আইন ও অপরাধ

এজলাসে আইনজীবীর ওপর চড়াও আরেক আইনজীবী

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা : খুলনায় আদালত চলাকালীন এজলাসের মধ্যেই আসামিপক্ষের আইনজীবীর ওপর হামলা করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী। প্রচণ্ড আঘাতে আইনজীবী সুজিত সাহার (৫৫) কান দিয়ে রক্ত ঝরতে শুরু করে এবং তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। একটি যৌতুক মামলার চার্জ গঠনের শুনানিকালে বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে খুলনার মহানগর হাকিম মো. সাহিদুল ইসলামের আদালতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার জেরে কিছুক্ষণ পরই হামলাকারী আইনজীবী দিপংকর মন্ডলের ওপর আদালত চত্বরেই হামলা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে দুইপক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। তবে উভয়পক্ষই বিষয়টির ব্যাপারে আইনজীবী সমিতির সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন। হামলার শিকার আইনজীবী সুজিত সাহা জানান, মহানগর হাকিম মো. সাহিদুল ইসলামের আদালতে যৌতুক নিরোধ আইনের চার ধারার একটি মামলার চার্জ গঠনের শুনানিকালে তার জুনিয়র অ্যাডভোকেট সালমা আক্তার চৌধুরী শম্পাকে বাদীপক্ষের আইনজীবী দিপংকর মন্ডল নানাভাবে নাজেহাল করছিলেন। বিষয়টি শম্পা তাকে জানালে তিনি তাকে সহযোগিতার জন্য আদালতে উপস্থিত হন। এমনকি অ্যাডভোকেট দিপংকর মন্ডল তাকেও নানাভাবে অপদস্থ করার চেষ্টা করেন। কথা-বার্তার এক পর্যায়ে দিপংকর তার বাম কানে আঘাত করেন। এতে তার কান থেকে রক্ত বের হতে থাকে এবং তিনি অচেতন হয়ে এজলাসের মধ্যেই পড়ে যান। পরে সহকর্মীরা তাকে উদ্ধার করে জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। এজলাসের মধ্যেই প্রতিপক্ষ আইনজীবীর এ ধরনের আচরণে তিনি হতভম্ব হয়ে যান। অ্যাডভোকেট সালমা আক্তার চৌধুরী শম্পা বলেন, মারমুখী হলে আদালত বার বার দিপংকর মন্ডলকে থামতে বলেন। এমনকি আদালতে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরাও তাকে ঠেকানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তিনি কোনো বাঁধা না মেনেই সিনিয়র সুজিত সাহাকে আঘাত করেন। এতে আদালতও হতবাক হয়ে যায়। এ ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে অ্যাডভোকেট সুজিত সাহার পক্ষের আইনজীবীরা ক্ষুব্ধ হয়ে মহানগর হাকিম আদালতের পেছনের বারান্দায় দিপংকর মন্ডলের ওপর হামলা চালিয়ে তাকেও মারধর করে। অভিযোগ অস্বীকার করে দিপংকর মন্ডল বলেন, দু’জনের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সুজিত সাহা প্রথমেই তাকে দু’বার আঘাত করেন। এক পর্যায়ে নিজেকে কন্ট্রোল করতে না পেরে তিনিও তাকে আঘাত করেন। এমনকি ঘটনার পরও তাকে মারধর করা হয়েছে। বিষয়টি ভুল বোঝাবুঝি উল্লেখ করে পুরো ঘটনাকে দুঃখজনক বলেন তিনি। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট বিজন কৃষ্ণ মন্ডল এ প্রতিবেদককে বলেন, ঘটনার পর তিনি ঘটনাস্থল মহানগর হাকিম মো. সাহিদুল ইসলামের খাস কামরায় উপস্থিত হয়ে ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তবে ভবিষ্যতে যেন আদালত প্রাঙ্গণে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে সে বিষয়ে আদালত সকলকে সতর্ক থাকতে বলেছেন। বিষয়টি সিনিয়র আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে মীমাংশার উদ্যোগ নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। রাইজিংবিডি/খুলনা/১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/মুহাম্মদ নূরুজ্জামান/বকুল