আন্তর্জাতিক

ইউক্রেনের লুহানস্ক পুরোপুরি দখলে নেওয়ার দাবি রাশিয়ার

ইউক্রেনের পুরো লুহানস্ক অঞ্চল দখলে নেওয়ার দাবি করেছে রাশিয়া। দেশটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় লুহানস্ক পুরোপুরি রুশ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। 

মঙ্গলবার (১ জুলাই) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এই দাবি সত্য হলে এটি হবে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেন আক্রমণ শুরু করার তিন বছরেরও বেশি সময় পরে রাশিয়ার প্রথম সম্পূর্ণভাবে দখল করা ইউক্রেনীয় অঞ্চল।

গতকাল সোমবার (৩০ জুন) লুহানস্কে নিযুক্ত রুশ কর্মকর্তা লিওনিড পাসেচনিক দাবি করেন, লুহানস্ক অঞ্চল এখন সম্পূর্ণরূপে রাশিয়ার দখলে রয়েছে। এই অঞ্চলটি ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে রাশিয়া যে চারটি ইউক্রেনীয় অঞ্চল একতরফাভাবে রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত করেছিল, তার একটি।

সোমবার সন্ধ্যায় রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেল ওয়ানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পাসেচনিক বলেন, তিনি ‘আক্ষরিক অর্থেই দুই দিন আগে’ একটি রিপোর্ট পেয়েছেন, যেখানে বলা হয়েছে যে, এই অঞ্চলের ‘১০০ শতাংশ’ এখন রাশিয়ান বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে।

রাশিয়ার এই দাবি নিয়ে এখনো ইউক্রেন সরকার বা কিয়েভের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য আসেনি।

এর আগে গত ২০ জুন সেন্ট পিটার্সবার্গ অর্থনৈতিক ফোরামে পুতিন জানান, তিনি ইউক্রেনের পুরো ভূখণ্ড রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত করতে চান। 

পুতিন বলেন, “আমি বহুবার বলেছি, রুশ ও ইউক্রেনীয় জনগণ এক জাতি। এই দৃষ্টিকোণ থেকে পুরো ইউক্রেনই আমাদের।” তিনি আরো বলেন, “রুশ সেনারা যেখানেই পা রাখে, তা-ই রাশিয়ার।”

ইউক্রেনীয় ডীপ স্টেট ম্যাপ অনুসারে, ২০২৫ সালের ২৮ জুন পর্যন্ত রাশিয়া ইউক্রেনের এক লাখ ১৩ হাজার ৫৮৮ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে, যা গত দুই মাসে ৯৪৩ বর্গকিলোমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে।

ক্রেমলিন ইতিমধ্যে স্পষ্টভাবে বলেছে, তারা শান্তিতে আগ্রহী। তবে শর্ত হচ্ছে ইউক্রেনকে চারটি সম্পূর্ণ অঞ্চল থেকে সরে যেতে হবে-যেগুলোর বেশিরভাগই এখন রাশিয়ার দখলে। এগুলোকে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আইনিভাবে রাশিয়ার অংশ হিসেবে ঘোষণা করেছেন।

অন্যদিকে ইউক্রেন ও তার ইউরোপীয় মিত্ররা বলছেন, এই শর্তগুলো আত্মসমর্পণের শামিল। রাশিয়া আসলেই শান্তি চায় না। ইউক্রেনের এক-পঞ্চমাংশ অঞ্চলের রুশ নিয়ন্ত্রণ তারা কখনোই মেনে নেবে না।

সোমবার (৩০ জুন) ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদন অনুসারে, রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে-ক্রিমিয়া, লুহানস্ক, ডোনেস্ক, জাপোরিঝিয়া ও খেরসন অঞ্চলের ৭০ শতাংশের বেশি এলাকা, খারকিভ, সুমি ও দনিপ্রোপেত্রোভস্ক অঞ্চলের কিছু অংশ। এর মধ্যে এবার লুহানস্ক অঞ্চলটি পুরোপুরি দখলের দাবি করল রাশিয়া।