সাক্ষাৎকার

বাংলা বলা যাবে না, তাই পাকিস্তান এয়ারফোর্স ছেড়েছিলাম : ফজল-এ-খোদা

ফজল-এ-খোদা একাধারে কবি, ছড়াকার, শিশুসাহিত্যিক, সম্পাদক এবং শিশুসংগঠক। তবে গীতিকার হিসেবেই তিনি সমধিক পরিচিত। দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে তিনি গান লিখছেন। তার গানের ভুবন বিচিত্র- দেশাত্মবোধক,  ভক্তিমূলক, আধুনিক, গণসংগীত এবং চলচ্চিত্রের জন্য গান তো রয়েছেই, তিনি লোকগানও লিখেছেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত ‘সালাম সালাম হাজার সালাম’ গানটি আজও শ্রোতাদের উদ্দীপ্ত করে। একাত্তরের অগ্নিঝরা সেই দিনগুলোর শুরুতে যে সময় দেশজুড়ে অসহযোগ আন্দোলন চলছিল, তখন টেলিভিশনে প্রচারিত তার লেখা ‘সংগ্রাম সংগ্রাম সংগ্রাম/ চলবে দিনরাত অবিরাম’ এ দেশের গণসংগীতের প্রকৃষ্ট উদাহরণ হয়ে আছে। স্বাধীনতার পর চলচ্চিত্রের জন্যও তিনি অসংখ্য গান লিখেছেন। এপার ওপার চলচ্চিত্রে তার লেখা ‘ভালোবাসার মূল্য কত আমি কিছু জানি না’ গানটি সে সময় ব্যাপক শ্রোতাপ্রিয় হয়। শুধু তা-ই নয়, বেতার ও টেলিভিশনের একাধিক অনুষ্ঠানের পরিকল্পক, লেখক ও নির্দেশক, বেতার মুখপত্র বেতার বাংলার প্রথম সম্পাদক এবং শিশুসংগঠন ‘শাপলা শালুক’-এর প্রতিষ্ঠাতাও তিনি। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ফজল-এ-খোদা ছড়া ও কবিতাতেও আপন প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। এখন পর্যন্ত তার পাঁচটি কাব্যগ্রন্থ এবং ১০টি ছড়ার বই প্রকাশিত হয়েছে। গান নিয়েও তার একাধিক প্রকাশনা রয়েছে। সরকারি চাকরি ছেড়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ তার যেমন অহংকার, তেমনি ১৯৭৫-এর ৩ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু বেতার কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার মিথ্যা অভিযোগে গ্রেফতার হওয়াও তার জীবনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা। সম্প্রতি রাইজিংবিডির পক্ষ থেকে আমরা তার মুখোমুখি হয়েছিলাম। সেই আলাপচারিতায় উঠে এসেছে বরেণ্য এই মানুষটির জীবনসংগ্রাম, সাহিত্যসাধনা, সংগীতপ্রেম এবং ছেলেবেলার কথা। পাঠকের উদ্দেশে কথোপকথনের গুরুত্বপূর্ণ অংশটুকু তুলে ধরা হলো :  

তাপস রায় : ছেলেবেলায় কী হতে চেয়েছিলেন?

ফজল-এ-খোদা : গান, কবিতা লিখব, এমনটা কখনো ভাবিনি। আমি শিক্ষক হতে চেয়েছিলাম। কারণ শিক্ষকদের যে সম্মান- ক্লাসে গেলে ছাত্ররা একসঙ্গে উঠে দাঁড়ায়, পথে-ঘাটে সবাই সালাম দেয়- এ বিষয়গুলো আমাকে খুব আকৃষ্ট করত।     তাপস রায় : ছড়া দিয়ে আপনার সাহিত্যে হাতেখড়ি। ছড়া লেখার অনুপ্রেরণা আপনি কীভাবে পেলেন?

ফজল-এ-খোদা : আমি পাবনার বেড়া থানার বনগ্রামে নানাবাড়িতে বড় হয়েছি। আমার এক নানিমা মুখে মুখে ছড়া বলতে পারতেন। আনন্দ, ক্ষোভ, অভিমান- সবই তিনি ছড়ার মাধ্যমে প্রকাশ করতেন। তার অদ্ভুত এই গুণ আমাকে মুগ্ধ করত। সেই ছেলেবেলায় নানিমার মুখে ছড়া শোনার জন্য আমি তার কাছে ছুটে যেতাম। এরপর বেড়া বিপিনবিহারী উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে শ্যামাপ্রসাদ দে আমাদের ক্লাসে এসে ভর্তি হলো। সে একদিন করাচি থেকে প্রকাশিত দিগন্ত পত্রিকাটি দেখিয়ে বলল, তাতে তার একটি কবিতা ছাপা হয়েছে। বিষয়টি আমাকে খুব নাড়া দেয়। আমি ওর দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে ছড়া-কবিতা লিখে পত্রিকায় পাঠাতে থাকি। ১৩৬৫ সনের ৯ শ্রাবণ আমার স্বপ্ন সত্যি হয়। সেদিন ইত্তেফাক-এর কচি-কাঁচার আসরে ‘খোকার বাহাদুরী’ শিরোনামে আমার ছড়া প্রথম প্রকাশিত হয়। তবে আমার লেখা প্রথম ছড়া ওটা ছিল না। ‘এক যে ছিল বুড়ি,/ বয়স তার পাঁচ কুড়ি!/ চুলগুলো সব পাকা,/ কপালে তিলক আঁকা’ এটিই ছিল আমার লেখা প্রথম ছড়া। যা-ই হোক, এই ছড়াও সংবাদের ‘খেলাঘর’ পাতায় পরে প্রকাশিত হয়েছিল।

