আইন ও অপরাধ

গণমাধ্যমকে আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না : তথ্যমন্ত্রী

রাবি প্রতিনিধি : ‘তথ্য কোনো পণ্য নয়; তথ্যের একটি সামাজিক মাত্রা আছে। সেজন্য গণমাধ্যমের দায়বদ্ধতা আছে। সেই দায়বদ্ধতা সমাজের প্রতি, সেই দায়বদ্ধতা নারীর সম্ভ্রমের প্রতি, সেই দায়বদ্ধতা শিশুর নিরাপত্তা, সেই দায়বদ্ধতা ভূখ- ও ইতিহাসের প্রতি, মানবমুক্তির আদর্শের প্রতি, বাংলাদেশের জন্য মুক্তিযুদ্ধের প্রতি। এই দায়বদ্ধতা অস্বীকার করলে গণমাধ্যম সমাজের দর্পণ হিসেবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমরা আইন দ্বারা এদেরকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাই না, করা সম্ভবও না। কিন্তু আপনার বিবেক ও চেতনা দ্বারা এই দায়বদ্ধতাকে স্বীকার করে সাংবাদিকদের পেশায় কর্মরত থাকতে হবে।’ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) সিনেট ভবনে আয়োজিত ‘জাতীয় উন্নয়নে আঞ্চলিক সাংবাদিকতা: সমস্যা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগিতায় বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট এ সেমিনারের আয়োজন করেছে।সাংবাদিকদের উদ্দেশে তথ্যমন্ত্রী বলেন, গণমাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা ও রাজাকারদের একপাল্লায় না মাপতে সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, গণমাধ্যমের মধ্যে সংবাদে ব্যালেন্স (ভারসাম্য) করার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। গণমাধ্যমের দায়িত্ব ব্যালেন্স করা নয়। আপনি বস্তুনিষ্ঠ হবেন, আপনি সরকারের ভুল-ত্রুটির ব্যাপারে সরকারের সমালোচনা মুখর হবেন, নিরপেক্ষতার নামে জঙ্গিবাদকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে একপাল্লায় মাপা কিংবা রাজাকার ও মুক্তিযোদ্ধাকে একপাল্লায় মেপে সমাজে রাজাকারদের প্রতিষ্ঠা করার দুর্ষ্কমে কোনো সংবাদকর্মী লিপ্ত হবেন না বা চেষ্টাও করবেন না।বাংলাদেশের গণমাধ্যম কখনো খলনায়ক হয় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমানে খ-িত তথ্য, তথ্য চাপা দেওয়া, ইতিহাস বিকৃতি করা, তথ্য বিকৃতি করার এই প্রবণতা রয়েছে। খ-িত তথ্যের ছাপ থেকে, তথ্য চাপা দেওয়া ও অপ-সাংবাদিকতার ঝোঁক থেকে গণমাধ্যমের পবিত্রতা রক্ষা করার দায়িত্ব গণমাধ্যমকর্মীদের। এটি গণমাধ্যম কর্মীদের একার দায়িত্ব নয়, রাষ্ট্র, সমাজ, সরকার যৌথভাবে তথ্য সন্ত্রাসের ছাপ ও হলুদ সাংবাদিকতা থেকে গণতন্ত্রকে রক্ষা করবেন। গণমাধ্যম সব সময় গণতন্ত্র-উন্নয়নশীল-অর্থনীতির স্নেহময়ী মা হিসেবে গণতন্ত্র ও আমাদেরকে শাসনও করবেন, আদরও করবেন ও প্রসংশাও করবেন।উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুহম্মদ মিজানউদ্দিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপউপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী সারওয়ার জাহান। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন পিআইবির মহাপরিচালক শাহ আলমগীর। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনায় ছিলেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শাতিল সিরাজ।উদ্বোধনী পর্ব শেষে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সভাপতি ড. প্রদীপ কুমার পা-ে। মূল প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন পিআইবির প্রাক্তন মহাপরিচালক ও রাবির সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস। এ ছাড়া আলোচক ছিলেন সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মশিহুর রহমান, স্থানীয় দৈনিক সোনালী সংবাদের সম্পাদক লিয়াকত আলী, স্থানীয় দৈনিক সোনার দেশের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক আকবারুল হাসান মিল্লাত, রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাজী শাহেদ প্রমুখ।

     

রাইজিংবিডি/রাবি/১৩ অক্টোবর ২০১৫/মেহেদী হাসান/রিশিত