আন্তর্জাতিক

করোনার ‘অভাবনীয় সাফল্য’ পাওয়া টিকার পেছনে মুসলিম দম্পতি

এই মুহূর্তে বিশ্বে ৯০ শতাংশ কার্যকর দাবি করা যুক্তরাষ্ট্রের ফাইজার ও জার্মান সংস্থা বায়োএনটেকের যৌথ উন্নয়ন করা করোনার টিকা উদ্ভাবনের নেপথ্যে কাজ করেছেন দুই তুর্কি মুসলিম চিকিৎসা বিজ্ঞানী। এরা হলেন, উগুর শাহিন ও ওজলেম তুরেসি দম্পতি।

জার্মানির বায়োএনটেকের সহপ্রতিষ্ঠাতা উগুর ও ওজলেম। ২০০৮ সালে অস্ট্রিয়ার ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ক্রিস্টোফ হুবেরের সঙ্গে বায়োএনটেক  প্রতিষ্ঠা করেন তারা।

উগুর শাহিন ও ওজলেম তুরেসি অভিবাসী পরিবারের সন্তান। উগুরের জন্ম সিরিয়া সীমান্তবর্তী ইসকেনদেরানে। চার বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে তুরস্ক থেকে জার্মানিতে পাড়ি জমান তিনি। কোলোনের একটি গাড়ি কারখানায় সাধারণ কর্মী ছিলেন শাহিনের বাবা। 

ওজলেমও চার বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে জার্মানিতে পাড়ি জমিয়েছিলেন। ইস্তাম্বুলের মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে ওজলেমের বাবা ছিলেন শল্যচিকিৎসক। 

ক্যানসারের চিকিৎসায় একটি ওষুধ তৈরি প্রকল্পে কাজ করতে গিয়ে হামবুর্গের সারল্যান্ড ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে উগুর ও ওজলেমের প্রথম সাক্ষাত হয়। ২০০১ সালে গ্যানিমেড ফার্মাসিউটিক্যালস নামে একটি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে প্রতিষ্ঠা করেন তারা। ‘মোনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি’নয়া  ওষুধ তৈরি করতো প্রতিষ্ঠানটি, যেটি ক্যানসার কোষকে চিহ্নিত করতে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতাকেই কাজে লাগায়।

২০০২ সালে বিয়ে করেন উগুর ও ওজলেম। মজার ব্যাপার হচ্ছে, বিয়ের কাগজপত্রে স্বাক্ষর করে ওই দিনই তারা গবেষণাগারে ঢুকে পড়েছিলেন। সারা দিন তাদের সেখানেই কেটেছিল।

চলতি বছর করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হলে উগুর ও ওজলেম দম্পতি এমআরএনএ পদ্ধতির সাহায্যে ভাইরাস প্রতিরোধ গবেষণা শুরু করেন। গবেষণায় অগ্রগতি হলে বাণিজ্যিক সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে আসে যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ফাইজ়ার। সোমবার ফাইজার জানিয়েছে, তারা ট্রায়ালে টিকার ‘অভাবনীয় সাফল্য’ পেয়েছে। টিকার সম্ভাবনার কারণে গত সেপ্টেম্বরে প্রায় ২০০ কোটি ইউরো বেড়ে যায় বায়োএনটেকের বাজারদর। সেই সুবাদে সবচেয়ে বিত্তশালী ১০০ জার্মানের তালিকায় উঠে এসেছে উগুরের নাম। সত্যিকারার্থেই যদি করোনা মোকাবিলায় বায়োএনটেকের টিকা সফলতা পায় তাহলে হয়তো নোবেলও পেয়ে যাতে পারেন তুর্কি উগুর-ওজলেম দম্পতি।