আন্তর্জাতিক

উইঘুর শিশুদের কেড়ে নিয়ে এতিমখানায় পাঠাচ্ছে চীন

শিনজিয়াংয়ে উইঘুর মুসলিম পরিবারগুলোর কাছ থেকে তাদের সন্তানদের বিচ্ছিন্ন করে ফেলছে চীনা কর্তৃপক্ষ। এসব শিশুদের সরকারি এতিমখানায় পাঠানো হচ্ছে। আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

অ্যামনেস্টি তাদের এই প্রতিবেদনের জন্য ওই শিশুদের পিতা-মাতার সঙ্গে কথা বলেছে। এই অভিভাবকদের পাঁচ বছর আগে দেশত্যাগে বাধ্য করেছিল চীন।

পুলিশের হয়রানি এবং পাসপোর্ট সমর্পনের জন্য চাপ দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে মিহরিবান কাদের ও আবলিকিম মেমতিনিন ২০১৬ সালে শিনজিয়াং থেকে ইতালি পালিয়ে যান। তারা চার শিশু সন্তানকে তাদের দাদা-দাদীর কাছে রেখে গিয়েছিলেন। পরে ওই শিশুদের দাদীকে বন্দিশিবিরে এবং দাদাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ তুলে নিয়ে যায়।

অ্যামনেস্টিকে মিহরিবান বলেন, ‘আমাদের অভিভাবকের সঙ্গে যা ঘটেছে তারপর অন্য স্বজনরা আমাদের শিশুদের দেখভালের সাহস পায়নি। তাদের ভয় ছিল, হয়তো তাদেরকেও আটককেন্দ্রে পাঠানো হবে।’

২০১৯ সালের নভেম্বরে মিহরিবান ও আবলিকিম ইতালিতে তাদের সন্তানদের আনার অনুমতি পান। কিন্তু এর আগেই তাদের সন্তানদের পুলিশ আটক করে সরকারি এতিমখানায় পাঠিয়ে দিয়েছে। 

প্রায় একই গল্প ওমের ও মেরিম ফারুহর। ২০১৬ সালে তারা তুরস্কে পালিয়ে গিয়েছিলেন। শিনজিয়াংয়ে দাদা-দাদীর কাছে রয়ে গিয়েছিল তাদের পাঁচ ও ছয় বছরের দুই সন্তান। পরে ওমের ও মেরিম জানতে পারেন, সন্তানদের দাদা-দাদীকে বন্দিশিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আর তাদের সন্তানদের কোনো খোঁজ আজও তারা পাননি।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের চীনা গবেষক আলকান আকাদ বলেন, ‘শিনজিয়াংয়ে চীনের নির্মম বন্দি অভিযানটি বিচ্ছিন্ন পরিবারগুলোকে একটি অসম্ভব পরিস্থিতিতে ফেলেছে : শিশুদের দেশ ছাড়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না, কিন্তু তাদের যত্ন নেওয়ার জন্য বাবা-মা দেশে ফেরার চেষ্টা করলেই নিপীড়ন ও আটকের হুমকির মুখে রয়েছেন।’