আইন ও অপরাধ

শিশু ও মৃত ব্যক্তিকে আসামি : বাদীকে তলব

নিজস্ব প্রতিবেদক : মারধর ও চুরির একটি মামলায় শিশু এবং মৃত ব্যক্তিকে আসামি করায় বাদী হাবিবুর রহমানকে তলব করেছেন আদালত। মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর হাকিম খুরশীদ আলম রাজধানীর মিরপুর থানাধীন ৫৩, মধ্য পাইকপাড়ার এ বাসিন্দাকে আগামী ২৩ মে স্বশরীরে আদালতে হাজির হয়ে একজন মৃত ব্যক্তিকে এবং একটি শিশুকে এজাহারে আসামি করার কারণ লিখিতভাবে দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এর আগে শিশু রুবেল ও শিশুর বাবা আবুল কাশেমের আইনজীবী মুহাম্মাদ শফিকুল ইসলাম শিশু ও মৃত ব্যক্তিকে আসামি করার কারণে মামলার বাদীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণের আবেদন করেন। তিনি বলেন, ‘মামলার বাদী এজাহারে যে ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন সেই ঘটনার সময় শিশু রুবেলের বয়স ছিল মাত্র ২০ দিন। অন্যদিকে অভিযোগপত্রের মৃত ব্যক্তি আরিফুর রহমান ঘটনার তিন বছর আগে মারা গেছেন। কীভাবে বাদী তাদের আসামি করলেন। আমরা তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণের আবেদন জানাচ্ছি।’ এদিকে আজ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার এসআই মারুফুল ইসলামের স্বশরীরে আদালতে হাজির হয়ে কারণ দর্শানোর দিন ধার্য ছিল। কিন্তু তিনি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন জানিয়ে ১০ দিনের সময় আবেদন করেন। আদালত সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে তাকে আগামী ২৮ মে হাজির হয়ে কারণ দর্শাতে নির্দেশ দিয়েছেন। আদালতের মিরপুর থানা শাখার জিআরও এসআই আলতাফ হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন। মৃত ব্যক্তি এবং ১১ মাসের শিশুর বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়ার খবর মিডিয়ায় প্রকাশ পাওয়ার পর গত ১৪ মে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মারুফুল ইসলামকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে ডিএমপির মিরপুর জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) কাজী মাহবুবুল আলম এবং মিরপুর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মো. সাজ্জাদ হোসেনকে প্রত্যাহার ও সতর্ক করা হয়েছে। অভিযোগপত্রের ওই শিশু রুবেল (১১ মাস) রাজধানীর মিরপুর থানাধীন ৩৩৮ উত্তর পীরেরবাগের আবুল কাশেমের ছেলে। আবুল কাশের নিজেও ওই মামলার আসামি। অন্যদিকে অভিযোগপত্রের মৃত ব্যক্তি আরিফুর রহমান (৪৫) রাজধানীর মিরপুর থানাধীন ১৭৮/বি মধ্য পাইকড়ার মৃত মাহবুব উল্লাহর ছেলে। মামলার নথিতে দেখা যায়, ২০১৬ সালের ২৬ জুন বাদী মিরপুর থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন। যার মিরপুর মামলা নম্বর ৪৬(৬)১৬। ধারা- দণ্ডবিধির ১৪৩/৪৪৭/৪২৭/৩২৩/৩৭৯ ও ৫০৬। মামলায় মোট ২৩ জনসহ অজ্ঞাতনামা আরো ২০/২৫ জনকে আসামি করা হয়। এজাহারের ২৩ জন জ্ঞাত আসামির মধ্যে শিশু রুবেলের বাবার নাম ২ নম্বরে, মৃত ব্যক্তির নাম ১২ নম্বরে এবং শিশু রুবেলের নাম ২০ নম্বরে দেওয়া আছে। এজাহারে শিশু রুবেলের নামের সঙ্গে পিতার নাম আব্দুল কাশেম এবং বয়স ৩০ উল্লেখ আছে। তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মারুফুল ইসলাম তদন্ত শেষে চার্জশিটেও একই ক্রমিক নম্বরে তাদের আসামি হিসেবে রাখেন। এজাহারের জ্ঞাত ২৩ জনের বিরুদ্ধেই তিনি গত ২৭ ফেব্রুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। গত ২০ মার্চ আদালত ওই অভিযোগপত্র আমলে গ্রহণ করেন এবং অভিযোগপত্রে পলাতক দেখানো শিশু রুবেল এবং মৃত আরিফুর রহমানসহ তিনজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এরপর গত ৩০ এপ্রিল শিশুকে আদালতে হাজির করেন তার পিতা। বাদীর মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১৬ সালের ২৬ জুন ১৬৩, মধ্য পাইকপাড়ার বাদীর বাড়িতে আসামিরা অবৈধভাবে প্রবেশ করে বাড়ি দখলে নেওয়ার চেষ্টা করে। বাদীও তার পরিবারকে মারধর করে এবং মোবাইল ও স্বর্ণের চেইন চুরি করে নিয়ে যায়। রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৬ মে ২০১৭/মামুন খান/সাইফুল