আন্তর্জাতিক

ইরানের দক্ষিণাঞ্চলে ইসরায়েলের নতুন হামলা

ইরানের দক্ষিণাঞ্চলীয় বুশেহর শহরে বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইয়াং জার্নালিস্টস ক্লাব। ক্লাবটি ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার সংস্থা আইআরআইবির অধীনস্থ।

বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করার মুহূর্তে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী শুক্রবার (২০ জুন) জানিয়েছে, তারা ইরানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত সামরিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চালিয়েছে।

ইসরায়েলের কয়েকটি শহরে বিস্ফোরণের শব্দ, বাজছে সাইরেন

সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, শুক্রবার (১৭ জুন) জেরুজালেম ও তেল আবিব শহরের আকাশে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। এর ঠিক কিছুক্ষণ আগে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছিল, ইরান থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে তাদের বিমান বাহিনী কাজ করছে।

আলজাজিরা লিখেছে, ঘটনাটি চলমান ইসরায়েল-ইরান সংঘাতের সর্বশেষ উত্তেজনাকর পর্ব, যেখানে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয়ভাবে জড়িত রয়েছে। পরিস্থিতি এখনো বিকাশমান এবং বিস্তারিত তথ্য আসতে সময় লাগতে পারে।

সারা ইসরায়েলজুড়ে সাইরেন বাজছে

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ইসরায়েলের বিভিন্ন শহর ও অঞ্চলজুড়ে বিমান হামলার সতর্কতা সাইরেন বেজে উঠেছে।

এই সতর্কতা ইঙ্গিত দিচ্ছে যে ইরান থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র বা ড্রোন হামলার আশঙ্কায় ইসরায়েল তার জনগণকে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার নির্দেশ দিচ্ছে।

সাম্প্রতিক বিস্ফোরণের শব্দ ও ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর প্রতিরক্ষা কার্যক্রমের পরিপ্রেক্ষিতে এটি একটি জরুরি প্রতিক্রিয়া বলে ধারণা করা হচ্ছে। পরিস্থিতি দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে।

ইরানজুড়ে ‘ক্রোধ ও বিজয়’ মিছিলে ইসরায়েলবিরোধী ঐক্যের বার্তা

ইরানের জনগণ শুক্রবার জুমার নামাজের পর দেশব্যাপী বিক্ষোভ মিছিল ও গণসমাবেশ করেছে। ইহুদিবাদী শাসনের (জায়নিস্ট রেজিম) প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করেছে তারা। দেশের প্রতি অবিচল সমর্থনের ঘোষণা দিয়ে এদিন সারা দেশে রাস্তায় নেমে আসে ইরানিরা।

ইরানি সংবাদমাধ্যম তাসনিম নিউজ লিখেছে, এমন এক সময় ইরানজুড়ে এই বিক্ষোভ হলো, যখন ইসরায়েল তাদের দেশের বিরুদ্ধে আগ্রাসন চালাচ্ছে।

শুক্রবার জুমার নামাজের পর ‘ক্রোধ ও বিজয়’ শিরোনামে সারা দেশে বিক্ষোভ ও মিছিল হয়েছে।

মিছিলে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করে, তারা ইরানের বিরুদ্ধে ইহুদিবাদী শাসনের আগ্রাসী যুদ্ধের নিন্দা জানায়।

কয়েকদিনের ইসরায়েলি আগ্রাসনে ইরানে পাঁচ শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। 

তাসনিম নিউজ লিখেছে, নির্বিচার ইসরায়েলি হামলার মধ্যে শুক্রবার ইরানিদের উল্লেখযোগ্য মিছিল-সমাবেশ বিদেশি পর্যবেক্ষকদের বিস্মিত করেছে।

ইরানের জনগণ বর্বর ইহুদিবাদী হামলার নিন্দা জানিয়ে স্লোগান দেয় এবং মাতৃভূমির রক্ষায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি তাদের দৃঢ় সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে।

শুক্রবারের এই বিশাল জনসমাগম দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলিদের আশ্রয়কেন্দ্রে লুকিয়ে থাকার দৃশ্যের সম্পূর্ণ বিপরীত, যা প্রমাণ করে যে ইরানিরা কখনো সামরিক হুমকির সামনে আত্মসমর্পণ করবে না বা মাথা নত করবে না।

জায়নবাদী শাসন ১৩ জুন ইরানের বিরুদ্ধে একটি উস্কানিমূলক আগ্রাসী যুদ্ধ শুরু করে। তারা ইরানের পারমাণবিক, সামরিক ও আবাসিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়, যার ফলে বহু শীর্ষ সামরিক কমান্ডার, পারমাণবিক বিজ্ঞানী ও সাধারণ নাগরিক শহীদ হন।

ইরানি সামরিক বাহিনী তাত্ক্ষণিকভাবে পাল্টা হামলা শুরু করে। ইরানের বিপ্লবী রক্ষী বাহিনীর মহাকাশ বিভাগ ২০ জুন পর্যন্ত “ট্রু প্রমিজ থ্রি” (সত্য প্রতিশ্রুতি-৩) অভিযানের অংশ হিসেবে ইহুদিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে ১৬ দফায় পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।