সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেট (আইএস) গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ‘ব্যাপক’ সামরিক অভিযান পরিচালনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে মার্কিন বাহিনীর ওপর সাম্প্রতিক প্রাণঘাতী হামলার জবাবে এই প্রতিশোধী আক্রমণ বলে জানিয়েছে ওয়াশিংটন। খবর বিবিসির।
মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম) জানায়, ‘হকআই স্ট্রাইক’ নামে অভিযানটি শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) পূর্বাঞ্চলীয় সময় বিকেল ৪টায় শুরু হয়। যুদ্ধবিমান, হেলিকপ্টার ও কামান থেকে গোলা ছুড়ে সিরিয়ার মধ্যাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে ৭০টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হয়েছে। এতে জর্ডানের বিমানও অংশ নিয়েছে।
সেন্টকম আরো বলেছে, এই অভিযানে শতাধিক নির্ভুল অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে, যা আইএসের অবকাঠামো ও অস্ত্র স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করেছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ১৩ ডিসেম্বর পালমিরায় আইএসের হামলায় দুই মার্কিন সেনা ও এক মার্কিন অনুবাদক নিহত হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র আইএস ঘাঁটিতে কঠোর আঘাত হানছে।
সেন্টকমের কমান্ডার অ্যাডমিরাল ব্র্যাড কুপার বলেন, আমেরিকান বা তাদের অংশীদারদের ক্ষতি করতে চায় যারা, তাদের বিরুদ্ধে নিরলস অভিযান চলবে।
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ বলেন, এই অভিযানের উদ্দেশ্য কেবল আইএসকে দুর্বল করা নয়, বরং ভবিষ্যতে যেন তারা আর মার্কিন সেনা বা নাগরিকদের ওপর হামলা চালানোর সাহস না পায়, সেই বার্তা দেওয়া।
তিনি বলেন, “মার্কিনিদের আক্রমণ করলে বিশ্বের যেকোনো জায়গায় যুক্তরাষ্ট্র তাকে খুঁজে বের করে নির্মমভাবে হত্যা করবে।”
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, “আজ, আমরা আমাদের শত্রুদের শিকার করেছি ও হত্যা করেছি। তাদের অনেককে। এবং আমরা এটি চালিয়ে যাব।”
ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প বলেন, “আমি যেমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, যুক্তরাষ্ট্র দায়ী খুনি সন্ত্রাসীদের ওপর নির্মম প্রতিশোধ নিচ্ছে।” সিরিয়ার সরকারের এতে পুরো সমর্থন রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
এদিকে, যুক্তরাজ্যভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানায়, রাক্কা ও দেইর ইজোর শহরের কাছে আইএসের ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়, এতে আইএসের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা সহ কয়েকজন নিহত হয়েছে।
আইএস এ বিষয়ে প্রকাশ্যে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।
২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত সিরিয়ান যোদ্ধাদের একটি জোট জানায়, আইএস সিরিয়ায় তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা শেষ অঞ্চলটিও হারিয়েছে। তবে এরপর থেকে সশস্ত্রী গোষ্ঠীটি মাঝেমধ্যে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। জাতিসংঘের অনুমান, এখনও সিরিয়া-ইরাকে গোষ্ঠীটির পাঁচ থেকে সাত হাজার সশস্ত্র সদস্য রয়েছে।
২০১৫ সাল থেকে মার্কিন সেনারা সিরিয়ায় অবস্থান করছে আইএসবিরোধী লড়াইয়ে অন্য বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দিতে।
সিরিয়া সম্প্রতি আন্তর্জাতিক আইএসবিরোধী জোটে যোগ দিয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।