আন্তর্জাতিক

লকডাউনে মানুষ থেকে পশু-পাখি, সবার খাবার দিচ্ছে পুলিশ

পশ্চিমবঙ্গে রাজধানী কলকাতায় সৌন্দর্যায়নের জন্য রাস্তার পাশে খাঁচায় পাখি পোষা হয়েছিল। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে রাজ্যে এই লকডাউনের সময়ে সেই পাখিদের খাবার পৌঁছে দেবে কে?

বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন জানবাজার পরিদর্শনে গিয়েছিলেন, তখন তাকে সেই পাখিদের একটা বন্দোবস্ত করার আর্জি জানান এক বাসিন্দা। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রাতেই পুলিশ ও চিড়িয়াখানাকর্মীরা খাঁচা বন্দি কয়েকশ পাখি উদ্ধার করে নিয়ে যান আলিপুর চিড়িয়াখানায়। পাখিদের মতো শহরের বিভিন্ন প্রান্তে পথ কুকুররাও যাতে অনাহারে না থাকে তার জন্যও একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে খাবার পৌঁছাতে উদ্যোগী হয়েছে পুলিশ। পাশাপাশি চলছে দুঃস্থ মানুষদের খাওয়ানোর কাজও। প্রতিটি থানার কর্মকর্তারাই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে মিলেমিশে দু’বেলা খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন সহায়-সম্বলহীন মানুষদের কাছে। খবর আনন্দবাজার।

এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘বিশেষ করে অফিস পাড়ায় যেখানে বাড়ি নেই, সেখানে এই পশুদের খুব খারাপ অবস্থা। কারণ সব খাবার-দোকান-অফিস বন্ধ। ফলে কোথাও থেকে খাবার পাচ্ছে না ওই পশুরা।’

একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে এই পশুদের খাবার দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান কলকাতা পুলিশের এক শীর্ষ কর্মকর্তা। ওই কর্মকর্তাকেও দেখা যায় পোষ্যদের খাওয়াতে।

এর পাশাপাশি প্রশাসনের নির্দেশে কলকাতার প্রতিটি থানা নিজেদের এলাকায় সম্বলহীন মানুষদের দু’বেলা খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেছে। মূলত, যারা দিন এনে দিন খাওয়া মানুষ, যাদের লকডাউনের ফলে রোজগার বন্ধ এবং যারা ভবঘুরে— তাদের সবাইকে খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন পুলি‌শ কর্মীরা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই উল্টোডাঙা, বেলেঘাটা, মানিকতলা-সহ শহরের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশকর্মীরা স্থানীয় ব্যবসায়ী বা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সহযোগিতায় দুঃস্থ মানুষদের খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন।

ডিসি (পূর্ব শহরতলি) অজয় প্রসাদ বলেন, ‘এলাকার বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা যারা একা থাকেন, তাদেরও খোঁজ নিচ্ছে পুলিশ। তাদের কোনো জিনিস প্রয়োজন হলে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করছি আমরা।’

শহরজুড়ে চোর-ডাকাত ধরে যাদের প্রতিটা মুহূর্ত কাটত এতোদিন, তারাই এখন অন্য ভূমিকায়।

এক পুলিশ কর্মী বলেন, ‘চাকরির শুরু থেকে এ রকম অভিজ্ঞতা কখনও হয়নি। যখন সবাই ঘরবন্দি তখন, এই অভিজ্ঞতা একদম নতুন।’ ঢাকা/শাহেদ