আন্তর্জাতিক

মিয়ানমারে সেনাদের প্রাণরস নিঃশেষ করতে সড়কে নারীর লুঙ্গি

মিয়ানমারে অভ্যুত্থান বিরোধী আন্দোলনকারীরা সড়কে সেনাদের টহল বা যাতায়াত ঠেকাতে নতুন পন্থা বেছে নিয়েছে। সড়কজুড়ে বাঁশ ও রশি টানিয়ে তাতে নারীদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক লুঙ্গি ঝুলিয়ে দিয়েছেন তারা।

গত ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। গৃহবন্দি করা হয় ক্ষমতাসীন দলের নেতা অং সান সু চি ও প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টকে।  এর এক সপ্তাহ পরই দেশটিতে অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভ হয়। প্রথম দিকে সেনাবাহিনী সহিংস আচরণ না করলেও গত মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে বিক্ষোভকারীদের ওপর নিপীড়ন চালানো শুরু হয়। নিরাপত্তা বাহিনী বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে টিয়ার গ্যাস, স্টান গ্রেনেড, রাবার বুলেট এমনকি তাজা গুলি ছুড়ছে। রাজপথে সেনাদের ঠেকাতে প্রতিদিনই নতুন নতুন কৌশল বের করছে আন্দোলনকারীরা।

সম্প্রতি মিয়ানমারের বেশ কয়েকটি সড়কে নারীদের অন্তর্বাস ও লুঙ্গি ঝুলিয়ে রাখতে দেখা গেছে। দেশটির প্রাচীন বিশ্বাস, নারীদের এসব পোশাকের নিচ দিয়ে গেলে পুরুষদের প্রাণরস নিঃশেষ হয়ে যায়। স্থানীয়ভাবে পুরুষদের এই ক্ষমতাকে ‘হপনি’ বলা হয়।

বার্তা সংস্থা এএফপিকে অধিকারকর্মী থিনজার শুনলি ওয়াই বলেন, ‘নারীদের লুঙ্গির নিচ দিয়ে যাওয়ার অর্থ হচ্ছে, তাদের হপনি নিঃশেষ হয়ে যাবে।’

তিনি জানান, কিছু সেনা নারীদের লুঙ্গি স্পর্শ করতেও নারাজ। কারণ তাদের আশঙ্কা এর ফলে হয়তো তাদের সম্মুখ সারিতে থাকার সুযোগ নষ্ট হয়ে যাবে। 

থিনজার বলেন, ‘এলাকাগুলোতে যখন রশির ওপর লুঙ্গি টানিয়ে রাখা হয়, তখন তারা ( পুলিশ ও সেনা সদস্য) রাস্তায় যেতে পারে না, তারা এর নিচ দিয়ে যেতে পারে না। তাই তাদেরকে এগুলো নামাতে হয়।’

ইয়াঙ্গুনের সান চাউং শহরতলির সড়কে লুঙ্গি ঝুলিয়ে রাখার কয়েকটি ছবি ফেসবুকে পোস্ট করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে সেনারা ট্রাকের ওপর দাঁড়িয়ে লুঙ্গি সরাচ্ছে। কিছু কিছু লুঙ্গিতে জান্তা প্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইংয়ের চেহারা আঁকা হয়েছে। নারীদের লুঙ্গিতে পুরুষের ছবি আঁকা হলে তার প্রাণরস নিঃশেষ হয়ে যাবে বলে প্রচলিত কুসংস্কার থেকেই এই কাজটি করা হয়েছে।