাতিমা ইলহাম। যে, দুটি বিলাসবহুল হোটেলে আত্মঘাতী হামলা চালিয়েছে দুই ভাই, তারা কলম্বোর একটি ধনী পরিবারের সন্তান। ওই পরিবারটি মসলা রফতানি করে থাকে। ওইদিন আট স্থানে হামলার ঘটনা ঘটে। জঙ্গিরা এক একটি স্থানে এক একজন আত্মঘাতীকে পাঠিয়েছিল। তবে ব্যতিক্রম ছিল শাংরি লা হোটেল। সেখানে দু'জনকে পাঠানো হয়েছিল। তারা দুটি বিস্ফোরণ ঘটায়। ওই হোটেলের হামলাকারীদের একজন হলেন জাহরান হাশিম। তিনি স্থানীয় জঙ্গি গোষ্ঠী ন্যাশনাল তাওহীদ জামাতের নেতা বলে জানায় শ্রীলঙ্কার পুলিশ। ওই হামলার জন্য সে দেশের সরকার তাওহীদ জামাতকে দায়ী করে আসছে। যদিও হামলার দুদিন পর এর দায় স্বীকার করেছে জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)। সম্প্রতি শ্রীলঙ্কা সরকার তাওহীদ জামাতসহ দুটি ইসলামিক সংগঠনকে নিষিদ্ধ করেছে ।

 

শাংরি লা হোটেলে ইলহাম আহমেদ মোহাম্মদ ইব্রাহিমের সঙ্গে জোট বেধে হামলা চালায় জাহরান হাশিম। অপরদিকে ইলহামের বড় ভাই ইনসাফ আহমেদ কাছাকাছি সিনামন গ্র্যান্ড হোটেলে হামলা চালায়। হামলার তৃতীয় স্থান ছিল কিংসবুরি হোটেল। সেখানে হামলা চালিয়েছে মোহাম্মদ আজম মোবারক মোহাম্মদ। তার স্ত্রী এখন পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন। সেন্ট অ্যান্থনি গির্জায় হামলা চালিয়েছে স্থানীয় বাসিন্দা আহমেদ মুয়াজ। তার ভাইকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অপরদিকে সেন্ট সেবাস্টিয়ান গির্জায় হামলা চালিয়েছে মোহাম্মদ হাসথুন। তিনি পূর্ব উপকূলের বাসিন্দা। হাশিমও ওই এলাকার বাসিন্দা। পূর্বাঞ্চলীয় বাত্তিকালোয়া জেলার ক্রিশ্চিয়ান জিওন গির্জায় হামলা চালিয়েছে মোহাম্মদ নাসের মোহাম্মদ আসাদ। একটি বিলাসবহুল হোটেলে হামলার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয় আবদুল লতিফ। তবে তিনি তার সঙ্গে থাকা বিস্ফোরকের বিস্ফোরণ ঘটান রাজধানীর কাছে একটি গেস্ট হাউসে। তিনি ব্রিটেন এবং অস্ট্রেলিয়া থেকে পড়াশুনা করে শ্রীলঙ্কায় বসবাস করছিলেন। অপর এক স্থানে হামলা চালান ফাতিমা ইলহাম। তিনি অপর এক আত্মঘাতীর স্ত্রী। তিনি তার সঙ্গে থাকা বিস্ফোরকে বিস্ফোরণ ঘটালে তার দুই সন্তান এবং তিন পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়। প্রসঙ্গত, গত ২১ এপ্রিল ইস্টার সানডে উদযাপনের সময় শ্রীলঙ্কায় দুই দফায় তিন গির্জা ও চারটি বিলাসবহুল হোটেলসহ আট জায়গায় বোমা হামলা হয়। এতে ২৫৭ জন নিহত এবং আরও পাঁচশ’ মানুষ আহত হয়। ওইদিন সকালে প্রথমে হামলার শিকার হয় ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের তিনটি বড় গির্জা সেইন্ট অ্যান্থনি চার্চ, সেইন্ট সেবাস্টিয়ান চার্চ ও জিয়ন চার্চ। ইস্টার সানডের প্রার্থনায় এসব চার্চে সমবেত হয়েছিলেন হাজারো মানুষ। এছাড়া হামলা হয় কলম্বোর পাঁচ তারকা হোটেল শাংরি লা, কিংসবুরি ও সিনামন গ্র্যান্ড জোটেলে। এসব হোটেলে অনেক বিদেশি পর্যটক ছিলেন। পরে বিকেলে আরো দুটি হামলার ঘটনা ঘটে। রাইজিংবিডি/ঢাকা/২ মে ২০১৯/এনএ