আন্তর্জাতিক

ভুতের সঙ্গে লড়ছে বিশ্ব

করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সাফল্য নিয়ে কেউ আর এখন তালি বাজাচ্ছেন না। ছয় মাস পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাসকে জরুরি হুমকি বলে বিবেচনা করেছে। একের পর এক দেশ লকডাউন ঘোষণা করেছে। সংকট মোকাবিলা করতে যেয়ে অর্থনীতি বিপর্যস্ত হয়েছে, ভেঙ্গে পড়েছে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, সংকট দেখা দিয়েছে খাদ্য সরবরাহে। তবে ভাইরাসের কিছুই হয়নি। বরং আরও দ্রুত গতিতে সংক্রমণ ঘটাচ্ছে এটি।

নোভেল করোনাভাইরাস শনাক্তের পর ২০০ দিন পেরিয়ে গেছে। জনস্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ এখন বলছেন, সংক্রমণের হার বেড়ে চলছে এবং সর্বোচ্চ সংক্রমণ এখনও বহুদূরে। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে বিশ্বকে একটি ধোঁয়াচ্ছন্ন অবস্থায় দাঁড়াতে হয়েছে : মহামারির পেছনের দিনগুলোর ধাক্কা এবং এটি অবসানের সুষ্পষ্ট চিত্রের অভাব। যে পরিস্থিতি এখন বিশ্বকে মোকাবিলা করতে হচ্ছে সেটি হলো-একটি আপষ আলোচনা, যেখানে ভাইরাসের একের পর এক রহস্যময় চরিত্র প্রকাশ হচ্ছে এবং আয়, শিশু শিক্ষা ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়গুলো চাপ প্রয়োগ করছে রাষ্ট্রের ওপর। করোনার টিকা আবিষ্কার এবং ব্যাপক হারে এর বিতরণ না হওয়া পর্যন্ত এই পরিস্থিতি চলতে থাকবে কিংবা ইমিউনিটির টিকে থাকা এবং মানবজাতিকে বিশাল মূল্য পরিশোধ করতে হবে।

ওয়াশিংটন ডিসির গ্লোবাল হেলথ সায়েন্স অ্যান্ড সিকিউরিটির সহযোগী অধ্যাপক আলেক্সান্দ্রা ফিলান বলেন, ‘মহামারির প্রথম থেকেই আমরা বলে আসছি এটি ম্যারাথন, স্প্রিন্ট নয়। এখন প্রমাণ মিলছে এটা হচ্ছে আল্ট্রা ম্যারাথনের চেয়েও বেশি। এটা অবিশ্বাস্যরকম দীর্ঘ প্রচেষ্টা হতে যাচ্ছে ।’

মার্চে মানবজাতির অর্ধেক কোনো না কোনোভাবে লকডাউনের মধ্যে কাটিয়েছে। কয়েক মাস পর বিশ্বকে ভঙ্গুর অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। মহামারির মধ্যে বসবাস স্বাভাবিক হয়ে গেছে-তবে সেই স্বাভাবিকতাটি নাটকীয়ভাবেই পরিবর্তনশীল।  

বিশ্বে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা এক কোটি ৮৫ লাখ ছাড়িয়েছে। ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৬ লাখ ৯৯ হাজার মানুষ। যুক্তরাষ্ট্রের পর সংক্রমণের মাত্রা সবচেয়ে বেশি ব্রাজিল ও ভারতে। এই মুর্হর্তে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যে ফ্লোরিডার পর দেশের যে কোনো রাজ্যের তুলনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। আগামী কয়েক মাস পর এই রাজ্যে বিশ্বের যে কোনো দেশের তুলনায় প্রতি হাজারে মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি হতে যাচ্ছে।

অ্যারিজোনার শিক্ষক রবিন নিলি বলেন, ‘আমাদের টেস্ট করার মতো পর্যাপ্ত স্থান নেই এবং কন্টাক্ট ট্রেসিংয়ের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। তাই আমরা এখনও ছায়ার সঙ্গে বক্সিং খেলছি, আমরা এখনও ভুতের সঙ্গে লড়াই করছি। আমরা জানি না এই জিনিসটি কোথায় এখন।’