আন্তর্জাতিক

অং সান সু চি আটক

মিয়ানমারের ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি (এনএলডি) দলের নেত্রী অং সান সু চি আটক হয়েছেন। দেশটির সামরিক বাহিনী সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) ভোর রাতে তার বাসায় রেইড দিয়ে তাকে আটক করে নিয়ে যায়। শুধু সু চি নন, আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে দেশটির প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টকেও। রয়টার্সকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এনএলডি’র মুখপাত্র মিয়ো নিউন্ট। ধারণা করা হচ্ছে দেশটিতে আবারো অভ্যুত্থানের ঘটনা ঘটেছে। খবর বিবিসি, ব্রিসবেন টাইমস ও স্কাই নিউজের।

মিয়ো নিউন্ট এই ঘটনার পর দেশের জনগণকে রাজপথে নেমে এসে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখাতে নিষেধ করেছেন। তিনি আইন অনুযায়ী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

মূলত গেল বছরের নভেম্বরের ৮ তারিখ অনুষ্ঠিত হওয়া নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া সু চি’র দলের আজ সোমবার সংসদ আহ্বান করার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই সু চিকে আটক করা হলো। তবে কিছু সংবাদ মাধ্যম বলছে যে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

মূলত ৮ নভেম্বরের নির্বাচন নিয়ে বেসরকারি সরকার এনএলডি ও শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। নির্বাচনে সু চি’র দল ৩৬৪টি আসন পেয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলেও সেনাবাহিনী সমর্থিত দল ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি) প্রতারণা ও ভোট কারচুপির অভিযোগ করে আসছে শুরু থেকেই। বিষয়টি নিয়ে সেনাবাহিনী ও এনএলডি’র মধ্যে বেশ উত্তেজনা বিরাজ করছিল। সেটার জের ধরেই সোমবার ভোর রাতে সু চি ও উইন মিন্টকে আটক করে নিয়ে যায় সেনাবাহিনী।

১৯৬২ সালের এক অভ্যুত্থানের পর দেশটি টানা ৪৯ বছর সামরিক বাহিনীর হাতে শাসিত হয়েছে। ২০১৫ সালে ঐতিহাসিক এক নির্বাচনে সু চি’র দল ৭৭ শতাংশ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়ে প্রায় পাঁচ দশকের সামরিক শাসনের অবসান ঘটায়। এরপর ২০২০ সালের নভেম্বরের নির্বাচনেও বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি। কিন্তু গণতন্ত্রের পথে হাঁটতে শুরু করা মিয়ানমারের ওপর আবারো কি সামরিক শাসনের খড়গ নেমে আসতে যাচ্ছে?

উল্লেখ্য, মিয়ানমারে অং সান সু চি’র দল এনএলডি ব্যাপক জনপ্রিয় হলেও সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিম গণহত্যার ক্ষেত্রে তার নীরব সমর্থনের কারণে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সু চি ও তার দলের ভাবমূর্তির ব্যাপক অবনতি হয়েছে। রোহিঙ্গা গণহত্যার ঘটনায় ২০১৯ সালে তাকে আন্তর্জাতিক আদালতেও (আইসিজে) হাজির হতে হয়েছিল।