আন্তর্জাতিক

আটক কেন্দ্রের নির্মাণ শ্রমিকরাই আটক হতে যাচ্ছেন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের নদী তীরবর্তী এলাকাটিতে সাতটি বড় ফুটবল মাঠের সমান জায়গায় নির্মাণ করা হচ্ছে অবৈধ অভিবাসীদের আটক কেন্দ্র। অন্তত তিন হাজার লোকের ধারণক্ষমতা সম্পন্ন এই আটক কেন্দ্রটিতে স্কুল, হাসপাতাল, বিনোদনকেন্দ্র এবং নিরাপত্তা কর্মীদের আবাসনের ব্যবস্থা থাকছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স আটক কেন্দ্রের নির্মাণ শ্রমিক ও ঠিকাদারদের সঙ্গে কথা বলে এর বিশদ একটি চিত্র পেয়েছে। এই শ্রমিকদেরই কেউ কেউ জানিয়েছেন, গত সপ্তাহে যে বিতর্কিত নাগরিকপঞ্জি আসাম সরকার প্রকাশ করেছে তাতে নাম নেই তাদের। এর মানে হচ্ছে, নিজেদের নির্মাণ করা আটক কেন্দ্রেই বন্দি হতে যাচ্ছেন নির্মাণ শ্রমিকরা।

আটক কেন্দ্রের কাছাকাছি এক গ্রামের বাসিন্দা শেফালি হাজং নামে এক উপজাতি নারী জানান, নাগরিকপঞ্জিতে তার নাম আসে নি। ভারতীয় নাগরিক হিসেবে প্রমাণ করতে যে ২০ লাখ লোককে জন্মসনদ ও জমির মালিকানার কাগজপত্র দাখিল করতে হবে সেই তালিকায় তিনিও রয়েছেন। কাগজপত্র জমা দিতে ব্যর্থ হলে তাদের আশ্রয় হবে এই আটক কেন্দ্রে।

হংজং উপজাতির শেফালি জানান, পরিস্থিতির কারণে তিনি বেশ উদ্বেগে আছেন।

আটক কেন্দ্রের নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কর্মরত শেফলি বলেন, ‘আমার তো পেট ভরার প্রয়োজন।’

শেফালি তার প্রকৃত বয়স কত তা জানেন না। তবে তার ধারণা বয়স হয়তো ২৬ বছর হবে। কেন নাগরিকপঞ্জিতে তার নাম আসেনি তাও জানেন না এই নারী।

নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন শেফালির মা মালতি হাজং। তিনি বলেন, ‘আমাদের জন্ম সনদ নেই।’

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, গোয়ালপারা শহরের কাছে নির্মিতব্য আটক কেন্দ্রটির মতো অন্তত ১০ আটক কেন্দ্র রাজ্যে নির্মাণ করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।

দাতব্য সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আসাম এমন একটি সংকটের প্রান্তে রয়েছে যেটি কেবল বৃহৎ একটি জনগোষ্ঠির নাগরিকত্ব ও স্বাধীনতা হারানোর দিকে নিয়ে যাবে না,বরং তাদের মৌলিক অধিকারকেও মুছে ফেলবে-যার প্রভাব পড়তে যাচ্ছে আগামী প্রজন্মের ওপর।’ রাইজিংবিডি/ঢাকা/৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯/শাহেদ