আন্তর্জাতিক

সন্ত্রাস ছেড়ে কবি

তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের কবি উপন্যাসের নিতাই চরিত্রকে বাস্তবে ছাড়িয়ে গেছেন সিয়েরা লিয়নের বাসিন্দা ইউসুফ কামারা। নিচু জাতের নিতাই গ্রামের সবাইকে চমকে দিয়ে কবি হয়েছিল। আর ইউসুফ কামারা তার দেশের রাজধানী ফ্রি টাউনের মানুষদের চমকে দিয়ে সন্ত্রাসী গ্যাংয়ের নেতা থেকে কবি হয়েছেন।

ফ্রিটাউনের এক্সোডাস লেনে কিশোর বয়সে কয়েক ডজন সমবয়সীকে নিয়ে জিভারদাম গাজা নামের একটি গ্যাং তৈরি করেছিলেন কামারা।

ছয় ফুট লম্বা কামারা বলেন, আপনি যদি কোনো ঠগকে চান...কাউকে পেটাতে, তাহলে স্রেফ এক্সোডাস লেনে গিয়ে জিভারদামের ছেলেদের খুঁজলেই চলবে।’

রাস্তার জীবনে বিতৃষ্ণ হয়ে এখান থেকে বের হওয়ার পথ খুঁজছিলেন কামারা। সেই পথও মিলে গেল।  ২০০৮ সালে এক ইংরেজ সিনেমা নির্মাতা অবহেলিত তরুণদের শিল্পের পথে নিয়ে আসতে একটি মিডিয়া স্টুডিও প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। কামারার বেশ কয়েক জন বন্ধু সেখানে কবিতার কোর্সে ভর্তি হয়েছিল। তিন বছর আগে বন্ধুদের কবিতা দেখার নিজেই কবিতা লেখার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। শেষ পর্যন্ত জনপ্রিয় হতে শুরু করে তার কবিতা।

কবিতায় সন্ত্রাসী জীবনের বর্ণনা দিতে যেয়ে কামারা লেখেন, ‘ভয়ংকর বনের অভিযাত্রীর মতো/পুরোটা পথে নিঃসঙ্গ যাত্রা/ব্লেডের কিনারা চেয়েও তীক্ষ্ন ধার/ আমার রূক্ষ পথ আজ ভগ্ন অঞ্চল।’

কামারার বেশ কয়েকটি কবিতা আন্তর্জাতিক সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। গত বছর তিনি কেনিয়া অনুষ্ঠিত আফ্রিকান লেখক সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন।

কবির পথে যাত্রা করে কামারা ফ্রিটাউনের তরুণদের কাছে নিজেকে উদহারণ হিসেবে উপস্থাপন করতে চান। তার মতে কবিতা তরুণদের নিজের কাছে নিজেকে সৎ হিসেবে প্রতিষ্ঠার শক্তিশালী অস্ত্র।

তিনি বলেন, ‘কবিতা লেখার সময় যদি আপনি যা দেখেছেন, অনুভব করেছেন, শুনেছেন সে ব্যাপারে যত্নবান হন, তাহলে আপনাকে কখনোই কোনো গল্প ফাঁদতে হবে না।’ ঢাকা/শাহেদ