আন্তর্জাতিক

অভিযান থেকে অস্ত্রবিরতি: যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে পথ বদলালো

মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে এলো সুখবর। অবশেষে ইরান ও ইসরায়েল একটি যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছেছে। কয়েকদিনের গোপন কূটনৈতিক তৎপরতা, সামরিক চাপ এবং আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতার ধারাবাহিকতায় এলো এ খবর। 

মঙ্গলবার (২৪ জুন) বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি মূলত মার্কিন সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফল। তবে যুদ্ধবিরতির টেকসই হওয়া নিয়ে রয়েছে শঙ্কা।   

ট্রাম্পের মধ্যস্থতা: ইরানে ইসায়েলের হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি এতে যোগ দেয়। তারা ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়। ট্রাম্প এই হামলাকে ‘খুব সফল একটি আক্রমণ’ বলে দম্ভোক্তিভরা দাবি করেছেন। এমনকি যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পরও তিনি দাবি করেছেন, ‘নিখুঁত হামলার’ কারণে এ চুক্তি সম্ভব হয়েছে। 

নিজেকে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে দাবি তিনি লেখেন, তার সহায়তাতেই এই ‘চুক্তি’ সম্ভব হয়েছে।

ট্রাম্প বলেন, “আজকের ‘চুক্তি’ সম্ভব হতো না আমাদের অসাধারণ বি টু পাইলটদের সাহস এবং দক্ষতা ছাড়া। তাদের অসাধারণ কাজ পুরো পরিস্থিতি বদলে দিয়েছে।”

তিনি বলেন, “একটি নিখুঁত ‘হামলা’ সবাইকে একত্রিত করেছে এবং এরপরই চুক্তি হয়েছে!!!”

যুদ্ধ শুরুর পরপরই বিশ্ব তেলবাজারে অস্থিরতা দেখা দেয়, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাড়ে মূল্যস্ফীতি, দেখা দেয় রাজনৈতিক চাপ। ফলে দ্রুত দিক পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেয় হোয়াইট হাউস। সামরিক অভিযান চালিয়ে পরপরই ফেরে কূটনীতির টেবিলে।

রয়টার্স জানায়, সোমবারই ট্রাম্প ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর নেতানিয়াহুর সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন এবং তার প্রশাসনের সদস্যরা তেহরানের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। হোয়াইট হাউসের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ওই কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “ইসরায়েল রাজি হয়েছে যুদ্ধবিরতিতে, তবে শর্ত একটাই—ইরান যেন নতুন করে আর কোনো হামলা না চালায়।” তিনি আরও বলেন, “ইরান জানিয়েছে, তারা আর হামলা চালাবে না।”

এই আলোচনায় ট্রাম্পের সঙ্গে ছিলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স। তিনি ও তার কূটনৈতিক টিম তেহরানের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যান।

বিশ্লেষকদের মতে, এটি ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য একটি কূটনৈতিক সাফল্য হলেও, যুদ্ধবিরতির স্থায়িত্ব নির্ভর করছে উভয় পক্ষের ভবিষ্যৎ আচরণের ওপর।