এখানে একটি কথা জানিয়ে রাখি, ইত্তেফাক-এ ছড়া প্রকাশিত হওয়ার পর মা আমাকে একটি পুরোনো খাতা দিয়ে বলেছিলেন, ‘তোর আব্বাও কবিতা লিখত। কবির ছেলে কবিই তো হবি।’ মায়ের কথা এবং বাবার কবিতার সেই খাতাটি আমাকে সেদিন ভীষণ অনুপ্রেরণা দিয়েছিল।  

তাপস রায় : গীতিকার হিসেবেই আপনি বেশি পরিচিত। গানের প্রতি ভালোবাসা কীভাবে তৈরি হলো?

ফজল-এ-খোদা : নানার গ্রামটি ছিল হিন্দুপ্রধান। গ্রামে বারো মাসে তেরো পার্বণ লেগেই থাকত। তখন গানবাজনা হতো। তা ছাড়া গ্রামে প্রায় প্রতিরাতে যাত্রাগান, পালা, কীর্তন হতো। বড় মামা এগুলো পছন্দ করতেন। আমি বায়না ধরলে সঙ্গে নিয়ে যেতেন। গানের প্রতি ভালোলাগাটা তখন থেকেই। একবার আমাদের স্কুলে ‘বাসন্তী অপেরা’ এল। আমি গান শুনে এতটাই মুগ্ধ হয়ে গেলাম যে, ওরা যখন চলে যায়, ওদের সঙ্গে আমিও চলে গিয়েছিলাম। সে আরেক ঘটনা!

গানের প্রতি টান আমার ছোটবেলা থেকেই। বড়দের কাছে শুনতাম, যারা কবির লড়াই করেন তারা তেমন শিক্ষিত নন। অথচ কী সুন্দর তাদের গান! মনে মনে গান রচনা করে তারা স্মৃতিতে রেখে দিতেন। গানের আসরে ডাক পড়লে তখন গাইতেন। আবার অনেকে তাৎক্ষণিক গান রচনা করে আসরে গাইতেন। বিষয়গুলো আমাকে ভীষণ আলোড়িত করত। তা ছাড়া আমার এক সহপাঠী বন্ধু ছিল, মদনমোহন দাস। আমরা যখনই গান শুনতে চাইতাম ও গেয়ে শোনাত। ওকে বন্ধু হিসেবে পেয়ে একসময় গান আমার নিত্যসঙ্গী হয়ে গেল।

তাপস রায় : বাংলায় কথা বলা যাবে না- এর প্রতিবাদে আপনি পাকিস্তান এয়ারফোর্সে সুযোগ পেয়েও ছেড়ে চলে এসেছিলেন। ঘটনাটি বিস্তারিত শুনতে চাই।

ফজল-এ-খোদা : ১৯৫৯ সালের ঘটনা। আমি আর মদন কলেজে পড়ার সময়ই পাকিস্তান এয়ারফোর্সে ক্যাডেট হিসেবে যোগ দিই। এয়ারফোর্স রিক্রুটিং স্কুলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হতো। একদিন গ্রাউন্ড ট্রেনিং ইনস্ট্রাক্টর জহুরুল হক (আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম অভিযুক্ত) বললেন, তুই নাকি লিখতে পারিস? দেশের একটা গান লিখে ফেল। মদন সুর করে অনুষ্ঠানে গাইবে। ওরা পাঞ্জাবি, সিন্ধি, বেলুচি, পশতু গান গায়, তোরা বাংলায় একটা গান গাইতে পারবি না?

