আইন ও অপরাধ

রাজিব হত্যা : রানাসহ দুজন রিমান্ডে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ব্লগার রাজিব হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী রেদোয়ানুল আজাদ রানা ও আশরাফ নামে তার এক সহযোগীর পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা মহানগর হাকিম মুহাম্মদ মাজহারুল ইসলামের আদালত রিমান্ডের আদেশ দেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা-পশ্চিম থানার পুলিশ পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম সন্ত্রাসবিরোধ আইনে করা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আসামিদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।

 

রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, আসামিরা জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের সদস্য। আসামিদের মধ্যে রানা ব্লগার রাজিব হত্যাকাণ্ডের মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। রাজিবকে হত্যা করে ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মালয়েশিয়া চলে যায়। সেখানে গিয়ে জঙ্গি সংগঠনের বাংলাদেশে অবস্থানরত সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখে নাশকতার পরিকল্পনা করে। সেখানে মালয়েশিয়ান পুলিশ তাদের আটক করে । ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশে এসে পুনরায় স্থানীয় সহযোগী জঙ্গিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জঙ্গি কার্যক্রম পরিচালনার চেষ্টা করে। রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপসহ টার্গেট কিলিং বাস্তবায়ন করার জন্য পরিকল্পনায় একত্রিত হয়।

আসামিদের সঠিক নাম-ঠিকানা, অজ্ঞাত সহযোগীদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহপূর্বক গ্রেপ্তার, রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপের পরিকল্পনাসংক্রান্ত অন্যান্য তথ্য সংগ্রহসহ আলামত উদ্ধারের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।

অপরদিকে আসামি রানার পক্ষে তার আইনজীবী হাফেজ আহমেদ রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের শুনানি করেন। অপর আসামি আশরাফের পক্ষে আইনজীবী ছিল না। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে প্রত্যেকের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। প্রসঙ্গত, সোমবার দুপুরে রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটি) ইউনিট তাদের গ্রেপ্তার করে। উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে পল্লবী থানা এলাকার ব্লগার রাজিব হায়দারকে হত্যা করে জঙ্গিরা। এ হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ছিল রেদোয়ানুল আজাদ রানা। ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর হত্যা মামলায় আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। তিনি নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র। ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের কর্মকর্তারা বলেছেন, রাজীবকে হত্যার পর রেদোয়ানুল মালয়েশিয়ায় পালিয়ে যান। তিনি আগে আল-কায়েদার মতাদর্শ অনুসরণকারী আনসারুল্লাহর সঙ্গে যুক্ত থাকলেও মালয়েশিয়ায় জঙ্গি সংগঠন আইএসের দিকে ঝুঁকে পড়েন। সিরিয়ায় যাওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। তিনি ফিলিপাইনে আবু সায়াফ জঙ্গি দলের কাছে যাওয়ার সময় মালয়েশিয়ায় ধরা পড়েন। সোমবার রেদোয়ানুল ও আশরাফ নামে তার এক সহযোগীকে দেশে ফেরত পাঠায় মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ। পরে উত্তরা থেকে দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। ইউনিটটির  প্রধান মনিরুল ইসলাম এসব তথ্য জানান। রাইজিংবিডি/ঢাকা/২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/মামুন খান/মুশফিক