আন্তর্জাতিক

জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করল জাপান

জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবে সোমবার টোকিও এবং আরো বাকি চারটি অঞ্চলের জরুরি অবস্থা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়ার মাধ্যমে সারাদেশের বিধিনিষেধের সমাপ্তি ঘোষণা করেছেন। দেশটিতে করোনা পরিস্থিতির অব্যাহত অগ্রগতি হওয়ায় এর আগে ৪২টি জেলা থেকে জরুরি অবস্থা তুলে নেওয়া হয়েছিল। বাকি ছিল রাজধানী টোকিও সহ এর পার্শ্ববর্তী কানাগাবা চিবা, সাইতামা এবং উত্তরের হোক্কাইদো।

আর এবার এই এলাকাগুলোতেও জরুরি অবস্থা তুলে নেওয়ার শর্তাবলি পূরণ হওয়ায়, সরকারি বিশেষজ্ঞরা জরুরি অবস্থা প্রত্যাহারের অনুমোদন দেন। এর মাধ্যমে দেশটি থেকে সম্পূর্ণভাবে জরুরি অবস্থা তুলে নেওয়া হলো। সোমবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবে।

ভাষণে তিনি বলেন, জরুরি অবস্থা প্রত্যাহারের মানে প্রাদুর্ভাবের সমাপ্তি নয়। আমাদের লক্ষ্য হলো, প্রতিরোধ ব্যবস্থার ভারসাম্য বজায় রাখা এবং ভ্যাকসিন এবং কার্যকর ওষুধ না পাওয়া পর্যন্ত অর্থনীতিকে সচল রাখা।

করোনাভাইরাসে জাপানে ১৬হাজার ৬০০ জন আক্রান্ত এবং প্রায় ৮৫০ জন মৃত্যৃবরণ করেছেন। ইয়োকোহামা বন্দরে নোঙর করা ডায়মন্ড প্রিন্সেস বিলাসবহুল জাহাজে করোনা আক্রান্তদের পদক্ষেপ নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছিল জাপান। তবে শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপের মতো করোনার প্রাদুর্ভাব দেশটিতে দেখা দেয়নি।

কিন্তু বিশ্বের তৃতীয় বড় অর্থনীতির দেশটি জরুরি অবস্থা জারির কারণে অর্থনীতির মন্দার মধ্যে পড়ে এবং সরকারের প্রতি জনগণের অসন্তুষ্টি বেড়ে যায়। সাম্প্রতিক মিডিয়া জরিপগুলোতে দেখা যায়, তাঁর মন্ত্রিসভার জনসমর্থন ৩০ শতাংশের নিচে নেমে গেছে, যা ২০১২ সালে অ্যাবে প্রধানমন্ত্রীর পদে ফিরে আসার পর সর্বনিম্ন।

প্রধানমন্ত্রী অ্যাবে এপ্রিলের ৭ তারিখে টোকিও সহ জাপানের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে করোনা ঠেকাতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিলেন এবং মাসের শেষের দিকে তা দেশব্যাপী জারি করেন। এরপর জরুরি অবস্থা মে মাসের শেষ অবধি বাড়ানো হয়।

জরুরি অবস্থায় লোকজনকে বাড়িতে থাকতে বলা হয় এবং অপ্রয়োজনীয় ব্যবসায়িক কার্যক্রম বন্ধ বা কমিয়ে আনার জন্য অনুরোধ করা হয়, তবে কোনো চাপ প্রয়োগ করা হয়নি। করোনা নিয়ন্ত্রণে সফল হওয়ায় ১৪ মে থেকে জাপানের বেশিরভাগ অঞ্চল থেকে জরুরি অবস্থা তুলে নেওয়া হয় এবং লোকজন আবার ব্যবসা-বাণিজ্য শুরু করেছেন।

 

ঢাকা/ফিরোজ