জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বাংলাদেশে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি এ ঘটনায় দায়ীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার আহ্বান জন্য বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) নিউ ইয়র্কে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান জাতিসংঘ প্রধানের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক।
তিনি বলেন, “জাতিসংঘ মহাসচিব বাংলাদেশ সরকারের প্রতি ‘আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের মানদণ্ড অনুসারে একটি দ্রুত, নিরপেক্ষ, পুঙ্খানুপুঙ্খ ও স্বচ্ছ তদন্ত’ পরিচালনা করার আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য সংসদীয় নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময় শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।”
ডুজারিক জানান, জাতিসংঘ প্রধান শান্তির আহ্বান জানিয়ে সব পক্ষকে ‘সহিংসতা থেকে বিরত থাকার, উত্তেজনা কমানোর এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী পরিবেশ বজায় রাখার জন্য সর্বাধিক সংযম প্রদর্শনের’ আহ্বান জানিয়েছেন।
এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্কও একই রকম উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, গত সপ্তাহে গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর হাদির মৃত্যুর ঘটনায় তিনি ‘গভীরভাবে উদ্বিগ্ন’।
জেনেভা থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে তুর্ক বলেন, “প্রতিশোধ কেবল বিভেদকে আরও গভীর করবে এবং সবার অধিকার ক্ষুণ্ন করবে।”
তুর্ক আরো বলেন, “এই সংকটময় সময়ে সাংবাদিকদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও নিরাপত্তার অধিকার সমুন্নত রাখার এবং অস্থিরতা আরো বৃদ্ধি রোধ করার জন্য আমি বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”
গত বছর বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের বিশিষ্ট নেতা শরিফ ওসমান বিন হাদি গত ১২ ডিসেম্বর জুমার নামাজের পর রাজধানীর বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট রোড এলাকায় মোটরসাইকেলে আসা দুই সন্ত্রাসীর গুলিতে মারাত্মক আহত হন। রিকশায় থাকা অবস্থায় তার মাথায় গুলি লাগে। প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকারিভাবে তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়।
তবে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে (এসজিএইচ) তিনি মৃত্যুবরণ করেন।