আন্তর্জাতিক

গ্রেপ্তার আতঙ্কে আত্মগোপনে যাচ্ছেন মিয়ানমারের করোনা চিকিৎসকরা

সামরিক অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভকে সমর্থন করায় করোনা মহামারির মধ্যেই চিকিৎসকদের ধরপাকড় করছে মিয়ানমারের জান্তা সরকার। যেসব চিকিৎসক কর্মবিরতি পালন করে স্বাধীনভাবে করোনা রোগীদের চিকিৎসা করছেন তাদেরকেই গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। আর এই গ্রেপ্তার আতঙ্কে অনেক চিকিৎসকই আত্মগোপনে চলে যাচ্ছেন। বৃহস্পতিবার সিএনএনসহ বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছে।

গত ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। এরপর থেকেই দেশটিতে সেনাবিরোধী তীব্র বিক্ষোভ শুরু হয়। আন্দোলনের অংশ হিসেবে সরকারি কর্মচারীরা কর্মবিরতি ঘোষণা করে। আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে চিকিৎসকরাও কর্মবিরতি শুরু করেন। এরপর থেকেই চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি অভিযান শুরু করে জান্তা সরকার।

মিয়ানমারে প্রতিদিনই করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। বৃহস্পতিবার দেশটিতে ছয় হাজার মানুষের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর আগের দিন করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ২৮৬। চিকিৎসাকর্মী ও অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার প্রতিষ্ঠানগুলো জানিয়েছে, বাস্তবে করোনার মৃতের সংখ্যা এর চেয়ে অনেক বেশি।

চিকিৎসক ও সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, যেসব স্বেচ্ছাসেবক চিকিৎসক টেলিফোনে করোনা রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন তাদের মধ্যে ৯ জনকে গত কয়েক সপ্তাহে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দুই বড় শহর মান্দালে ও ইয়াঙ্গুন থেকে আরও কয়েক জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যারা টেলিমেডিসিন চিকিৎসা সেবা দিতেন গ্রেপ্তারের ভয়ে তারা আত্মগোপনে চলে যাচ্ছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক বলেছেন, ‘আমরা প্রতিদিন অন্তত ১৫০ জনকে চিকিৎসা দিচ্ছি। এর অর্ধেকের বেশি রোগী জ্বর, ঘাণশক্তি কমে যাওয়া ও করোনার লক্ষণগুলোর জন্য চিকিৎসা চাইতেন।’ 

মিয়ানমারে জাতিসংঘের বিশেষ দূত টম অ্যান্ড্রিউজ জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র ও স্বাস্থ্য সেবা কর্মীদের ওপর ২৪০টি হামলার প্রমাণ রয়েছে। গত সপ্তাহ পর্যন্ত পাঁচ শতাধিক চিকিৎসক ও নার্সের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি বাকি আছে।’

তিনি বলেন, ‘আপনি কোভিড-১৯ এর সময় চিকিৎসক, নার্স, ও ক্লিনিকগুলোতে হামলা চালাতে পারেন না। এটাই আসলে মিয়ানমারের পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে তুলছে।’