আন্তর্জাতিক

১০ লাখ কুকুর নিয়ে বিপাকে দিল্লি

দিল্লির প্রায় ১০ লাখ বেওয়ারিশ কুকুরকে আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানান্তরিত করার জন্য সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। পশুপ্রেমীরা এই রায়কে ‘অমানবিক’ বলে সমালোচনা করেছেন।

সোমবার ভারতের সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে যে দিল্লি-এনসিআর-এর সব রাস্তার কুকুরকে আট সপ্তাহের মধ্যে তুলে নিতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রতিষ্ঠিত ডেডিকেটেড ডগ শেল্টারে রাখতে হবে। এর জন্য আদালত পৌর সংস্থা এবং অন্যান্য সংস্থাগুলোকে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে পর্যাপ্ত আশ্রয়স্থল তৈরির জন্য সমন্বয় করে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছে। নিশ্চিত করতে হবে যে কুকুরগুলো জনসাধারণের স্থান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। কুকুরকে আশ্রয়কেন্দ্রে রাখার পর আবার রাস্তায় ছেড়ে দেওয়া যাবে না।

প্রাণী অধিকার সংগঠন এবং কুকুরপ্রেমীরা আদালতের এই রায়ের সমালোচনা করে বলেছে, শীর্ষ আদালতের রায় কেবল নিষ্ঠুরই নয়, অবাস্তবও। 

শীর্ষ আদালতের রায়ের প্রতিক্রিয়ায় পেটা ইন্ডিয়া বলেছে, “কুকুরদের স্থানচ্যুতি এবং জেলে পাঠানো বৈজ্ঞানিক নয় এবং কখনো কার্যকর হয়নি।”

সংগঠনটি সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, লাখ লাখ কুকুরকে রাস্তা থেকে জোর করে সরিয়ে ফেলা “হট্টগোলের সৃষ্টি করবে। এছাড়াও কুকুরের সংখ্যা কমাতে, জলাতঙ্ক কমাতে বা কুকুরের কামড়ের ঘটনা রোধে এটি শেষ পর্যন্ত কিছুই করবে না। কারণ পর্যাপ্ত কুকুরের আশ্রয়স্থল তৈরি করা অসম্ভব এবং কুকুরদের স্থানান্তরের ফলে অঞ্চল নিয়ে মারামারি ও অনাহারের মতো সমস্যা দেখা দেয়। শেষ পর্যন্ত, কুকুরগুলো একই অঞ্চলে ফিরে আসে, বিশেষ করে যখন কুকুরছানা জন্মাতে থাকে।”

এনডিটিভি অনলাইন জানিয়েছে, ২০০৯ সালে জাতীয় রাজধানীর শেষ কুকুর শুমারিতে দিল্লিতে প্রায় ৫ লাখ ৬০ হাজার বিপথগামী কুকুর বাস করতে দেখা গেছে। গত ১৬ বছরে, এই ধরনের কোনো জরিপ পরিচালিত হয়নি, তবে অনুমান করা হয়েছে যে সংখ্যাটি প্রায় ১০ লাখ। প্রতিটি আশ্রয়স্থলে ৫০০টি কুকুর থাকলেও, এখন দুই হাজার আশ্রয়স্থলের প্রয়োজন হবে। বর্তমানে, দিল্লি মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন (এমসিডি) মাত্র ২০টি প্রাণী নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র পরিচালনা করে। এই আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে পাঁচ হাজারেরও বেশি কুকুর রাখা সম্ভব হবে না। তাহলে এতো স্বল্প সময়ের মধ্যে বাকী কুকুরগুলো কোথায় রাখা যাবে?