আমি আমার জীবনের প্রথম গান লিখে ফেললাম, ‘আমাদের দেশটা সুজলা সুফলা,/ কী সুন্দর কী চমৎকার মুখে যায় না বলা’- সেই থেকে আমার গান লেখা শুরু।

তবে এয়ারফোর্সে আমার আর থাকা হয়নি। কারণ বাংলায় কথা বলেছিলাম বলে আমার শাস্তি হয়। অথচ এটা ছিল ভীষণ অন্যায়। বাঙালিদের প্রতি অবিচার। সেখানে পাঞ্জাবি-সিন্ধি-বেলুচ-পাঠানেরা তাদের ভাষায় কথা বলে, কোনো দোষ হয় না অথচ বাংলা বললেই শাস্তি! এ অন্যায় মেনে নিতে পারিনি। এয়ারফোর্স ছেড়ে চলে আসি। আমি চলে আসায় পরে মদনও চলে আসে।  

তাপস রায় : ‘সালাম সালাম হাজার সালাম’ গানটি লেখার পেছনের ঘটনা জানতে চাই। মনে পড়ে?

ফজল-এ-খোদা : ১৯৬৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাতে গানটি লিখেছিলাম। তখন দেশের মানুষ স্বাধিকারের জন্য প্রাণ দিচ্ছে। বিক্ষুব্ধ সময় পাড় করছিলাম আমরা। আমি একদিন শিল্পী বশির আহমদকে বললাম, ভাষাশহিদের জন্য গান লেখা হয়েছে। কিন্তু এখন যারা পাকিস্তানের অন্যায়-জুলুমের প্রতিবাদ করতে গিয়ে শহিদ হচ্ছে সেসব অগণিত শহিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে একটি গান লিখলে কেমন হয়? আমরা শহিদদের সালাম জানাতে পারি, পাশাপাশি সেই গানে তুলে ধরতে পারি আমাদের অব্যাহত সংগ্রামের কথা।

বশির সোৎসাহে সম্মত হতেই বাসায় ফিরে রাতেই গানটি লিখে ফেলি। ফেরার পথে রিকশায় আমার মনের মধ্যে হঠাৎ একটি বাণী গুনগুনিয়ে ওঠে- সালাম সালাম হাজার সালাম সকল শহিদ স্মরণে। আমি একটা ঘোরের মধ্যে আওড়াতে থাকলাম- সালাম সালাম…। যতই আওড়াই ততই ভালো লাগে।

তবে গানটি কিন্তু প্রচারিত হয় অনেক পরে। সে আরেক ঘটনা। সম্ভবত ১৯৭১ সালের ১১ মার্চ। একদিন শিল্পী আবদুল জব্বার বললেন, বঙ্গবন্ধু বলেছেন, এখন থেকে বেতার-টিভিতে বাংলায় গান হতে হবে- এমন গান, যে গান শুনে মানুষ শহিদ হওয়ার জন্য প্রাণ বাজি রাখবে। এবং সেই গান তোমাকেই লিখতে হবে। আমি তখন তাকে ‘সালাম সালাম’ গানটির কথা বললাম।

সে গানের লেখা পড়ে মুগ্ধ হয়ে আমাকে নিয়ে চলল বঙ্গবন্ধুর কাছে। বঙ্গবন্ধু রেডিওতে গানটি প্রচারের অনুমতি দিলেন। কিন্তু গোল বাধালেন তৎকালীন রেডিওর সংগীত বিভাগের প্রধান নাজমুল আলম। তার আপত্তি গানের মধ্যে ‘বাংলাদেশের লাখো বাঙালি, জয়ের নেশায় চলে রক্ত ঢালি’ নিয়ে। বাঙালিদের রক্ত ঢালার কথা বলা যাবে না। কারণ পাকিস্তান আর্মি-পুলিশ তো দুষ্কৃতকারীদের শায়েস্তা করছে। তারা সাধারণ মানুষকে তো মারছে না।

জব্বার তো তার অদ্ভুত এই যুক্তি শুনে রেগে গেলেন। আমরা ছুটলাম ঢাকা বেতারের আঞ্চলিক পরিচালক আশরাফ-উজ-জামান খানের কাছে। তিনি সব শুনে বললেন, একটি কথার জন্য এই গানের প্রচার বন্ধ করে দেওয়া ঠিক হবে না। ‘রক্ত ঢালি’ শব্দটি বদলে দিলেই হবে।

আমি ‘চলে রক্ত ঢালি’ বদলে ‘আনে ফুলের ডালি’ লিখে দিলাম। ১৪ মার্চ গানটি রেকর্ডের পর সেদিন থেকেই প্রচারিত হতে থাকল। এরপর তো ইতিহাসই হয়ে গেল।  

তাপস রায় : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে কোনো স্মৃতি কী এই মুহূর্তে মনে পড়ছে?

