আন্তর্জাতিক

‘কারাগার নয়, কসাইখানায় ছিলাম’

যুদ্ধবিরতি চুক্তির পর কারাগার থেকে আটক ফিলিস্তিনিদের মুক্তি দিচ্ছে ইসরায়েল। এই বন্দিরা ইসরায়েলের কারাগারে থাকা অবস্থায় যে ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তার বর্ণনা দিচ্ছেন সংবাদমাধ্যমের কাছে।

খান ইউনিসে ইসরায়েলি বন্দিদশা থেকে মুক্তি আবদুল্লাহ আবু রাফে আল-জাজিরাকে বলেছেন, “আমরা কারাগার নয়, একটি কসাইখানায় ছিলাম। দুর্ভাগ্যবশত, আমরা ওফার কারাগার নামে একটি কসাইখানায় ছিলাম। অনেক যুবক এখনো সেখানে আছে। ইসরায়েলি কারাগারের পরিস্থিতি খুবই কঠিন। কোনো বিছানা নেই। তারা সবসময় বিছানাগুলো সরিয়ে নেয়। খাবারের পরিস্থিতি কঠিন। সেখানে পরিস্থিতি কঠিন।”

আরেকজন মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দি ইয়াসিন আবু আমরা ইসরায়েলি কারাগারের অবস্থা ‘অত্যন্ত খারাপ’ বলে বর্ণনা করেছেন।

তিনি বলেন, “খাবার, নিপীড়ন এবং মারধরের দিক থেকে, সবকিছুই খারাপ ছিল। খাবার বা পানীয় ছিল না। আমি চার দিন ধরে খাইনি। তারা আমাকে এখানে দুটি মিষ্টি দিয়েছিল এবং আমি সেগুলো খেয়েছি।”

আল-জাজিরার সংবাদদাতা ইব্রাহিম আল-খালিলির ভাই মোহাম্মদ ইসরায়েলি বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়েছেন। মোহাম্মদ আল-খালিলিকে ১৯ মাসেরও বেশি সময় ধরে কোনও অভিযোগ ছাড়াই আটক রাখা হয়েছিল।

ইব্রাহিম আল-খালিলি তার সেই বন্দিদশার বিবরণ দিয়ে বলেন, “আমাদের মারধর করা হয়েছিল এবং অপমান করা হয়েছিল। আমরা অনেক কষ্ট পেয়েছি। কিন্তু আল্লাহকে ধন্যবাদ, এখন সবকিছু শেষ।”

বিবিসি জানিয়েছে, সোমবার ইসরায়েলি কারাগার থেকে ফিরে আসা তাদের প্রিয়জনদের অবস্থা দেখে ফিলিস্তিনি বন্দিদের পরিবার হতবাক হয়ে গিয়েছিল।

রামাল্লায় বাস থেকে নেমে আসার সময় বন্দিরা দুর্বল ও ফ্যাকাশে দেখাচ্ছিল, কিছু লোক হাঁটতেও কষ্ট পাচ্ছিল। বেশ কয়েকজন পুরুষকে পরিবারের সদস্যরা চেয়ারে ঠেলে বা কাঁধে বহন করতে দেখা গেছে।

ইসরায়েলি কারাগারে ব্যাপক দুর্ব্যবহারের সাক্ষ্য উঠতে শুরু করেছে - যার মধ্যে রয়েছে নির্যাতন, খাবার থেকে বঞ্চিত হওয়া এবং মারধর।

রামাল্লাহর কনফারেন্স হলের বাইরে যেখানে অনেক পরিবার তাদের প্রিয়জনদের গ্রহণ করতে জড়ো হয়েছিল। সেখানে ফিলিস্তিনি প্রিজনার্স ক্লাবের ২৬ বছর বয়সী আয়া শ্রেইতেহ বিবিসিকে বলেছিলেন, “গত বছরে বেশিরভাগ বন্দিকে ইচ্ছাকৃতভাবে অনাহার এবং অসুস্থতার মুখোমুখি হতে হয়েছিল। অনাহারে তাদের দেহ দুর্বল।”