আইন ও অপরাধ

তারেক রহমানের রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় সাক্ষ্য ২৭ ফেব্রুয়ারি

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ চারজনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের একটি মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ পিছিয়ে ২৭ ফেব্রুয়ারি ধার্য করেছেন আদালত। সোমবার এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু এদিন কোনো সাক্ষী আদালতে হাজির হননি। এজন্য ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. কামরুল হোসেন মোল্লা নতুন এ তারিখ ঠিক করেন। মামলার অপর আসামিরা হলেন- বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল একুশে টিভির প্রাক্তন চেয়ারম্যান আবদুস সালাম, ওই টেলিভিশনের প্রাক্তন দুই সাংবাদিক কনক সারোয়ার ও মাহথির ফারুকী খান। এর আগে গত ২০ নভেম্বর এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন একই আদালত। ২০১৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ইমদাদুল হক ঢাকা সিএমএম আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে মামলাটিতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১৫ সালের ৮ জানুয়ারি মামলাটি দায়ের করেন তেজগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক বোরহানউদ্দিন। মামলায় অভিযোগ করা হয়, ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত ১টা ২৮ মিনিটে (যুক্তরাজ্য সময় সন্ধ্যা ৭টা ২৮ মিনিট) যুক্তরাজ্য বিএনপি আয়োজিত ‘৫ জানুয়ারি গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ শীর্ষক প্রতিবাদ সভায় তারেক রহমান বক্তব্য দেন। তার এই বক্তব্য একুশে টেলিভিশন সরাসরি সম্প্রচার করে। উক্ত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি একজন রাজনৈতিক নেতার কবর জিয়ারত করে এবং রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়ে নিরপেক্ষ ও ন্যায়বিচার করতে পারবেন না।’ এ মন্তব্য স্বাধীন বিচার বিভাগের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শনের শামিল। সেই সাথে রাষ্ট্রের অন্যতম অঙ্গ বিচার বিভাগের প্রতি জনগণের ঘৃণা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি করার ইন্ধন যোগায়। পিলখানায় আওয়ামী লীগের মুখোশ পরা লোকেরা ৭৫ জন সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করে বলেও অভিযোগ করেন তারেক রহমান। উক্ত হত্যাকাণ্ডের তদন্ত দাবি করা সেনা কর্মকর্তাদের চাকরিচ্যুত করা হয় মর্মে বক্তব্য দেন তারেক রহমান। তার এ ধরনের উস্কানিমূলক বক্তব্যের মাধ্যমে সেনাবাহিনীর মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে সরকারের বিরুদ্ধে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে উস্কে দেওয়া তথা সেনাবাহিনীর মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়েছে। ‘একটি বিশেষ এলাকার পুলিশকে দিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন করা হচ্ছে’ বক্তব্যের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে অসন্তোষ ও বিভক্তি সৃষ্টি এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চেইন অব কমান্ড ভঙ্গ করতে প্ররোচিত করার মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রয়াস চালান। তারেক রহমান প্রশাসনের লোকদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করার লক্ষ্যে গণতান্ত্রিকভাবে প্রতিষ্ঠিত সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তুলতে বক্তব্য দেন। তিনি তার বক্তব্যে ঢাকা শহরকে অন্য জেলা শহর থেকে এবং ঢাকার এক এলাকাকে অন্য এলাকা থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার জন্য তার দলের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন, যার ফলে বিএনপি জামায়াতসহ ২০ দলীয় জোটের সমর্থকরা গত বছরের ৫ জানুয়ারি দেশের বিভিন্ন স্থানে ধ্বংসাত্মক কার্যক্রমের মাধ্যমে জানমালের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করার উস্কানি পায় এবং তিনি বাংলাদেশের অখণ্ডতা ও পরোক্ষভাবে সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি প্রদর্শন করেছেন। তার ওই সকল বক্তব্য আব্দুস সালাম এবং অন্যান্যদের সহযোগিতায় ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত, গনতান্ত্রিক ও আইনানুগ সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন, উস্কানিমূলক বিভ্রান্তিকর তথ্যাদি একুশে টেলিভিশনের মাধ্যমে প্রচার করে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধ করা হয়েছে বলেও মামলায় অভিযোগ করা হয়। রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৫ জানুয়ারি ২০১৮/মামুন খান/রফিক