ফজল-এ-খোদা : সেই অগ্নিঝরা মার্চে একটি গান লিখেছিলাম- সংগ্রাম সংগ্রাম সংগ্রাম,/ চলবে দিনরাত অবিরাম… বাংলার জয় মানে না যারা/ পিটাও তাদের পিটাও। গানটি বঙ্গবন্ধুর খুব পছন্দ হয়। একদিন তিনি আবদুল জব্বারকে বললেন, তুই আজ মিছিলে যে গানটা গাইলি, আরেকবার শোনা তো। জব্বার গানটা পুনরায় গাইতেই বঙ্গবন্ধু উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে বললেন, আমরা শয়তানদের লাঠি দিয়া পিটায়া সোজা করতে পারতেছি না, আর তোরা কলম দিয়া পেটাতে শুরু করলি? পিটা, পিটা আরো পিটা। এইরকম গান এখন অনেক চাই। আমি তখন জব্বারের পাশে দাঁড়িয়ে। বঙ্গবন্ধুর এই কথাগুলো এখনো আমার কানে বাজে।  

তাপস রায় : ১৯৭৫ এর ৩ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু বেতার কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার মিথ্যা অভিযোগে আপনাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সেখান থেকে কীভাবে ছাড়া পেলেন?

ফজল-এ-খোদা : বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হওয়ার পর ‘বাংলাদেশ বেতার’ কোনো ঘোষণা ছাড়াই খুনিদের ইচ্ছায় রেডিও পাকিস্তানের ধাঁচে ‘রেডিও বাংলাদেশ’ হয়ে গেল। আমাদের ওপর নেমে এল নানা রকম নির্যাতন। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীরা রাতের অন্ধকারে আমাকেও তুলে নিয়ে গিয়েছিল। এই হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে ওরা আমার প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বলেছিলাম, ‘পিতার মৃত্যুতে সন্তানের যেমন অনুভূতি হয়, আমারও তেমন অনুভূতি হচ্ছে।’

ওরা ছেড়ে দেবে ভাবিনি। কিন্তু ওদের একজনের কাছে কীভাবে যেন খবর এল, আমি ‘সালাম সালাম হাজার সালাম’ গানের লেখক। এটা জানার পর ওরা আমাকে সেদিন ছেড়ে দিয়েছিল। যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে তাদের কাছ থেকে এই গানের জন্যই সেদিন বেঁচে ফিরে এসেছিলাম।  

তাপস রায় : আপনি এখনো কি গান শোনেন? আপনাদের সময়ের গান এবং এখনকার গান পার্থক্যটা আসলে কোথায়? এখনকার গান কেমন লাগে?

ফজল-এ-খোদা : টেলিভিশনে মাঝে মাঝে গান শোনা হয়। কিন্তু এখনকার গানের স্থায়িত্ব নেই। মিডিয়ার কল্যাণে শিল্পীরা খুব সহজেই সবকিছু পেয়ে যাচ্ছে। ফলে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার জন্য যে শ্রম, সাধনা এগুলোর প্রয়োজন পড়ছে না। একটি কথা না বলে পারছি না, গান সাধনার বিষয়। সব সময় গুরু ধরে, সাধনা করলেই যে হবে, এমনও কিন্তু নয়। ঈশ্বরপ্রদত্ত একটি ব্যাপার এখানে থাকতে হয়। আমার কথা খুব স্পষ্ট, যার গাইবার গলা নেই, তার গান গাওয়া উচিত নয়।    

তাপস রায় : একজন গীতিকারের কোন বিষয়গুলো জানা উচিত বলে আপনি মনে করেন?

ফজল-এ-খোদা : লেখার আগে পড়তে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। আপনি কী গান লিখছেন সেই গানটি বুঝে লিখতে হবে। দেশাত্মবোধক গান, লোকগান, প্রেমের গান সব কিন্তু এক হবে না। আপনি গণসংগীত লিখবেন অথচ কাজী নজরুল ইসলাম পড়বেন না। তার কালজয়ী ‘চল চল চল…’ জানবেন না, এটা তো হতে পারে না। বিশেষ করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, দ্বিজেন্দ্রলাল রায়, রজনীকান্ত সেন, অতুলপ্রসাদ সেন এবং অবশ্যই কাজী নজরুল ইসলাম পড়তে হবে। তাদের গান হৃদয় দিয়ে অনুভব করতে হবে। তারা কীভাবে লিখেছেন, কেন লিখেছেন চেষ্টা করে বুঝতে হবে।

আমি ওস্তাদ বারীন মজুমদারের কলেজ অব মিউজিকের প্রথম ছাত্র ছিলাম। আমার সৌভাগ্য আমি সে সময় সংগীত নিয়ে পড়াশোনার সুযোগ পেয়েছিলাম। অনেক জ্ঞানী-গুণী লোকের সান্নিধ্যে এসেছিলাম। সব সময় সংগীত নিয়ে থেকেছি। অথচ একটি গানও কখনো গাইতে পারিনি। ওই যে বললাম, ওটা ঈশ্বরপ্রদত্ত। আমি লিখতে চেয়েছি এবং সেভাবেই চেষ্টা করেছি।