আন্তর্জাতিক

‘কালের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস’কে ভুল বলেছিলেন হকিং

২০০২ সালে থমাস হার্টগ তার শিক্ষক স্টিফেন হকিংয়ের কাছ থেকে একটি ই-মেইল পান। বার্তা পাওয়ার পরপর তরুণ গবেষক কেমব্রিজে হকিংয়ের কক্ষে ছুটে যান। হার্টগ ঘরে প্রবেশ করেই দেখতে পান, হকিংয়ের ‘চোখ উত্তেজনায় জ্বল জ্বল করছিল।’

কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত ভয়েস সিস্টেমে টাইপ করে হকিং তখন তার ছাত্রকে বলেন, ‘আমি আমার মন পরিবর্তন করেছি। আমার বই, সময়ের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস, ভুল দৃষ্টিকোণ থেকে লেখা হয়েছে।’

এভাবে প্রকাশনার ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া বৈজ্ঞানিক বইগুলির মধ্যে অন্যতম ‘কালের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস’কে ডাস্টবিনে ফেলে দেন হকিং। হকিং ও হার্টগ এরপরে মহাবিশ্ব সম্পর্কে তাদের সর্বশেষ চিন্তাভাবনাকে লিপিবদ্ধ করার জন্য একটি নতুন উপায়ে কাজ শুরু করেছিলেন। হকিংয়ের মৃত্যুর পাঁচ বছর পরে তার সর্বশেষ চিন্তাভাবনা প্রকাশ করতে যাচ্ছেন হার্টগ। ‘অন দি অরিজিন অব টাইম : স্টিফেন হকিং’স ফাইনাল থিওরি’ শিরোনামের বইটি এপ্রিল মাসে প্রকাশিত হতে যাচ্ছে। আগামী ৩১ মার্চ কেমব্রিজ উৎসবের বক্তৃতায় হার্টগ তার বইয়ের ওপর আলোচনা করবেন।

বেলজিয়ামের কে ইউ লিউভেন ইউনিভার্সিটির কসমোলজিস্ট হার্টগ বলেছেন, ‘হকিংয়ের সমস্যা ছিল মহাবিশ্ব কীভাবে জীবনের জন্য এতটা সহায়ক পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে তা বোঝা।’

এই জীবন সহায়ক অবস্থার উদাহরণগুলোর মধ্যে রয়েছে, কণা শক্তির মধ্যে বিদ্যমান সূক্ষ্ম ভারসাম্য- যা রসায়ন ও জটিল অণুকে থাকতে দেয়। এর বাইরে মহাকাশের মাত্র তিনটি মাত্রা বা ডাইমেনশন স্থিতিশীল সৌরজগতের বিবর্তন এবং জীবন্ত প্রাণিদের জীবনধারণের সুযোগ করে দেয়। এই বৈশিষ্ট্যগুলো না থাকলে, মহাবিশ্ব সম্ভবত জীবন তৈরি করত না।

হকিং তার পূর্ববর্তী প্রচেষ্টাগুলো অপর্যাপ্ত ছিল বলে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে এই নাক্ষত্রিক অনিশ্চয়তার অবস্থার ব্যাখ্যা খুঁজে বের করার সিদ্ধান্ত নেন। 

হার্টগ বলেন, ‘স্টিফেন আমাকে বলেছিলেন যে, তিনি ভুল করেছেন এবং তাই তিনি ও আমি কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেছি, আগামী ২০ বছর ধরে নতুন মহাজাগতিক তত্ত্ব তৈরি করার জন্য, যা প্রাণের উৎস আরও ভালভাবে ব্যাখ্যা করতে পারবে।’