আইন ও অপরাধ

খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের মানচিত্র এবং জাতীয় পতাকাকে অবমাননা করার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ‘শোন অ্যারেস্ট’ দেখানোর আবেদন করা হয়েছে। বুধবার ঢাকা মহানগর হাকিম মো. আহসান হাবীবের আদালতে মামলার বাদী জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এ বি সিদ্দিকী এই আবেদন করেন। শুনানি শেষ হওয়ার পর এ বি সিদ্দিকী জানান, আদালত বলেছেন এ বিষয়ে পরে আদেশ দেওয়া হবে। তিনি বলেন, ৫ মাস আগে এ মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। কিন্তু তিনি এখন পর্যন্ত আদালতে হাজির হননি। তিনি এখন অন্য মামলায় দ-প্রাপ্ত হয়ে কারাগারে আছেন। তাই তাকে এই মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানোর আবেদন করেছি। এর আগে গত বছরের ১২ অক্টোবর খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। তারও আগে খালেদা জিয়াকে  কয়েক দফায় আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেন আদালত। কিন্তু খালেদা জিয়া হাজির না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে এ পরোয়ানা জারি করা হয়। প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৩ নভেম্বর বাংলাদেশ জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এবি সিদ্দিকী ‘স্বীকৃত স্বাধীনতা বিরোধীদের গাড়িতে জাতীয় পতকা তুলে দিয়ে দেশের মানচিত্র এবং জাতীয় পতাকার মানহানি করার অভিযোগে আদালতে মামলা দায়ের করেন। ওইদিন ঢাকা মহানগর হাকিম রায়হানুল ইসলাম তেজগাঁও থানার ওসিকে মামলা তদন্তের নির্দেশ দেন। মামলায় খালেদা জিয়া ও তার প্রয়াত স্বামী জিয়াউর রহমানকে আসামি করা হয়। চলতি বছর ২৫ ফেব্রুয়ারি তেজগাঁও থানার ওসি (তদন্ত) এবিএম মশিউর রহমান মামলার প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর তা আমলে নিয়ে প্রাক্তন এ প্রধানমন্ত্রীকে আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেন আদালত। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০০১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি জয়লাভ করলে দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মন্ত্রিপরিষদ গঠন করেন। ওই মন্ত্রিপরিষদে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে যারা প্রকাশ্য এবং আত্মস্বীকৃতিরূপে পাকিস্তানের দোসর হিসেবে নিজেদের পরিচয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, সেই জামায়াতে ইসলামী, রাজাকার, আলবদর, আলসামস কমিটির সদস্যদের স্থান দেন তিনি।’  ‘পরে এসব ব্যক্তির মধ্যে অনেকেই আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুনালে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে মৃত্যুদণ্ডসহ বিভিন্ন দণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন। তার মধ্যে তৎকালীন খালেদা জিয়া সরকারের মন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। কিন্তু তারা ক্ষমতায় থাকাকালীন মন্ত্রীত্বের সুবিধা নিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের মানচিত্র এবং জাতীয় পতাকা তাদের বাড়ি এবং গাড়িতে ব্যবহার করেছেন।’  ‘বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া স্বাধীনতাবিরোধী ব্যক্তিদের তার মন্ত্রিসভায় মন্ত্রীত্ব প্রদান করে ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত পতাকাকে স্বাধীনতা বিরোধীদের গাড়িতে তুলে দিয়ে সত্যিকারের দেশপ্রেমিক জনগণের মর্যাদা ভূলুণ্ঠিত করেছেন। তাই তার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৫০০ ধারার মানহানির অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।’ অন্যদিকে, প্রচলিত আইনে মৃতব্যক্তির বিচারের সুযোগ না থাকায় প্রাক্তন প্রেসডেন্ট জিয়াউর রহমানকে অব্যাহতি প্রদানের সুপারিশ করা হয়। রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/মামুন খান/রাপা