জরুরি অবস্থা প্রত্যাহারের ১৭ দিন পর মিয়ানমারে জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে জান্তা সরকার। প্রথম ধাপের কার্যক্রম শুরু হবে আগামী ২৮ ডিসেম্বর। সোমবার এক বিবৃতিতে দেশটির ইউনিয়ন ইলেকশন কমিশন এ তথ্য জানিয়েছে।
কমিশনের বিবৃতির বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, নির্বাচনের প্রথম ধাপ শুরু হবে আগামী ২৮ ডিসেম্বর থেকে। পরবর্তী ধাপের তারিখ পরে ঘোষণা করা হবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালে রক্তাক্ত অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জান্তা ক্ষমতা দখল করে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেত্রী অং সান সুং চিকে কারারুদ্ধ করার পর এটিই হবে প্রথম ভোট।
মিয়ানমার তখন থেকে গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে, সামরিক বাহিনী এবং জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে মারাত্মক লড়াই চলছে। এ পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছে এবং প্রায় ৩৫ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
তীব্র গৃহযুদ্ধে জর্জরিত মিয়ানমারের অনেক অংশ এখনো সেনাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে আছে। গণতন্ত্রপন্থী গেরিলা গোষ্ঠী ও বিভিন্ন জাতিগত সশস্ত্র সংগঠনগুলো স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে, এসব অঞ্চলে ভোট ঠেকানো হবে। এর মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনাকে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা ‘প্রহসন’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
তবে জান্তা সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সংঘাত নিরসনের উপায় হতে পারে এই নির্বাচন। ভোটের আগে অস্ত্র সমর্পণকারী বিদ্রোহীদের নগদ পুরস্কারের ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে।
দেশটির বড় রাজনৈতিক দল এনএলডির নেত্রী অং সান সু চি এখনো কারাগারে আছেন। নির্বাচন ঘিরে জনগণের আশঙ্কা, এটি গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার বদলে জান্তার শাসনকে নতুন করে বৈধতা দেওয়ার হাতিয়ার হয়ে দাঁড়াতে পারে। সেনা অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত বহু সংসদ সদস্য নির্বাচন বয়কটের ঘোষণা দিয়েছেন।
রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, মোট ৫৫টি রাজনৈতিক দল নির্বাচনের জন্য নিবন্ধিত হয়েছে, যার মধ্যে নয়টি দেশব্যাপী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার পরিকল্পনা করছে। ছয়টি দল অনুমোদন এবং নিবন্ধনের জন্য পর্যালোচনাধীন রয়েছে।
জান্তা-বিরোধী দলগুলোকে হয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে বাধা দেয়া হয়েছে অথবা অংশগ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানানো হয়েছে। নির্বাচনে সামরিক বাহিনীর প্রক্সিদের আধিপত্য থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।