আইন ও অপরাধ

নারী নির্যাতনের মামলায় ক্রিকেটার সানীর জামিন

নিজস্ব প্রতিবেদক : নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে দায়ের করা মামলায় জাতীয় দলের ক্রিকেটার আরাফাত সানীকে এক মাসের জামিন দিয়েছেন আদালত। শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লার আদালত আগামি ১০ এপ্রিল পর্যন্ত সানীর জামিন মঞ্জুর করেন। তবে এ মামলায় জামিন পেলেও তথ্য-প্রযুক্তির মামলায় কারাগারে আটক রয়েছেন আরাফাত সানী। গত ২০ ফেব্রুয়ারি মামলাটিতে আরাফাত সানীর জামিন আবেদন করেন তার আইনজীবী এম. জুয়েল আহমদ এবং মুরাদুজ্জামান মুরাদ। ওই দিন আদালত জামিন শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ ২০১৭) দিন ধার্য করেন। সানীর পক্ষে জামিন শুনানি করেন এম. জুয়েল আহমদ। তিনি বলেন, ‘পারিবারিকভাবে বাদীপক্ষের সাথে আরাফাত সানীর পরিবারের সমঝোতার কথাবার্তা চলছে। এছাড়া দীর্ঘদিন তিনি কারাগারে রয়েছেন। আর বাদী নাসরিন সুলতানা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তিনি জামিনের বিরোধীতা করেননি। কীভাবে সমঝোতা হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পারিবারিকভাবে সমঝোতার কথা চলছে- এটা আমরা জানতে পেরেছি। আরাফাত সানী কারাগারে রয়েছেন। আর নাসরিন সুলতানাও কিছুটা নমনীয় হয়েছেন। সানী কারাগার থেকে বের হয়ে এলে তাকে ঘরে তুলে নেবে বা কি করবে সেটা এখনো জানতে পারি নি।’ গত ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার চার নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এসএম রেজানুর রহমানের আদালতে মামলাটি করে সানীর স্ত্রী দাবিদার নাসরিন সুলতানা। ওই দিন আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণের পর মোহাম্মদপুর থানাকে মামলার অভিযোগ বিষয়ে তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। মোহাম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জামাল উদ্দীন মীর গত ৮ ফেব্রুয়ারি মামলাটি এজাহার হিসেবে রেকর্ড করে ঢাকা সিএমএম আদালতে নথি প্রেরণ করেন। এরপর আদালত মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। এই মামলায় আরাফাত সানীর মা নার্গিস আক্তারও আসামি। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নিয়েছেন। এর আগে ১২ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় আরাফাত সানীর রিমান্ডের আবেদন করা হলে আদালত তা নামঞ্জুর করেন। এদিন সানীর  জামিনের আবেদন করা হলে আদালত সেটিও নামঞ্জুর করেন। মামলায় বলা হয়, সাত বছর আগে পরিচয়ের সূত্র ধরে উভয়ের ঘনিষ্ঠতা হয়। একপর্যায়ে তারা দুজন দুজনকে ভালবাসেন। ২০১৪ সালের ৪ ডিসেম্বর অভিভাবকদের না জানিয়ে তারা বিয়ে করেন। কিন্তু বিয়ের তিন বছরেও সানী দুই পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে নাসরিন সুলতানাকে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘরে তুলে নেননি। বারবার এ বিষয়ে চাপ দিলেও তিনি কালক্ষেপণ করেন। এরপর গত বছর ১২ জুন রাত ১টা ৩৫ মিনিটে নাসরিন সুলতানা (Nasrin Sultana) নামের একটি ভুয়া ফেসবুক আইডি থেকে নাসরিন সুলতানার আসল ফেসবুক মেসেঞ্জারে সানী-নাসরিনের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের কিছু ছবি পাঠানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে তথ্য প্রযুক্তি আইনে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন নাসরিন সুলতানা। গত ২২ জানুয়ারি সানীর মা নার্গিস আক্তার থানার সামনে বাদীকে মারধর করেন। এ বিষয়ে ওই দিন থানায় অভিযোগ করলেও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় পরবর্তী সময়ে আদালতে মামলা করেন নাসরিন সুলতানা। প্রসঙ্গত, নাসরিন সুলতানা গত ৫ জানুয়ারি সানীর বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় তথ্য প্রযুক্তি আইনে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় গত ২২ জানুয়ারি সানীকে ঢাকার সাভার থানাধীন আমিনবাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই দিন তার এক দিনের রিমান্ডও মঞ্জুর করেন আদালত। ২৪ জানুয়ারি রিমান্ড শেষে সানীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। এরপর থেকে সানী কারাগারেই আছেন। এদিকে তথ্য প্রযুক্তি আইনের মামলায় রিমান্ড চলাকালে সানীর বিরুদ্ধে ২৩ জানুয়ারি যৌতুক আইনের ৪ ধারায় বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করেন নাসরিন সুলতানা। ওই মামলায় সানীকে আগামী ৫ এপ্রিলের মধ্যে আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেছেন আদালত।

   

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৯ মার্চ ২০১৭/মামুন খান/শাহনেওয়াজ