ভারতের রাজধানী দিল্লিতে বায়ুদূষণ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বিষাক্ত ধোঁয়াশার পুরু স্তর পুরো শহরকে ঢেকে ফেলেছে। যার ফলে দৃশ্যমানতা মারাত্মকভাবে কমে গেছে। বাতাসের গুণগত মান (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স বা একিউআই) ‘ভয়াবহ’ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে এনডিটিভি।
ভারতের কেন্দ্রীয় দূযণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের (সিপিসিবি) তথ্যানুসারে, রবিবার সকাল ৬টায় দিল্লির বাতাসের গুণগত মান (একিউআই) ছিল ৪৬২- যা ‘সিভিয়ার’ বা ভয়াবহ পর্যায়।
দিল্লির ৪০টি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রেই ‘রেড’ অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। উত্তর পশ্চিম দিল্লির রোহিণীতে একিউআই ৪৯৯, জাহাঙ্গীরপুরী ও বিবেক বিহারে ৪৯৫ রেকর্ড করা হয়েছে। পূর্ব দিল্লির পাটপড়গঞ্জে একিউআই ছিল ৪৮৮; কম দৃশ্যমানতার কারণে গাড়িচালকদের হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীরে চলতে দেখা গেছে।
সিপিসিবির তথ্যানুযায়ী, একিউআই যদি ০-৫০ থাকে, তাহলে সেটি ভালো। ৫১-১০০ হলে সন্তোষজনক। ১০১-২০০ হলে মাঝারি। ২০১-৩০০ হলে খারাপ। ৩০১-৪০০ হলে অত্যন্ত খারাপ। ৪০১-৫০০ হলে ভয়ানক বা বিপজ্জনক।
শনিবার থেকেই দিল্লি এবং তার আশপাশের অবস্থার ক্রমাগত অবনতি ঘটতে থাকে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় কমিশন ফর এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট (সিকেউএম) গ্রেডেড রেসপন্স অ্যাকশন প্ল্যান-৪ কার্যকর করেছে। এর আওতায় অপ্রয়োজনীয় ট্রাক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা, নির্মাণকাজ বন্ধ, কিছু যানবাহন চলাচল সীমিত করা হয়েছে। পাশাপাশি স্কুলের কিছু শ্রেণিতে অনলাইন ক্লাস এবং অফিসে অন্তত ৫০ শতাংশ কর্মীর ওয়ার্ক ফ্রম হোমের সুপারিশ করা হয়েছে।
সিএকিউএম জানায়, দুর্বল পশ্চিমা ঝঞ্ঝা ও বাতাসের গতি কমে যাওয়ায় দূষণ ছড়িয়ে পড়তে না পেরে শহরের ওপর আটকে আছে, ফলে হঠাৎ বায়ুমানের অবনতি ঘটেছে।
দিল্লির হাসপাতালগুলোতে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে আসা রোগীদের সংখ্যা এক লাফে আগের থেকে ২০-৩০ শতাংশ বেড়ে গেছে। রোগীদের মধ্যে বয়স্কদের পাশাপাশি রয়েছেন তরুণ এবং শিশুরাও। চিকিৎসকদের কথায়, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালের বহির্বিভাগ এবং জরুরি বিভাগে এ ধরনের রোগীদের ভিড় লেগেই রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে জানিয়েছেন, ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে শীতের প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি আরো অবনতি হতে পারে। বাতাসের গতি না বাড়লে বিপজ্জনক ধোঁয়াশার স্তর শিগগিরই কাটার সম্ভাবনা কম।