আন্তর্জাতিক

করোনাভাইরাস চীনের ল্যাবে তৈরি, দাবি চীনা ভাইরোলজিস্টের

করোনাভাইরাস উহানে সরকার নিয়ন্ত্রিত ল্যাবে তৈরি হয়েছে বলে দাবি করেছেন চীনা ভাইরোলজিস্ট ড. লি মেং ইয়ান। তার দাবির স্বপক্ষে বৈজ্ঞাণিক প্রমাণও রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন তিনি।

করোনাভাইরাস মহামারির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে চীনা সরকারের বিরুদ্ধে ‘হুইসেলব্লোয়ার’ ছিলেন মেং। গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের মূল ভূখণ্ড থেকে সার্সের মতো ভাইরাসের সংক্রমণ হচ্ছে এমন খবরে তদন্তে নেমেছিলেন তিনি। হংকংয়ের কর্মরত এই শীর্ষ বিজ্ঞানী দাবি করেন, ওই তদন্তের সময় একটি গোপন অভিযানের খবর পান মেং। তিনি বলেছেন, জনসম্মুখে ঘোষণা করার আগেই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার খবর জানতো চীনা সরকার।

হংকং স্কুল অব পাবলিক হেলথের ভাইরোলজি অ্যান্ড ইমিউনলোজির এই বিশেষজ্ঞ সুরক্ষাজনিত কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। ১১ সেপ্টেম্বর একটি গোপন স্থান থেকে ব্রিটিশ টক শো ‘লুজ উইমেন’ এ সাক্ষাৎকার দেন মেং। সেখানেই করোনাভাইরাস নিয়ে তার গবেষণা ও মুখোমুখি হওয়া চ্যালেঞ্জগুলোর কথা তুলে ধরেন।

ডিসেম্বর এবং জানুয়ারিতে চীনে ‘নতুন নিউমোনিয়া’ নিয়ে দুটি গবেষণা করেন মেং। সেই গবেষণার ফল তার সুপারভাইজারকে দিয়েছিলেন, যিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) একজন পরামর্শদাতা। মেং প্রত্যাশা করেছিলেন, তার সুপারভাইজার ‘চীনা সরকার ও ডব্লিউএইচওর পক্ষ থেকে সঠিক কাজ করবেন।’ কিন্তু তাকে অবাক করে দিয়ে বলা হয়েছিল, ‘হয় চুপ থাকো নয়তো তাকে গায়েব করে ফেলা হবে।’ চীনে এমনটা স্বাভাবিক বলে জানালেন এই ভাইরোলজিস্ট।

মেং আরও বলেছেন, ‘কারও কাছ থেকে জবাব মেলেনি। এখানে লোকজন সরকারকে ভয় পায় এবং সরকার ও ডব্লিউএইচওর সঙ্গে মিলে সুবিধা পাওয়ার অপেক্ষা করে যেন নিরাপদে থাকা যায়। কিন্তু এটা ছিল জরুরি কিছু।’

চীনা নববর্ষের সময় এই ভাইরাস চীন থেকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। মেং চুপ করে থাকার পক্ষে ছিলেন না কারণ ‘এটা ছিল খুবই বিপজ্জনক ও সংক্রামক ভাইরাস, মানুষ ও বৈশ্বিক স্বাস্থ্যের জন্য।’ চারদিক থেকে হুমকি ধামকির মধ্যে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন তিনি, ‘কিন্তু আমি যদি বিশ্বকে সত্যিটা না জানাই আমাকে সারাজীবন অনুশোচনা করতে হবে।’

মেং জানান, শীর্ষ বিজ্ঞানীদের একটি গ্রুপের সঙ্গে হংকং ছাড়ার আগ পর্যন্ত জানুয়ারি থেকে তিনি একটি বৈজ্ঞানিক প্রতিবেদন নিয়ে কাজ করেছেন। খুব শিগগিরই তা প্রকাশ করা হবে। এই ভাইরোলজিস্ট বলেছেন, ‘আমরা এটা প্রকাশ করতে যাচ্ছি। দুটি রিপোর্ট আছে, কয়েকদিনের মধ্যে প্রথমটি আসবে এবং এটিই বৈজ্ঞানিক প্রমাণ সম্পর্কে সবাইকে জানিয়ে দেবে।’