গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি পর্যালোচনা করতে ফারাক্কা বাঁধ ও গঙ্গা নদীর পানি প্রবাহ পরিদর্শন করেছে বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) প্রতিনিধি দল। দুই দেশের প্রতিনিধি দল মঙ্গলবার (৪ মার্চ) একটি লঞ্চে করে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার ফারাক্কায় গঙ্গা নদীতে ভারত-বাংলাদেশ ‘জয়েন্ট অবজারভেশন সাইট’ এ গিয়ে পানি প্রবাহের বিষয়টি খতিয়ে দেখেন।
বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন জয়েন্ট রিভার কমিশনের (জেআরসিবি) সদস্য মোহাম্মদ আবুল হোসেন। পরিদর্শন শেষে তিনি জানান, গত জানুয়ারি মাসে পানির প্রবাহ ভালো ছিল, কিন্তু ফেব্রুয়ারি মাসে একটু কমেছে। যদিও এটাই স্বাভাবিক। কোনো বছর কম থাকে, কোনো বছর বেশি থাকে।
১৯৯৬ সালে সম্পাদিত গঙ্গা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি অনুযায়ী বাস্তবায়ন হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, যে পরিমাণ পানি বাংলাদেশে যাওয়ার কথা সেটা যাচ্ছে, আবার যতটা ভারত পাওয়ার কথা সেটাও পাচ্ছে।
আবুল হোসেন আরো বলেন, আগামী বছর গঙ্গা চুক্তির নবায়ন নিয়ে একটা টেকনিক্যাল টিম গঠন করা হবে। চুক্তি নবায়নের বিষয়টি তারাই ভালো বলতে পারবেন।
এর আগে গতকাল সোমবার সকালে কলকাতার নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নামেন বাংলাদেশের সাত সদস্যের প্রতিনিধি দলটি। এরপর কলকাতা থেকে ট্রেনে করে নিউ ফারাক্কা স্টেশনে পৌঁছান। সোমবার রাতে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল আসা মাত্রই তাদেরকে স্বাগত জানান ফারাক্কা ব্যারেজের জেনারেল ম্যানেজার আর ডি দেশপান্ডে ও ফারাক্কা ব্যারেজ প্রজেক্টেরের শীর্ষ কর্মকর্তারা।
মঙ্গলবার গঙ্গা নদী পরিদর্শনের পর, আগামীকাল বুধবার ফারাক্কা থেকে দুই দেশের প্রতিনিধি দল কলকাতায় ফিরবেন। এরপর আগামী বৃহস্পতিবার কলকাতার হায়াত রিজেন্সি হোটেলে ৮৬তম বৈঠকে মিলিত হবেন দুই দেশের যৌথ নদী কমিশনের সদস্যরা। শুক্রবার হবে কারিগরি পর্যায়ের বৈঠক।
১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি হয়েছিল। ৩০ বছরের সামগ্রিক চুক্তি অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে মে মাস- এই শুখা মৌসুমে নির্দিষ্ট পরিমাণ পানি সরবরাহের কথা উল্লেখ রয়েছে। ওই চুক্তিতে বলা হয়, নদীতে ৭৫ হাজার কিউসেকের বেশি পানি থাকলে ভারত পাবে ৪০ হাজার কিউসেক পানি, অবশিষ্ট পানি পাবে বাংলাদেশ। নদীতে ৭০ হাজার থেকে ৭৫ হাজার কিউসেক পানি প্রবাহ থাকলে বাংলাদেশ পাবে ৪০ হাজার কিউসেক পানি, অবশিষ্ট পানি পাবে ভারত। আবার ৭০ হাজার কিউসেক বা তার কম পানি থাকলে তা প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যেই সমান ভাগে ভাগ হবে।