আইন ও অপরাধ

বাকপ্রতিবন্ধী রানুকে হস্তান্তরের আদেশ ২৩ এপ্রিল

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর রাস্তা থেকে উদ্ধার হওয়া বাকপ্রতিবন্ধী শিশু রানু সাদিয়াকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তরের বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী ২৩ এপ্রিল দিন ধার্য করেছেন আদালত। মঙ্গলবার ঢাকার শিশু আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক জাহিদুল কবির এ দিন ধার্য করেন। মঙ্গলবার রানুকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তরের জন্য দিন ধার্য ছিল। এজন্য রানুকে গাজীপুরের কিশোরী উন্নয়ন কেন্দ্র থেকে আদালতে হাজির করা হয়। সেখানে রানুকে নিতে আদালতে আবেদন করেন তার ফুফু গুলবাহার। এ আবেদনের ওপর শুনানি শেষে বিচারক ২৩ এপ্রিল পরবর্তী দিন ধার্য করেন। রানুর ফুফু গুলবাহার বলেন, ফেসবুকের মাধ্যমে রানুর কথা জানতে পারি। এরপর টঙ্গী কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে গিয়ে খবর নেই। সেখান থেকে আমাদের গাজীপুরের কিশোরী উন্নয়ন কেন্দ্রে যোগাযোগ করতে বলা হয়। এরপর আমরা সেখানে যোগাযোগ করি। তিনি আরো বলেন, ছোট থেকেই রানুকে লালন-পালন করেছি আমি। রানু হারিয়ে গেলে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাইনি। রানুর ছোট বোন আনু আমার বোন ফাতেমার কাছে বড় হচ্ছে। গুলবাহার জানান, রানুরা দুই বোন। দুজনই বাকপ্রতিবন্ধী। তার বাবা দানা মিয়া মালয়েশিয়া যাওয়ার পর তার আর কোনো খবর নেই। বেঁচে আছেন কি না, তাও জানা যায়নি। দুই মেয়ে বোবা হওয়ায় তাদের মা সুফলা বেগম তাদের ফেলে অন্যত্র বিয়ে করেছেন। তাদের কোনো খোঁজ-খবর নেন না। এদিকে রানু তার ভাষায় বোঝানোর চেষ্টা করছে যে, গুলবাহারই তার ফুফু। সে তার কাছে ফিরে যেতে চায়। রানুর আইনজীবী ফারুক আহমেদ বলেন, মেয়েটির বাবা নেই। মায়ের অন্যত্র বিয়ে হয়ে গেছে। তার ফুফু গুলবাহার তাকে নিতে এসেছেন। কিন্তু আদালত রানুর ছোটবেলার কিছু ছবি চাচ্ছেন। আদালতকে আমরা বলেছি, ছোটবেলায় সে একটি স্কুলে ভর্তি হয়েছিল। সেই স্কুলের সার্টিফিকেট সংগ্রহ করছি। আদালত আগামী ২৩ এপ্রিল স্কুলের সার্টিফিকেট নিয়ে আসতে বলেছেন। সেদিন আদালত রানুকে তার ফুফুর জিম্মায় দেবেন বলে আশা করছি। জানা গেছে, রানুকে আদালতে নিয়ে আসার পর আদালতের অনুমতি নিয়ে রানুর আইনজীবী ফারুক আহমেদ তাকে কেউ চেনেন কি না এ বিষয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। এর কিছুদিন পর রানুর এক সৌদি প্রবাসী আত্মীয় তাকে চিনতে পারেন। এরপর ওই লোক রানুর ফুফু গুলবাহারকে বিষয়টি জানান। এরপর তারা যোগাযোগ করে রানুকে জিম্মায় নেওয়ার আবেদন করেন। এদিকে যখন রানু জানতে পারে যে সে আজ তার ফুফুর সাথে যেতে পারবে, তখন সে কান্নাকাটি শুরু করে। তার ফুফুকেও এ সময় কাঁদতে দেখা যায়। মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১৯ আগস্ট রাত ১১টায় খিলগাঁও চৌরাস্তায় মুসলিম হোটেলের সামনে সবুজ নামের এক ছেলে বাকপ্রতিবন্ধী মেয়েটিকে দেখতে পান। পরে তিনি তাকে নিয়ে খিলগাঁও থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। আদালত পরিবারের কোনো সন্ধান না পেয়ে মেয়েটিকে গাজীপুরের কিশোরী উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠান। রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৮ এপ্রিল ২০১৭/মামুন খান/রফিক