আন্তর্জাতিক

যে যুক্তিতে মসজিদের জায়গায় মন্দির নির্মাণ করতে দিল আদালত

বহুল আলোচিত অযোধ্যা মামলার রায় শনিবার ভারতের সর্বোচ্চ আদালত দিয়েছে। পাঁচ বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ সর্বসম্মতিতে বিতর্কিত জমিতে রাম মন্দির নির্মাণের পক্ষে রায় দিয়েছে।

আর অযোধ্যারই অন্য কোনো অংশে মসজিদ তৈরির জন্য বিকল্প জমির ব্যবস্থা করতে কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালত এই রায় দেওয়ার পেছনে বেশ কয়েকটি ব্যাখা দিয়েছে।

এসব ব্যাখ্যার সারাংশে দেখা যায়-

আদালত বলেছে খালি জমিতে বাবরি মসজিদ তৈরি করা হয়নি । আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার (এএসআই) তথ্যানুযায়ী, মসজিদের নিচে আরো প্রাচীন স্থাপনার কাঠামো ছিল। তবে স্থাপনাটি ঠিক কী ছিল, তা এএসআই সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারেনি। যেহেতু বিশ্বাসের উপর দাঁড়িয়ে জমির মালিকানা ঠিক করা সম্ভব নয়, তাই আইনের ভিত্তিতেই জমির মালিকানা ঠিক করা উচিৎ।

রায়ে রামদেবকে একজন দাবিদার হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।

হিন্দু সাক্ষীদের বয়ান অনুযায়ী, মসজিদের ভিতরে কসৌটি পাথরের স্তম্ভে হিন্দুরা পূজা করতেন। ‘মুসলিম সাক্ষীরা স্বীকার করেছেন, মসজিদের ভিতরে এবং বাইরে হিন্দু ধর্মের প্রতীক বর্তমান ছিল’ বলেছে আদালত।

মসজিদের তিন গম্বুজের সৌধে প্রবেশপথ নিয়ে শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ। আদালত বলেছে,‘পূর্ব ও উত্তর দিকের দুটি দরজার সম্ভাব্য একমাত্র কারণ এই যে বাইরের চবুতরা হিন্দু ভক্তদের দখলে ছিল।’ এর ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, ‘সম্ভাব্যতার ভারসাম্য বিচার করলে প্রমাণাদি থেকে স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলছে যে হিন্দুরা বাইরের চবুতরায় ১৮৫৭ সালে ইট ও জাফরির দেয়াল তৈরি করা সত্ত্বেও নিরবচ্ছিন্ন ভাবে পূজা চালিয়ে গিয়েছেন। সমস্ত ঘটনাপ্রবাহ মিলিয়ে দেখলে বাইরের চবুতরায় তাদের দখল স্পষ্ট প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে।’

ভেতরের অংশ নিয়ে শীর্ষ আদালত বলেছে, ‘১৮৫৭ সালে ব্রিটিশরা অযোধ্যা দখলের আগে পর্যন্ত হিন্দুরা যে সেখানে পূজা করত এ সম্ভাবনাই বেশি।’

মামলায় মুসলিম পক্ষ ভোগসত্ত্ব প্রমাণ করতে পারেনি দাবি করে আদালত বলেছে, ‘ষোড়শ শতাব্দীতে নির্মাণের সময়কাল থেকে ১৮৫৭ সালের আগ পর্যন্ত একমাত্র তারাই যে ভেতরের অংশের কর্তৃত্ব ভোগ করত, সে কথা প্রমাণ করতে পারেনি মুসলিম পক্ষ।’ ঢাকা/শাহেদ