আন্তর্জাতিক

পদত্যাগ করবেন রাজাপাকসে, নতুন প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন প্রেমাদাসা

দেশের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন মাহিন্দা রাজাপাকসে। তার স্থলাভিষিক্ত হতে পারেন দেশটির বিরোধীদলীয় নেতা সামাগি জনা বালাভেগায়া সাজিথ প্রেমাদাসা।

মাহিন্দা রাজাপাকসে সোমবার (৯ মে) একটি বিশেষ বিবৃতিতে তার পদত্যাগের ঘোষণা দেবেন।

দেশটির সংবাদমাধ্যম কলম্বো পেজ জানায়, শুক্রবার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া তার মন্ত্রিসভাকে নিয়ে বিশেষ এক বৈঠকে বসেন। এতে তিনি তার ভাই মাহিন্দাকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের অনুরোধ করেন। তার আহ্বানে সাড়া দেন মাহিন্দা রাজাপাকসে। প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের পরই মন্ত্রিপরিষদ ভেঙে যাবে।

মাহিন্দার পদত্যাগের ব্যাপারে সম্মত হয়েছেন তার মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ড. রমেশ পাথিরানা, প্রসন্ন রানাতুঙ্গা এবং ড. নালাকা গোদাহেওয়া। পরিষদের অন্য সদস্য মন্ত্রী উইমলাভিরা দিসানায়েক বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ কোনো কাজে আসবে না। এ বৈঠকে সাবেক মন্ত্রী মহিন্দানন্দ আলুথগামাগেও অংশ নিয়েছিলেন।

এদিকে, শনিবার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া শ্রীলঙ্কার বিরোধীদলীয় নেতা সামাগি জনা বালাভেগায়া সাজিথ প্রেমাদাসাকে প্রধানমন্ত্রীর পদ গ্রহণের জন্য অনুরোধ করেন। টেলিফোনের মাধ্যমে সাজিথকে এ অনুরোধ জানান গোতাবায়া। সাজিথ জানিয়েছেন, তার দলসহ অন্যান্য বিরোধীদলের সংসদ সদস্যরা বৈঠক করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাবেন।

করোনা মহামারি, ক্রমবর্ধমান তেলের দাম এবং প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে সরকারের ট্যাক্স কমানোর কারণে তীব্র অর্থনৈতিক সংকটের কবলে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। আমদানিকৃত খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধের ঘাটতির কারণে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে বিক্ষিপ্তভাবে সহিংস সরকারবিরোধী বিক্ষোভ হচ্ছে। দেশটির অর্থমন্ত্রী গত সপ্তাহে জানিয়েছেন, শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক রিজার্ভ এখন মাত্র পাঁচ কোটি ডলার।

এছাড়া শুক্রবার (৬ মে) শ্রীলঙ্কার বড় বড় শহরগুলোতে দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। বেসরকারি বাস ও ট্রেন অপারেটররা ধর্মঘটে যোগ দেওয়ার কারণে যাত্রীরা আটকা পড়েছিলেন। কলম্বোর প্রধান ট্রেন স্টেশনটি শুক্রবার সকালে বন্ধ ছিল এবং কাছাকাছি টার্মিনালে শুধুমাত্র সরকারি বাস চালু ছিল। স্বাস্থ্যসেবা কর্মীরাও ধর্মঘটে যোগ দেন, যদিও জরুরি পরিষেবা চালু ছিল।

গত বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শত শত শিক্ষার্থী ও অন্যান্য বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্টে যাওয়ার প্রধান সড়কের বাইরে অবস্থান নেয়। কেউ কেউ রাজনৈতিক নেতাদের অপমানিত করতে তাদের অন্তর্বাস ব্যারিকেডে ঝুলিয়ে দেন।

সূত্র: কলম্বো পেজ, হিন্দুস্থান টাইমস